যদি ভাবেন চাকরির ইন্টারভিউর প্রস্ততি নেয়ার কী আছে, তাহলে ভুল ভাবছেন। চাকরির ইন্টারভিউ দেয়ার জন্যে অনেক প্রস্তুতিই নিতে হয়। নৈলে চাকরির বাজারে নিজের যোগ্যতা প্রমান করা যায় না এবং সঠিক চাকরিটিও পাওয়া যায় না।
শিক্ষাজীবন শেষ করেই যে জিনিসটির জন্য আমরা সবাই মরিয়া হয়ে ওঠি, সেটি হচ্ছে একটি যুৎসই চাকরি। বর্তমান সময়ে স্নাতক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েও বিভিন্ন পদে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ থাকে। তাই কম বেশি সবাই শিক্ষাজীবনের মধ্য থেকেই চাকরির জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকে।
আমাদের দেশে চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া সাধারণত তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত থাকে। প্রথমে বহুনির্বাচনী পরীক্ষার মাধ্যমে কিছু প্রার্থীকে বেছে নেয়া হয়। তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয় লিখিত পরীক্ষা এবং সর্বশেষ একটি ইন্টারভিউ এর মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তাই বহুনির্বাচনী ও লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রস্ততি গ্রহণ করা খুবই জরুরী একটা ব্যাপার।
ইন্টারভিউ বিষয়টি শুনতে যতটা সহজ, সেটি বাস্তবে সফলভাবে সম্পন্ন করা ততটাই কঠিন। তবে যাই হোক না কেন, যে কোন চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রেই ইন্টারভিউর প্রস্ততি নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। তাই আমাদেরকে অবশ্যই এই সময়ের সঠিক ব্যবহার করে নিজেদেরকে উক্ত চাকরির ইন্টারভিউ এর জন্য শারিরীক ও মানসিকভাবে প্রস্তত করতে হবে।
চাকরির ইন্টারভিউর প্রস্ততি নিন
আপনি যদি আগে থেকেই ইন্টারভিউ এর জন্য নিজেকে তৈরী না করেন, তাহলে ইন্টারভিউ এর অভিজ্ঞতাটি আপনার জন্য মোটেও যে সুখকর হতে যাচ্ছে না তা সহজেই অনুমেয়। ইন্টারভিউতে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনি যে কোম্পানীতে ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, তার সম্পর্কে বিশদ গবেষণা করতে হবে। আপনাকে দেখা মাত্র যেন তাদের কাছে আকর্ষণীয় মনে হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ করতে হবে।
এছাড়াও আপনাকে ইন্টারভিউতে আর কি কি করতে হবে যার ফলে নিয়োগদাতাদের নিকট অন্যান্য প্রার্থীদের তুলনায় আপনাকে বেশি উপযুক্ত মনে হবে, আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো। তাই দেরি না চাকরির ইন্টারভিউর প্রস্তুতির বিষয়গুলো জেনে নেয়া যাক।
গবেষণা করুন
আমি আগেও বলেছি যে, যে কোম্পানীতে আপনি ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন আপনাকে অবশ্যই তার উপর একটি গবেষনা চালাতে হবে। আপনার যদি উক্ত কোম্পানী এবং তাদের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা থাকে, তাহলে ইন্টারভিউ এর সময় নিয়োগদাতাদের নিকট আপনি এমন একজন প্রার্থীতে পরিণত হবেন, যাকে ঐ কোম্পানীর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
কোম্পানীর ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি খুঁজে বের করুন এবং সেগুলি একটি খাতায় লিখে রাখুন। যে-সব বিষয়ের তথ্য আপনার প্রয়োজন হবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এমন একজন কর্মীর সন্ধান করে থাকে, যিনি ওই কোম্পানীতে কাজ করতে আগ্রহী। আপনার একটি চাকরির প্রয়োজন এটা বুঝানোর চাইতে আপনি ওই কোম্পানীতে কাজ করার জন্য কত বেশি পরিমাণ আগ্রহী, তা প্রকাশ করলে আপনাকে নির্বাচন করার সম্ভাবণা অনেকটাই বেড়ে যায়। বর্তমানে প্রতিটি কোম্পানীরই নিজস্ব অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে। উক্ত কোম্পানী কবে, কখন এবং কার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়, তাছাড়া কোম্পানীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলি কি কি এবং কোম্পানীর সাম্প্রতিক কর্মকান্ডের সব তথ্য জানার জন্য ওই কোম্পানীর ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি লিখে ফেলুন।
