গ্রিটিং কার্ড কার না পছন্দ? যে-কোনো উৎসবে আমরা আমাদের প্রিয়জনকে গ্রিটিং কার্ড দিয়ে থাকি। তবে, অনেকেই জানেন না যে গ্রিটিং কার্ড লিখে আয় করা যায়। এমন কিছু কোম্পানী রয়েছে যেগুলোতে গ্রিটিং কার্ডের জন্যে সুন্দর সুন্দর কথা, কবিতা, শিল্প এবং ফটোগ্রাফি জমা দিয়ে অর্থ উপার্জন করা যায়।
এ-সব কোম্পানী প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ কপি গ্রীটিং কার্ড ছাপিয়ে থাকে। আর প্রতিটি কার্ডের ডিজাইন ও শেপ আলাদা আলাদা হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন ধরণের কার্ডেই থাকে ভিন্ন ভিন্ন কথা, ফটোগ্রাফি এবং শিল্প-কর্ম।
আপনি হয়তো জানেন গ্রীটিং কার্ড কি ও কত প্রকার। কিন্তু আপনি কি জানেন কি পরিমাণ কোম্পানী রয়েছে যারা গ্রীটিং কার্ড ছাপিয়ে থাকে? আর প্রতি বছর কি পরিমাণ গ্রীটিং কার্ড ছাপানো হয়?
উত্তর- শত শত কোম্পানী আর লক্ষ লক্ষ গ্রীটিং কার্ড।
একবার ভাবুন, এই লক্ষ লক্ষ গ্রীটিং কার্ডের জন্যে নতুন নতুন কথা লেখার লোক কি প্রতিটি কোম্পানীতে আছে? আসলে প্রতিটি কেন, কোনও কোম্পানীতেই এত লোক নেই। যারফলে, কোম্পানীগুলো গ্রীটিং কার্ডের কন্টেন্টের জন্যে আউটসোর্সিং করে থাকে অর্থাৎ বাহির থেকে ভার্সুয়ালী লোক নিয়োগ দিয়ে থাকে।
আপনিও হতে পারেন সেই সব লোকদের একজন যার জন্যে রয়েছে এই সব কোম্পানীতে কাজ করার সুযোগ। আসুন, সেইসব কোম্পানী সম্পর্কে জানা যাক যারা গ্রীটিং কার্ড লেখার জন্যে আপনাকে অর্থ প্রদান করবে।
গ্রিটিং কার্ড লিখে আয় করার কোম্পানী ও ওয়েবসাইট
গ্রীটিং কার্ড লেখা মানে হচ্ছে ঈদ কার্ড, ভ্যালেন্টাইন কার্ড, ম্যারেজ ডে কার্ড, ইত্যাদি। আপনি যদি ক্রিয়েটিভ হয়ে থাকেন, আপনার মধ্যে যদি এ-সব কার্ড লেখার যোগ্যতা থাকে আর যদি আপনি ঘরে বসে অনলাইনে আয় করতে চান, তবে নিম্নোক্ত কোম্পানীগুলো সম্পর্কে জানুন।
১. ব্লু মাউন্টেন আর্টস
কবি-শিল্পী যুগল সুজন পলিস শুটজ এবং স্টিফেন শুটজ প্রায় ৪০ বছর আগে ব্লু মাউন্টেন আর্টস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল মানুষের সুন্দর চিন্তাভাবনাগুলো গ্রিটিং কার্ডের মাধ্যমে প্রকাশ করা। বর্তমানে এই কোম্পানীটি প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ গ্রীটিং কার্ড ছাপিয়ে থাকে। আর তাদের এ-সব কার্ডের জন্যে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের সৃজনশীল মানুষেরা সুন্দর সুন্দর কথা লিখে আয় করতে পারে।
Blue Mountain Arts এর গ্রীটির কার্ডের জন্যে কবিতা লিখলে পাবেন ৩০০ ডলার, আর গদ্য অর্থাৎ সুন্দর কথা লিখলে পাবেন ৫০ ডলার। তবে, অবশ্যই আপনাকে তাদের নিয়ম মেনে লিখতে হবে এবং আপনার লেখা মনোনীত হতে হবে।
আপনি Blue Mountain Arts এর ফেইসবুক পেজ ঘেটে লেখার নমুনা দেখতে পারেন। তারপর তাদের সাইটে গিয়ে লেখা জমা দিন। প্রথমবারেই আপনার লেখা তারা গ্রহণ নাও করতে পারে। লেখা সাবমিট করার আগে তাদের গ্রীটিং কার্ড সাবমিশন গাইডলাইন পড়ে নিন আর চেষ্টা করে যান।
