আমরা যারা লেখালেখি করতে পছন্দ করি, তারা সবাই মোটামোটি কোন না কোন ব্লগের সাথে জড়িত। অনেকের আবার পার্সোনাল ব্লগও আছে। তবে আপনার যে ধরণের ব্লগই থাকুক না কেন, ব্লগে আপনি যা নিয়েই লেখালেখি করেন না কেন, ব্লগিং-এ কমেন্ট করার অভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
একটা ব্লগের জন্য আর্টিকেল লেখা, পোস্ট শেয়ার ইত্যাদি যতটা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টগুলোতে কমেন্ট করাও কিন্তু ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। আর এটা যে শুধুমাত্র ব্লগটার টিকে থাকার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, তাই নয়। বরং, ব্লগারদের নিজেদের জন্যও এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পোস্টে আজকে মূলত এই ব্যাপারটা নিয়েই আলোচনা করব।
ব্লগিং-এ কমেন্ট করার অভ্যাস কেন গুরুত্বপূর্ণ
এখন অনেকের মনে হতেই পারে যে, ব্লগ কমেন্ট তো ব্লগের প্রচার প্রসারে সরাসরি তেমন একটা প্রভাব ফেলে না। তাহলে এটা কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ। সত্যি কথা হল, ব্লগের কমেন্টের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দুই ধরণের গুরুত্বই আছে। তো চলুন, কথা না বাড়িয়ে দেখে নেই, ব্লগিং-এ কমেন্ট করার অভ্যাস কেন গুরুত্বপূর্ণ।
১) সার্চ ইঞ্জিনের এসইও-তে প্রভাবঃ
হ্যাঁ, আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন, ব্লগের কমেন্ট সার্চ ইঞ্জিনগুলোর এসইও-তে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। এই আর্টিকেলটাকেই তার একটা প্রমাণ হিসেবে ধরতে পারেন। এই আর্টিকেলটার লেখক, দেখেছেন যে অনেক সময় ব্লগের কমেন্ট থেকে সার্চ কি-ওয়ার্ড খুঁজে নেয় সার্চ ইঞ্জিনগুলো।
তো, উনি এক্সপেরিমেন্টের জন্য ব্লগ থেকে সব কমেন্টগুলো রিমুভ করে দেন। আর এর প্রভাব বুঝতেও তার প্রয়োজন হয় মাত্র দুই দিন। কারণ, মাত্র দুই দিন পরেই তার ব্লগের ট্রাফিক ৪০% কমে যায়।
২) ব্লগারদের কমিউনিটিঃ
ব্লগের কমেন্টগুলো ব্লগারদের কমিউনিটিও শক্তিশালী করে থাকে। একজন ব্লগার অন্য জনের লেখায় কমেন্ট করার মাধ্যমে তাদের মধ্যে একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। যা একটা ব্লগকে টিকিয়ে রাখে। ব্লগের প্রচার আর প্রসারেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রত্যক্ষভাবে এর গুরুত্ব ততটা বেশি না হলেও, পরোক্ষভাবে ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই, একটা শক্তিশালী কমিউনিটির জন্যও শুধুমাত্র আর্টিকেল পাবলিশ করার পাশাপাশি, কমেন্টের অভ্যাসও থাকা উচিত।
৩) জ্ঞানের আদান – প্রদানঃ
ব্লগিং-এ কমেন্ট করার অভ্যাস জ্ঞানের আদান প্রদানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন একটা উদাহরণ দেই। এই আর্টিকেলটার কথাই ধরি। এখানে ওয়েব ডিজাইনের জন্য ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ইউ এক্স টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখন ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রে তো ইউ এক্স টিপস মাত্র ৫টিই নয়।
সেক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে কিন্তু আপনি আপনার জ্ঞান সহজেই শেয়ার করতে পারেন লেখকের সাথে। লেখকের দেয়া তথ্যেও কোন ভুল থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ভুল সংশোধনের সুযোগও সৃষ্টি হবে এর মাধ্যমে। একইভাবে, সেই লেখকও তখন আপনার সাথে ইন্টারেস্টিং তথ্য শেয়ার করবেন। তাই এই জ্ঞানের আদান প্রদানের জন্য কমেন্টের অভ্যাসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৪) ব্লগকে ইন্টার্যাক্টিভ করে তোলাঃ
কয়েকদিন আগেই টি আই অন্তরের লেখা কেন প্রথম ছয় মাসেই ৯৫% মানুষ ব্লগিং ছেড়ে দেন আর্টিকেলটা হয়তো এরই মধ্যে দেখেছেন অনেকেই। আসলে ব্লগিং-এ কমেন্টগুলোতে ইন্টারেস্টিং তথ্য দেয়ার পাশাপাশি একটা লেখকের ভাল লেখার প্রসংশাও করা যায়। এতে করে লেখকের মধ্যে পরবর্তীতে ভাল লেখার উৎসাহ বৃদ্ধি পায়। আর এটাই লেখককে ব্লগের সাথে যুক্ত রাখতে যথেষ্ট হতে পারে।
আর সত্যিকথা বলতে এই ব্যাপারগুলো মিউচ্যুয়ালি হয়। আপনি একজনের প্রশংসা করলে হয়তো সেও আপনার প্রশংসা করবে। সেই ব্যাপারটা আপনার ব্লগিং-এর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হবে। আর, ব্লগে ব্লগারদের মধ্যের এই কমেন্টের অভ্যাস এক্সটারনাল ভিজিটরদেরকেও কমেন্ট করতে উৎসাহী করবে। এতে করে ব্লগ অনেকটা ইন্টার্যাক্টিভ হয়ে উঠবে।
যাই হোক, এই ছিল আজকের মত ব্লগিং-এ কমেন্ট করার অভ্যাস কেন গুরুত্বপূর্ণ সেই বিষয়ে আজকের আলোচনা। ব্লগিং-এ কমেন্ট করার অভ্যাস আর কেন গুরুত্বপূর্ণ সেই ব্যাপারে আপনার কোন আইডিয়া থাকলে, কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন আমাদের সাথে। আর পোস্টটা শেয়ার করতেও ভুলবেন না।
মুনতাকিমুল আবেদীন says
কমেন্টের মাধ্যমে লেখক আরো বেশি উৎসাহিত হয়। পাঠকদের নেগেটিভ মতামতও একজন লেখকের জানা খুব প্রয়োজন। এতে করে লেখক ও পাঠকের মধ্যে দূরত্বও অনেক কমে আসে।
তাজওয়ার উচ্ছাস says
হ্যা, ঠিক। ভাল একটা পয়েন্ট বলেছেন। 🙂