- কোম্পানীটি কি কি পণ্য বা কোন ধরনের সেবা প্রদান করে থাকে এবং তাদের সেবার মান কেমন। এছাড়াও কিভাবে তাদের পণ্য বা সেবার মানের আরও উন্নয়ন করা যায়, সে বিষয় কিছু পরিকল্পণা গ্রহণ করবেন এবং যদি সুযোগ হয় তাহলে তাদের সাথে সে বিষয়ে আলোচনা করবেন। এতে নিয়োগদাতা এটি বুঝবে যে আপনি কোম্পানী সম্পর্কে আন্তরিক এবং আগ্রহী। তবে কোম্পানী সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
- মার্কেটে ওই কোম্পানীর প্রতিদ্বন্ধী কোম্পানী সম্পর্কে কিছু ধারণা নিন। তারা কিভাবে ব্যবসা করছে এবং কিভাবে কাজ করলে তাদের চাইতেও ভালো ফলাফল অর্জণ করা সম্ভব, তা নিয়ে গবেষণা করুন। ইন্টারভিউ চলাকালীন সময়ে এসব নিয়ে আলোচনা করার মত অবস্থা ও সময় তৈরী করে নিন এবং বিষয়টি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন।
- কোম্পানীর গ্রাহক কারা এবং তারা কি পছন্দ করেন, সে বিষয়গুলি নিয়ে ভাবুন। আপনি ওই কোম্পানীর হয়ে কিভাবে তাদের গ্রাহকদের সেবা দান করতে চান এবং গ্রাহক কেন আপনার কাছ থেকে ওই কোম্পানীর সেবা গ্রহণ বা পণ্য ক্রয় করতে উৎসাহী হবেন, তা নিয়ে পরিকল্পণা করুন। উক্ত কোম্পানীর গ্রহকরা কোম্পানী সর্ম্পকে কিরুপ মনোভাব পোষণ করে এবং তারা কোম্পানী থেকে আরও কি কি সেবা পেতে আগ্রহী, সে-সব বিষয়গুলো তুলে ধরুন।
- বর্তমান বাজারে উক্ত কোম্পানীর সাফল্য কতটুকু তা নিয়ে আপনার মতামত ব্যক্ত করার মন মানসিকতা রাখুন। মতামত দেয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সৎ থাকতে হবে। মিথ্যা প্রসংশা করে চাকরি পাওয়ার আশা করবেন না। বরং এতে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবণাই বেশি। যদি কোম্পানী সর্ম্পকে মনে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে সেটি নির্দিধায় জিজ্ঞাসা করে ফেলুন। ভয় পাবেন না, এতে আপনার প্রতি সবার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই বাড়বে।
- কোম্পানীর সাম্প্রতিক কোন প্রেস রিলিজ থাকলে তা অবশ্যই পড়ে দেখুন এবং এই মুহুর্তে কোম্পানী কোন কাজে বা নতুন কি কি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে অবগত থাকুন।
নিজেকে পরখ করতে শিখুন
আমাদের দেশে প্রায় অনেকের মধ্যেই চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণ না পড়ে শুধুমাত্র কোন পদে কতজন নিয়োগ হবে এবং তার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কেমন প্রয়োজন তা দেখেই চাকরির জন্য আবেদন করে বসে। ফলে, দেখা যায় অধিকাংশ নিয়োগ পরীক্ষাতেই তারা ব্যর্থ হয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। আপনি যে কোম্পানীতে আবেদন করতে ইচ্ছুক, আপনি তাদের জন্য একজন যোগ্য প্রার্থী কিনা সেটি যাচাই না করে আবেদন করতে থাকলে আপনার সফল হবার সম্ভাবণা নেই বললেই চলে। কোন কোম্পানীতে নিয়োগ পাওয়া জন্য অবশ্যই নিচের বিষয়গুলি যাচাই করুন।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টি মাথায় রাখুন। ধরে নিন একটি পদে আবেদন করার জন্য নূন্যতম উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই চলবে। কিন্তু দেখা যায় যে, ওই পদে আবেদনকারীর একটি বড় অংশ স্নাতকোত্তর পাশ করে বসে আছেন। আপনাকে মনে রাখতে হবে, কোন কোম্পানী যদি একটি পদের জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তির সন্ধান করে থাকেন, তাহলে আপনি সেই পদে আবেদন করে আপনার সময় আর শ্রম নষ্ট করছেন। আপনার অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনার কোন উপকারে তো আসবেই না, বরং ইন্টারভিউতে আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তাধারা তৈরী হওয়ার সম্ভবণা তৈরি করে দেবে।
- নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুব ভালোভাবে পড়ুন। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার বাইরে তাদের আরও কি কি দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে, তা আগে বুঝুন। এছাড়া, আজকাল দেখা যায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর বা শুধুমাত্র কম্পিউটার অপারেটর পদে এমন প্রার্থীরা আবেদন করে থাকেন, যারা ঠিকমতো কম্পিউটার পরিচালনাও করতে পারেন না। অনেকে আবার ভাবেন, চাকরি পেলেই শিখে নেব। ফলে দেখা যায় লিখিত পরীক্ষায় কোনভাবে টিকে গেলেও ইন্টারভিউতে যেয়ে গন্ডগোল বাঁধে। তাই, এ ধরনের পদে আবেদন করার আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জণ করুন।
- প্রতিটি মানুষের মধ্যে কোন না কোন বিষয়ে দক্ষতা থাকেই। গতানুগতিকভাবে একটানা চাকরির পিছনে দৌড়াদৌড়ি না করে, আপনি যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি দক্ষ, সে বিষয় সম্পৃক্ত ইন্টারভিউগুলোকে তুলনামূলক অধিক গুরুত্ব দিন।
পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন
আমি সবাইকে বলবো না কিন্তু আমাদের দেশে অধিকাংশ চাকরির আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই দেখা যায় তারা আবেদনের জন্য ছবি করার সময় কোর্ট এবং টাই লাগানো ছবি ব্যবহার করে থাকেন। কখনই এমন ভুল কাজ করবেন না। যতটা সম্ভব নিজেকে সহজ এবং স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন। পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়গুলি হচ্ছে:
- খুব বেশি চকচকে এবং চোখে দেখতে বিরক্তিকর লাগে এমন পোশাক পরিধান না করা।
- পরিধানের পূর্বে অবশ্যই পোশাকগুলিকে আয়রন করে নেওয়া। কোথাও যেন ভাঁজ না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
- আপনি যেমন কাপড় পরিধান করবেন তার উপর ভিত্তি করেই ইন্টারভিউ গ্রহণকারীর আপনার সম্পর্কে প্রথম ধারণা তৈরী হবে সে বিষয়টি মাথায় রেখে কি পরিধান করবে তা নির্বাচন করুন।
যেগুলি অবশ্যই সাথে রাখবেন:
ইন্টারভিউ এর জন্য কখনোই খালি হাতে যাবেন না। প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রাদি নিজের সাথেই রাখুন এবং ইন্টারভিউ কক্ষে নিয়ে প্রবেশ করুন। ইন্টারভিউ গ্রহণকারী যদি চায় তাহলে সাথে সাথে তাকে কাগজপত্রগুলি দেখান, প্রয়োজনে কাগজপত্রটিগুলির কোনটির গুরুত্ব কি তা বুঝিয়ে বলুন। আপনি সাথে যেসব কাগজপত্র নিয়ে যাবেন তা হলো:
- উন্নতমানের কাগজে মুদ্রনকৃত অতিরিক্ত কয়েক কপি আপনার জীবন বৃত্তান্ত। মনে রাখবেন আপনার পোশাক পরিচ্ছদ পর্যবেক্ষণের পর পরই একজন নিয়োগদাতা আপনার জীবন বৃত্তান্ত পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করেন। আপনার জীবন বৃত্তান্ত যদি তার কাছে ভালো না লাগে তাহলে আপনার জন্য নির্বাচিত হওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। অনেকেই একটি জীবন বৃত্তান্ত তৈরী করে তারপর সেগুলিকে ফটোকপি করে নেন। ইন্টারভিউতে যাওয়ার ক্ষেত্রে যথাসম্ভব ফটোকপি ব্যবহার করার প্রবণতা বর্জন করে চলুন আর একান্তই যদি ব্যবহার করতেই চার তাহলে অবগত সেটির গুণগত মান নিশ্চিত করুন।
- একটি নোটবুক এবং কলম সাথে রাখুন। আপনাকে কোন প্রশ্ন করা হলে আপনি প্রয়োজন মনে হলে সেটি লিখে রাখতে পারেন। অথবা আপনার পূর্বে যারা ইন্টারভিউ দিয়ে বের হচ্ছে তাদের প্রতিক্রিয়া থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাগুলি লিখে ফেলুন এবং সেগুলি পড়ে আপনার কি করণীয় সেগুলি বিবেচনা করুন।