লেখা জমা দেয়ার ৮ সপ্তাহ পরে তাদের কোনো উত্তর না পেলে আপনি আপনার লেখা অন্য কোথাও জমা দিতে পারেন।
২. ক্যালিপসো কার্ড
Calypso Cards ক্রিয়েটিভদের কাছ থেকে গ্রীটিং কার্ডের জন্যে আইডিয়া ও আর্টওয়ার্ক কিনে থাকে। আপনি যদি সৃজণশীল ডিজাইনার কিংবা লেখক হয়ে থাকেন এবং আপনার কাছে যদি বিভিন্ন প্রকারের গ্রীটিং কার্ডের জন্যে সুন্দর সুন্দর আইডিয়া থেকে থাকে, তবে আপনি এই কোম্পানীর সঙ্গে কাজ করতে পারেন। উপরে দেয়া নামের উপর ক্লিক করে কাজ করার নিয়ম জেনে নিন।
৩. নোবেল ওয়ার্কস
নোবেল ওয়ার্কসের কার্ডগুলি মজার এবং অনন্য হয়ে থাকে। আপনি এখানে চিত্রকলা, কার্টুন বা লেখা জমা দিতে পারেন। আপনার আইটেম জমা দেয়ার জন্যে তাদের রেজিস্ট্রেশন পেজে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। পরে একটি ইমেইল পাওয়ার অপেক্ষা করুন| আরো বিস্তারিত জানতে উপরের লিংকে ক্লিক করে NobleWorks এর ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
৪. ওটমিল স্টুডিওস
আপনি সম্ভবত জনপ্রিয় দোকানগুলোয় ওটমিল স্টুডিওসের কার্ড দেখেছেন। তাদের গ্রীটিং কার্ডের ভাষা নিখুঁত ও সহজ, তবে খুব মজার।আপনার লেখার ধরণ যদি এমন হয়ে থাকে, অর্থাৎ আপনি যদি মজা করে লিখতে পারেন, তাহলে আপনি তাদের সাইটে গিয়ে লেখা জমা দিন।
Oatmeal Studios প্রতিটি গ্রীটিং কার্ডের মনোনীত লেখার জন্যে ৭৫ ডলার পে করে।
৫. আরএসভিপি
আরএসভিপিতে যে কোনও অনুষ্ঠানের জন্য কার্ড রয়েছে। মাদারস ডে, ফাদার্স ডে, ক্রিস্টমাস ডে ইত্যাদি সকল দিনের জন্য তারা কার্ড বিক্রি করে। আরএসভিপির কাছে তাদের গ্রীটিং কার্ড লেখকরা খুবই মূল্যবান। তাই, তাদের সাইটে বলা আছে: “আমরা বিশ্বজুড়ে শিল্পী এবং লেখকদের সাথে কাজ করি যা আমাদের বিষয়বস্তুকে তাজা, বৈচিত্র্যময় এবং প্রাসঙ্গিক রাখে। তারা আমাদের কার্ড লাইনের সাফল্যের মূল বিষয়।” আপনি যদি শিল্পী বা লেখক হয়ে থাকেন, তবে তাদের পেজে আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য প্রদান করুন।
৬. শেড ট্রি গ্রিটিংস
এই গ্রিটিং কার্ড কোম্পানির কাছে আপনার পুরোনো দিনের ফটোগুলো খুবই মূল্যবান। আর আপনাকে তার জন্য ফটোগ্রাফিতেও ভাল হতে হবে না। এটি আপনার পুরানো ফটোগুলি চায় যেগুলি ৪০ থেকে ৮০’র দশকের। ফটো সাদা-কালো বা রঙিনও হতে পারে এবং সেগুলি সম্ভবত মজার কিছুতে রূপান্তরিত হবে। তাই, এমন কিছু জমা দিবেন না যা আপনার মনের খুব কাছের। যদি আপনার ছবিটি গৃহীত হয়, আপনি ১০০ ডলার গিফট কার্ড পাবেন। অনলাইনে জমা দেওয়ার জন্য সমস্ত বিবরণ তাদের সাইটে দেয়া আছে।
গ্রিটিং কার্ড লিখে আয় করার উপরোক্ত ওয়েবসাইটগুলো সম্পর্কে জেনে নিশ্চয়ই আপনার ভাল লেগেছে। আর আপনি সেগুলোতে লেখা জমা দেয়ার পরিকল্পণা করছেন। আপনার জন্যে অনলাইন আয়ের জগতে অগ্রিম শুভেচ্ছা।
Arman says
আমাদের দেশে গ্রীটিং কার্ডের খুব বেশি প্রচলণ নেই। তাই, এ সম্পর্কে মানুষ কম জানে। তবে, এখানে যেসব কোম্পানী সম্পর্কে জানানো হয়েছে তাদের সঙ্গে কাজ করা যেতে পারে।