গ্রামীণফোনে চাকরির লাভ নিয়ে লম্বা একটা লিস্ট তৈরি করা যাবে অনায়াসে। কিন্তু, সেটাতে না গিয়ে আমি বিশেষ বিশেষ লাভ বা সুবিধাগুলো তুলে ধরতে যাচ্ছি আপনাদের সামনে।
ট্রেডিশনাল চাকরিতে যে-সব সুবিধা রয়েছে তার থেকে বহুগুণে বেশি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে গ্রামীণফোনের মতো পাওয়ারফুল মোবাইল অপারেটর কোম্পানীতে।
যদিও মানুষ মারাত্মভাবে দূর্বল সরকারি চাকরির প্রতি, বিশেষ করে গার্ডিয়ান বা বাবা-মারা; কিন্তু এখনকার তরুণ-তরুণীরা ভাল করেই জানে গভর্নমেন্ট জব থেকে প্রাইভেট বা কর্পোরেট জব বহুগুণে ভাল। আর, সেটা যদি হয় গ্রামীণফোনে, তাহলে তো তুষ্টি বা সন্তুষ্টির শেষ নেই।
কারণ কি?
সেটাই জানাবো আজ, ইনশাল্লাহ্। এর আগে চাইলে আপনি গ্রামীণফোনে চাকরি পাওয়ার ৪টি সহজ উপায় জেনে আসতে পারেন। আর যদি পরে জানবেন বলে ঠিক করে থাকেন, তবে পড়তে থাকুন।
গ্রামীণফোনে চাকরির লাভ
বেস্ট ক্যারিয়ার
ক্যারিয়ার হিসেবে অন্য যে কোনও সেক্টরের চেয়ে সুইটেবল হচ্ছে টেলিকমিনিকেশন। আর, এটা নিশ্চয়ই আপনি স্বীকার করবেন যে টেলিকম সেক্টরে সবচেয়ে প্রভাবশালী হচ্ছে গ্রামীণফোন। এটি এমন একটি কোম্পানী যেখানকার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীই তাদের অবস্থান নিয়ে খুশি ও হাস্যোজ্জ্বল থাকেন।
একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তি এই কোম্পানীতে আসার পর দক্ষতাকে যেমন আরো বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ পান, তেমনি একজন ফ্রেশ হ্যান্ড এখানে এসে নিজেকে তৈরি করার সুযোগ পেয়ে যান। কারণ, গ্রামীণফোনের কাজের ক্ষেত্রটাই এমন যে আনাড়িকে সুযোগ্য করে তোলে এবং দক্ষকে সুদক্ষ বানিয়ে তোলে।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে গ্রামীণফোনে ক্যারিয়ার শুরু করে কেউ কোনদিন নিজেকে নিয়ে, নিজের অবস্থান নিয়ে হতাশায় পড়েন না। এখানে একদিকে যেমন একজন ব্যক্তির টেকনোলোজির সাথে সখ্য গড়ে ওঠে, তেমনি মার্কেটিং, এইচ আর ও ফিন্যান্সসহ আরো বিভিন্ন সেকশনগুলোতে প্রতিনিয়তই নিজেকে মেলে ধরার মতো বহু সুবিধা হাতের মুঠোয় এসে পড়ে।
কেয়ারিং ওয়ার্ক এনভায়রনমেন্ট
গ্রামীণফোনের ওয়ার্কপ্লেসটা ওপেন থাকায় এখানকার এনভায়রনমেন্ট অত্যন্ত আরামদায়ক ও উপভোগ্য। গ্রামীণফোনে চাকরির লাভ হিসেবে অনেক কিছুই পাবেন। আর গ্রামীণফোনের এনভায়রনমেন্টে আপনার জন্যে যা যা রয়েছে সেগুলো হলো-
ক্যাজুয়াল ক্লথ: নিজস্ব পছন্দ, সর্বদা স্বাচ্ছন্দ্যময় পোষাকের নাম ক্যাজুয়াল ক্লথ যাকে আপনি ন্যাচারাল ড্রেস-আপও বলতে পারেন। যে ধরণের ড্রেস-আপে আপনি সব জায়গায় চলা-ফেরা করতে পারেন, ঘরে কিংবা বাইরে, অফিসে কিংবা উৎসবে, সে জাতীয় পোষাক পরতে কার না ভাল লাগে বলুন? কিন্তু আমাদের দেশে এমন অনেক কর্পোরেট কোম্পানী রয়েছে যেখানে আপনি নিজের পছন্দ মতো পোষাকে উপস্থিত হতে পারবেন না। গ্রামীণফোন আপনাকে এই সুবিধা দিচ্ছে, অর্থাৎ আপনি আপনার নিজস্ব স্টাইল, আরামদায়ক পোষাকে অফিস করতে পারবেন যা আপনাকে ফ্রি ফিল করতে সাহায্য করবে।