- আপনার পরিচয় প্রদানকারী ব্যক্তিদের তালিকা সাথে রাখুন। আপনার পদ সংক্রান্ত কোন ব্যক্তি যদি আপনার পরিচিত হয়ে থাকেন তাহলে তার পূর্ণ নাম, পদবী, কোম্পানীর নাম, কর্মস্থল এবং উক্ত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ সর্ম্পকিত যাবতীয় হালনাগাদ তথ্য সাথে রাখুন।
- আপনার পরিচয়ের প্রমাণ স্বরুপ ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, নাগরিক ও চারিত্রিক সনদপত্র এবং আপনি যে পড়ে ইন্টারভিউ দিতে উপস্থিত হয়েছেন উক্ত কাজে আপনার পূর্বে কোন অভিজ্ঞতা থাকলে তার নমুনা ও অভিজ্ঞতা সনদ সাথে নিয়ে আসুন।
প্রশ্ন এবং উত্তরের জন্য তৈরী থাকুন:
ইন্টারভিউ এর বড় অংশই জুড়ে থাকে প্রশ্ন-উত্তর। আপনাকে অবশ্যই তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। একাজের জন্য সবচেয়ে ভালো হলো আপনাকে কি কি প্রশ্ন করা হতে পারে তার একটা অনুমান করা এবং নিজে নিজে সেগুলোর উত্তর করার চেষ্টা করা।
আপনি সবচেয়ে উপযুক্ত প্রার্থী কিনা এটা যাচাই করার জন্য প্রত্যেকটি ইন্টারভিউতেই কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। এই প্রশ্নগুলির বেশিরভাগই হয়ে থাকে আপনার কর্মজীবনের লক্ষ্য, আপনি কি ধরনের কাজ করতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ বোধ করেন, আপনি কি কি বিষয়ে পারদর্শী এবং আপনি অন্যদের সাথে কিভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন সে সম্পর্কে।
অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন:
আপনি যে কোম্পানীতে ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, আপনার পরিচিত কোন ব্যক্তি যদি একই ধরনের কোন কোম্পানীতে চাকরি করে থাকেন তাহলে তার সাথে অবশ্যই তার ইন্টারভিউ এবং প্রশ্ন উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করুন। এ ধরনের কোম্পানীর ইন্টারভিউ গ্রহণকারীগণ সাধারণত কি ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন এবং সেই সকল প্রশ্নের কেমন উত্তরে তারা সন্তুষ্টি বোধ করেন তা জানতে চেষ্টা করুন।
আত্মবিশ্বাসকে একটি চাকরির ইন্টারভিউ এর ক্ষেত্রে মেরুদন্ডের সাথে তুলনা যেতে পারে। আপনার মধ্যে যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও আপনি যদি যথেষ্ট পরিমাণে আত্মবিশ্বাসী না হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সহজ থেকে সহজ পরিস্থিতিতেও তাল হারিয়ে ফেলবেন। তাছাড়া প্রতিটি কোম্পানী একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষকেই তাদের কর্মী হিসেবে দেখতে চায়।
তবে সতর্ক থাকবেন যে সেটি যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়ে যায়। আপনি যদি নিজের ব্যাপারে অতিরিক্ত পরিমাণে সবকিছু উপস্থাপন করেন তাহলে আপনার কথার সত্যাতা সম্পর্কে সন্দেহ জাগতেই পারে। এমন কিছু বলবেন না যা অন্য দশজনের পক্ষে করা অসম্ভব বরং এভাবে বলার চেষ্টা করুন যে তাদের চাইতে আপনি ভালো কিছু করতে পারবেন বলে আপনি বিশ্বাস করেন।
চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রস্ততি গ্রহণের জন্য যদি আপনি এখন পুরোপুরি তৈরী হয়ে থাকেন তাহলে এটিই উপযুক্ত সময় এটি লক্ষ্য করার জন্য যে আপনি কিছু ভুলে গেলেন কিনা। উপরে যতগুলি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে প্রতিটির সারমর্ম পয়েন্ট আকারে একটি খাতায় লিখে ফেলুন এবং ইন্টারভিউ এর পূর্বে আপনার একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরী করে ফেলুন। সবকিছু ঠিক থাকলে আত্মবিশ্বাসের সাথে অগ্রসর হোন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Leave a Reply