টাইপিং স্পিড বাড়ানোর উপায় জানতে চান অনেকেই। আসলে টাইপিং স্পিড বাড়ানো কঠিন কোন কাজ নয়। নিয়মিত অনুশীলন করার মাধ্যমে টাইপিং স্পিড বাড়ানো সম্ভব। অনুশীলনের ক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করা জরুরি। সঠিক কৌশল অবলম্বন করে টাইপ করলে আপনি দ্রুত টাইপিং স্পিড বৃদ্ধি করতে পারবেন।
প্রযুক্তির দুনিয়ায় বাস করে টাইপিং ছাড়া এক মুহূর্ত থাকা সম্ভব নয়। ম্যাসেজিং, ইমেল, ডকুমেন্ট থেকে শুরু করে নানা কাজে টাইপ করার প্রয়োজন হয়। একজন স্বাভাবিক কম্পিউটার ব্যবহারকারীর টাইপিং স্পিড প্রতি মিনিটে ৪০ ওয়ার্ড হয়ে থাকে।
কিন্তু, আমি আজকে এমন কিছু কৌশল উপস্থাপন করবো, যার মাধ্যমে মিনিটে ১০০ ওয়ার্ড পর্যন্ত টাইপ করতে পারবেন। আবার, কম্পিউটারে হাতে টাইপ করলেও অ্যান্ড্রয়োডে মুখে বলে টাইপ করা যায়। কারণ, হাতে লেখার দিন শেষ! এবার অ্যান্ড্রয়েডে মুখে বলে বাংলা টাইপ করুন। অযথা ভূমিকা বড় না করে মূল আলোচনা, টাইপিং স্পিডে চলে যাওয়া যাক।
টাইপিং স্পিড বাড়ানোর উপায়
১. সঠিক পজিশনে বসা
অনেকে মনে করে কী-বোর্ড ব্যবহারে দক্ষ হলেই দ্রুত টাইপ করা সম্ভব। এ-রকম ধারণা যদি আপনার থাকে, তাহলে আজই তা পরিহার করুন। দ্রুত টাইপ করার জন্য সর্ব প্রথম সঠিক পজিশন ও পরিবেশের প্রয়োজন। সঠিক পজিশনে না বসলে হাতের কব্জি ব্যথা, কোমর ব্যথা হবে।
এছাড়া, সঠিক পজিশনে না বসলে কীবোর্ড আপনার আয়ত্তে আসবে না। অনেকে বিছানায় শুয়ে শুয়ে টাইপিং করে। এইভাবে টাইপিং করার দ্বারা টাইপিং স্পিড খুব একটা বৃদ্ধি পাবে না।
তবে, কীবোর্ড আপনার আয়ত্তে চলে আসলে করতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন এটা আপনার দেহের জন্য ক্ষতিকর। চেয়ার ও টেবিলে বসে টাইপিং করতে হবে। আপনার বসার পরিবেশ যেন শান্ত ও খোলামেলা থাকে। শান্ত পরিবেশে আপনার মস্তিষ্ক এবং হাত ঠিকভাবে কাজ করতে পারবে।
২. লে-আউট মুখস্থ করা
সাধারণত প্রায় সকল কী-বোর্ডই QWERTY লেআউটের। এখন এই লেআউটের A থেকে Z পর্যন্ত ওয়ার্ডের অবস্থানগুলো মুখস্থ করে ফেলুন। মুখস্থ করার সহজ উপায় হল, টাইপ করার সময় কীবোর্ডের দিকে না তাকিয়ে মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকুন।
বাংলা টাইপিংয়ের ক্ষেত্রে অভ্র বা বিজয় যেটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, সেটা ব্যবহার করতে পারেন। যদিও অভ্রতে টাইপ করার সময় আপনাকে আলাদা লে-আউট মুখস্থ করতে হবে না। কিন্তু বিজয়ে টাইপ করার সময় আপনাকে বিজয়ের লে-আউট মুখস্থ করে নিতে হবে।
৩. সঠিক জায়গায় আঙ্গুল রাখা
টাইপ করার সময় অবশ্যই কীবোর্ডে সঠিক জায়গায় আঙ্গুল রাখতে হবে। F এর জায়গায় আপনার বাম হাতের শাহাদাত আঙ্গুল এবং J এর জায়গায় ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল রাখুন।
বৃদ্ধ আঙ্গুল ২টি রাখুন স্পেস বারে। বাকী বাম হাতের ৩টি আঙ্গুল যথাক্রমে A S এবং D তে রাখুন। অপরদিকে ডান হাতের ৩টি আঙ্গুল যথাক্রমে K L এবং ; তে রাখুন।
এবার A quick brown fox jumps over the lazy dog বাক্যটি লেখার চেষ্টা করুন। এই বাক্যটির বিশেষত্ব হল, এই বাক্যে ইংরেজি ২৬টি অক্ষর বিদ্যমান। এই বাক্যটি টাইপ করার দ্বারা কী-বোর্ডে সবগুলো অক্ষর টাইপ করা হবে।
৪. টাইপিং সফটওয়্যার ব্যবহার করা
প্রথমদিকে টাইপিং স্পিড বাড়ানোর জন্য সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে ফ্রিতে টাইপিং করা যায়। ইংরেজিতে অনলাইন টাইপিং ওয়েবসাইটগুলো হল –
বাংলাতে অনলাইনে টাইপিং ওয়েবসাইটগুলো হল –
এসব সফটওয়্যার এবং ওয়েবসাইটে টাইপিং করার সময় অবশ্যই উপরে উল্লেখিত কৌশলগুলো অনুসরণ করতে হবে।
৫. অনুশীলন
অনুশীলন ব্যতীত কখনোই কোন কিছুতে সফল হওয়া যায় না। অনুশীলন ব্যতীত আপনি দুনিয়ার যত কৌশল অবলম্বন করেন না কেন, কোন লাভ নাই।
অনুশীলন করার জন্য আপনি প্রতিদিন নির্দিষ্ট কিছু সময় নির্ধারণ করে নিন। যেই সময় আপনি সম্পূর্ণ ফ্রি সেই সময়টি নির্ধারণ করার চেষ্টা করুন। প্রথম দিকে মাথায় চিন্তা আর কাজের প্রেশার নিয়ে টাইপিং করে খুব একটা লাভ নেই।
শেষ কথা
এই ছিল আজকে টাইপিং স্পিড বাড়ানোর উপায় নিয়ে সহজবোধ্য কিছু কথা। উপরে উল্লেখিত প্রত্যেকটি উপায় অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি সহজে টাইপিং স্পিড বাড়াতে পারবেন। মনে রাখবেন রাতারাতি কোন কিছু সফল হওয়া যায় না। সফল হওয়ার মূলমন্ত্র হল ধৈর্য আর অধ্যবসায়।
Leave a Reply