মিউজিক জোন: গান শোনা ছাড়া যদি আপনার মুহূর্তগুলো মলিন হয়ে যায় বলে মনে করেন, তবে গ্রামীণফোনের মিউজিক জোন আপনাকে যারপরনাই আনন্দিত করে তুলবে। এখানে আপনি ইচ্ছে মতো যেমন গান শুনতে পারবেন, তেমনই প্রায়ই গ্রামীণফোনে ইন-হাউজ কনসার্টের ব্যবস্থা করা হয় যা আপনার কাজের ক্নান্তি দূর করে দেবে। আপনি নিজেও যদি মিউজিশিয়ান কিংবা সিঙ্গার হয়ে থাকেন, তবে আপনি অবশ্যই ইন-হাউজ মিউজক শোতে বাজানো বা গলা ছাড়ার সুযোগ পাবেন। এটা একদিকে যেমন আপনার প্রতিভাকে লালন করতে সাহায্য করবে, অন্যদিকে কলিকদের কাছে নিজেকে আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলবে।
রিক্রিয়েশন সেন্টার: গ্রামীণফোনের রয়েছে নিজস্ব রিক্রিয়েশন সেন্টার যেখানে আপনি কাজের ক্লান্তি দূর করা কিংবা মন খারাপ সময়টাকে বদলে দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
জগিং ট্র্যাক: চাকরির আগে আপনি নিয়মিত জগিং করতেন। হয়তো এই ভেবে ভয় পাচ্ছেন যে চাকরিতে ঢুকলে আপনার জগিং এর কী হবে। কিন্তু, জেনে আনন্দিত হবেন যে, গ্রামীণফোনের নিজস্ব জগিং জোন আপনাকে সে সুযোগ দিচ্ছে। অফিসের অবসর সময়টায় আপনি নিজেকে নিয়োগ করতে পারেন নিয়মিত জগিং করায়।
ইন-হাউজ ক্যাফে: কফি খাওয়ার দারুণ নেশা আপনার। কিছুক্ষণ কাজ করার এক কাপ কফির প্রয়োজন হয় নিজেকে চাঙ্গা করে তুলবার জন্যে। সাথে হালকা স্ন্যাকস্ হলে আরো ভাল। কিন্তু, কোনও অফিস আপনাকে এই সুবিধা দিক আর না দিক, গ্রামীণফোন দিচ্ছে। কারণ, গ্রামীণফোনের রয়েছে ইন-হাউজ ক্যাফে।
ফ্লেক্সিবল ওয়ার্ক আওয়ার: যারা সাধারণ চাকরি কিংবা কর্পোরেট চাকরি করেন, কিংবা রয়েছেন সরকারি চাকরিতে, প্রত্যেকেরই পছন্দ হচ্ছে নিজের পছন্দ মতো সময়ে কাজ করার সুবিধা। গ্রামীণফোন আপনাকে এই ফ্লেক্সিবল ওয়ার্ক আওয়ার অফার করছে যেখানে আপনাকে কাজ শেষ না হলেও সন্ধ্যার পর কিংবা অনেক রাত পর্যন্ত অফিসে থাকতে হবে না। কিংবা, কাজের চাপ থাকায় ভোরে ওঠে ভরা কিংবা খালি পেটে অফিসে দৌড়াতে হবে না।
কেয়ারিং ওয়ার্ক এনভায়রনমেন্টের ভেতর আরো আছে-
- লার্নিং উইকস্
- অফিস সেলিব্রেশন
- ইনোভেশন ল্যাব
- অফিস ফেয়ারস্
- ওয়ার্কপ্লেস কমিউনিটি
- ইন্ট্রাপ্রিনিউরশিপ কম্পিটিশন
- আউট সাইন ইন সেশন এবং
- পারফর্মেন্স অ্যাওয়ার্ড ইভেন্টস্
লাক্সারিয়াস লাইফস্টাইল
মানুষের কাছে মনোমুগ্ধকর বিষয় হচ্ছে তার লাইফস্টাইল। সাধারণ লাইফস্টাইল কারোই কাম্য নয় যেখানে একজন মানুষকে পোষাক থেকে শুরু করে ব্যবহায্য সকল বিষয়ে নিম্নগামী হতে হয়। সব মানুষ মাত্রই চায় তার লাইফস্টাইলটা একটু ভিন্ন হোক, সাধারণের চেয়ে একটু উন্নত হোক। আর, গ্রামীণফোন নিজেও চায় তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাইফস্টাইল হোক লাক্সারিয়াস। তাই, অ্যামপ্লোয়ীদের জন্যে গ্রামীণফোন নিম্ন বর্ণিত ব্যবস্থাগুলো রেখেছে-
হ্যান্ড সেট অ্যালোয়ান্স এন্ড অফারস: গ্রামীণফোনের প্রায় প্রতিটি কর্মচারী-কর্মকর্তাই অফিসের পক্ষ থেকে হ্যান্ডসেট পেয়ে থাকেন। আর, এখনকার হ্যান্ডসেট মানেই যে ভাল মানের স্মার্টফোন তা তো কারো বুঝতে বাকি থাকে না।
ভয়েস অ্যালোয়ান্স: বুঝতেই পারছেন আপনার ভয়েস অন্যদেরকে শোনানো মানে মানুষের সাথে কথা বলার জন্যে আপনাকে যে মোবাইল রিচার্জ করতে হয়, সেটা আর করতে হবে না। কারণ, প্রতি মাসেই গ্রামীণফোন তার কর্মচারীদের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মোবাইল রিচার্জ দিয়ে থাকে।
ডাটা অ্যালোয়ান্স: নেটের জন্যে ডাটা কেনার ডাকাতির স্বীকার আমরা প্রত্যেকেই। অর্থাৎ, ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্যে যে ডাটার প্রয়োজন হয়, তা কিনতে কিনতে আমাদের জীবন ধপা-রফা। কিন্তু, যারা গ্রামীণফোনে জব করেন, তাদের এই চিন্তা করতেই হয় না।
এডুকেশন অ্যালোয়ান্স ফর চিলড্রেন: একটা সাধারণ চাকরি করে পড়াশুনার খরচ বহন করা ব্যাপক চিন্তার বিষয় অনেক বাবা মা’র জন্যেই। কিন্তু, চাকরিটি যদি হয় গ্রামীণফোনে, তবে চিন্তার চিহ্ন থাকবে না আপনার চোখে-মুখে, কোথাও। কারণ, গ্রামীণফোন আপনার সন্তানের জন্যে দিচ্ছে এডুকেশন অ্যালোয়ান্স।
লাইফ ইন্সুরেন্স: আপনার অন্তত ১০টি দরকারি সুবিধা পেতে লাইফ ইন্সুরেন্স থাকা চাই। কিন্তু, এর জন্যে আপনাকে মাসে মাসে যে পরিমাণ টাকা গুণতে হবে মানে কোম্পানীকে পে করতে হবে, তা জেনে আপনি নিশ্চয়ই বলবেন থাক বাবা, আমার লাইফ ইন্সুরেন্স দরকার নেই! কিন্তু, যখন জানবেন যে গ্রামীণফোন আপনাকে ফ্রিতেই লাইফ ইন্সুরেন্স সুবিধা দিচ্ছে, তখন তো তড়িৎ গতিতেই করে নিতে চাইবেন, তাই না?
এছাড়াও, আপনার লাইফস্টাইলকে আরো লাক্সারিয়াস করার জন্যে গ্রামীণফোন যেসকল সুবিধা দিচ্ছে-
- হেলথ্ ইন্সুরেন্স ফর সেলফ্ এন্ড ডিপেন্ডেটন্টস্
- সাবসিডাইজড্ মিলস্
- স্টক অপশন্স
- পেইড ম্যাটারনিটি এন্ড প্যাটারনিটি লিভ
- ডে-কেয়ার
- প্রপিট শেয়ারিং
- প্রভিডেন্ট ফান্ডস্
- সাবসিডাইজড্ ট্রান্সপোর্টস্
- ইন-হাউজ মেডিকেল সেন্টার
- প্রসস্ত প্রেপার হল
- ইন-হাউজ ট্রাভেল বুকিং
- ইন-হাউজ ব্যাংকিং কিওস্ক ফ্যাসিলিটি
- স্পেশাল ডিসকাউন্ট উইথ পার্টনার্স
- ২৪/৭ অ্যামপ্লোয়ী সাপোর্ট হট লাইন সুবিধা, ইত্যাদি।
গ্রামীণফোনে চাকরির লাভ জেনেছেন। এখন আর আপনার নিশ্চয়ই বুঝতে অসুবিধা নেই যে টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরের এই জায়ান্ট কোম্পানীতে জয়েন করার বহুবিধ সুবিধা রয়েছে যা অন্যান্য সাধারণ কোম্পানীতে নেই। সুতরাং, এই লেখাটির ইন্ট্রো সেকশনে দেয়া লিংকে গিয়ে জেনে গ্রামীণফোনে চাকরি পাবেন কিভাবে বা চাকরি পাবার সহজ উপায়। আশা করি, ওই লেখাটি এবং এই লেখাটি দু’টোই আপনার কাজে লাগবে।
Md SabbirAhmed says
আমি পিরোজপুরে থাকি, আমি কিভাবে গ্রামীণফোনে চাকরি পাবো?