আপনি কি গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করতে চান? তাহলে বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে আয় করার এই গাইড পোস্টটি আপনার জন্যই। নিশ্চিত থাকুন, আপনার যদি ছবি আঁকার প্যাশন থাকে, কিংবা আপনি ভাল ছবি আঁকতে পারেন, তাহলে অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে আপনার জন্য অনেক সুযোগ অপেক্ষা করছে।
অনেকে বলবে ছবি এঁকে কি হবে! কিন্তু আপনি যদি এই হাতের ছবি আঁকাকে কম্পিউটার গ্রাফিক্সে রুপ দিতে পারেন, তাহলে আপনাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। ঘরে বসেই ডিজাইন করে আয় করতে পারবেন। কারণ, গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য ঘরে বসে আয় করার অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে।
বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর প্রয়োজন। আর তার জন্য লাগবে প্রচুর গ্রাফিক্স ডিজাইনার। তবে, এর জন্য আপনাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেয়ে কাজের জন্য অ্যাপ্লাই করতে হবে না। আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে কাজ করতে পারবেন। আজ আপনাদের সাথে গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করার ১০টি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করার উপায়
অনলাইনে যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার সেরা মানের ওয়েবসাইট আছে, তেমনই গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনলাইনে আয় করারও অনেক উপায় রয়েছে। এর মাঝে সবচেয়ে ইফেক্টিভ এবং সহজ উপায়গুলো থেকে ১০টি নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। আপনি এখানকার এক বা একাধিক কিংবা সবগুলো উপায়ই ব্যবহার করতে পারেন এবং বেশি থেকে বেশি পরিমাণে অনলাইনে আয় করতে পারেন। তাহলে চলুন উপায়গুলো জেনে নেয়া যাক।
১. ফন্ট ডিজাইন করে আয়
ফন্ট ডিজাইন বর্তমান বিশ্বে একটি অনেক বড় বিজনেস। আপনি যদি ক্রিয়েটিভ হন বা নতুনভাবে কোন শব্দ বা অক্ষর লিখতে পারেন, তাহলে আপনি ফন্ট ডিজাইন করে অনেক আয় করতে পারবেন।
ETSY একটি বিশ্বস্ত ফন্ট বিক্রির ওয়েবসাইট। আপনি চাইলে নতুন ফন্ট তৈরি করে এই ওয়েবসাইটে বিক্রি করতে পারেন। এটি একটি প্যাসিভ আয়; আপনার ফন্ট যত বার বিক্রি হবে, তত বার আপনি টাকা পাবেন।
২. টি-শার্টি ডিজাইন করে আয়
প্রতিদিন প্রচুর টি-শার্ট বিক্রি হচ্ছে। আর টি-শার্ট এ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন। আর এই ডিজাইন করার জন্য প্রয়োজন অনেক টি-শার্ট ডিজাইনার। Redbubble , Threadless , Teespring হল টি-শার্ট ডিজাইন বিক্রি করার ওয়েবসাইট।
এসব ওয়েবসাইটে আপনি নিজের মত করে টি-শার্ট ডিজাইন করে বিক্রি করতে পারবেন। এছাড়া আপনি নিজে ডিজাইন করে টি-শার্ট বানিয়ে বাংলাদেশী বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইটে বিক্রি করতে পারেন।
৩.স্টক গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয়
বর্তমানে স্টক গ্রাফিক্সের প্রচুর চাহিদা। বিভিন্ন কোম্পানি স্টক গ্রাফিক্স থেকে তাদের প্রয়োজনীয় ছবি, ক্লিপ আর্ট, ইত্যাদি নিয়ে থাকে। কারণ স্টক গ্রাফিক্স সবাই ব্যবহার করতে পারে না, এগুলো স্টক মার্কেটপ্লেস থেকে কিনে ব্যবহার করতে হয়। আপনি চাইলে বিভিন্ন লোগো, ক্লিপ আর্ট, ভেক্টর ডিজাইনসহ আরও অনেক ধরণের ডিজাইন স্টক মার্কেট এ বিক্রি করতে পারেন। মনে রাখবেন, এটি একটি প্যাসিভ আয়, তাই আপনি একটি ভাল ডিজাইন আপলোড দিয়ে অনেক দিন সেই ডিজাইন থেকে আয় করতে পারেন।
সবথেকে জনপ্রিয় স্টক মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে রয়েছে, iStock , Shutterstock , Snapwire , 123rf , Alamy ইত্যাদি। আপনি চাইলে আজ থেকেই স্টক ডিজাইন করা শুরু করতে পারেন। যদি ভাল ডিজাইন করতে পারেন, তাহলে অন্য ডিজাইন থেকে স্টক ডিজাইন এ আয় করতে পারবেন তুলনামূলক বেশি।
৪. লোগো ডিজাইন
লোগো ডিজাইন বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় কাজ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের পরিচয় হল লোগো। তাই ভাল সুন্দর আর ইউনিক লোগোর অনেক চাহিদা। আপনি চাইলে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে লোগো ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে পারেন।
প্রতিদিন অনলাইনে প্রচুর প্রতিযোগিতা হয় লোগো ডিজাইনের। সেগুলোতে অংশ নিয়ে ভাল পজিশন করতে পারলে ভাল অংকের একটি পুরষ্কার পাবেন। তবে লোগো ডিজাইন করার আগে আপনাকে এই ৫টি বিষয় জেনে রাখতে হবে। যাইহোক, নিয়মিত লোগো ডিজাইন প্রতিযোগীতার আয়োজন করে এরকম কয়েকটি অনলাইন ওয়েবসাইট হল-
৫. ভিডিও টিউটোরিয়াল বিক্রি
গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর ভিডিও টিউটোরিয়াল বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। বর্তমানে মানুষ সরাসরি ক্লাসে যেয়ে শেখার থেকে অনলাইনে ভিডিও দেখে শিখতে বেশি পছন্দ করে। SkillShare এর মত ওয়েবসাইটে ভিডিও বিক্রি করে বা অনলাইনে ক্লাস নিয়ে ভাল একটি অর্থ পেতে পারেন।
৬. ইউটিউবিং
আপনি যদি দেখেন আপনার বানানো ভিডিও তেমন বিক্রি হচ্ছে না, তাহলে আপনি ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে পারেন। আপনার ভিডিও টিউটোরিয়াল যদি ভাল হয়, তাহলে আপনি এমনিতেই জনপ্রিয়তা পাবেন। আর জনপ্রিয়তা পেলে ইউটিউবে সব শর্ত পূরন হয়ে যাবে, আপনার গুগল এডসেন্স চালু হয়ে যাবে। তখন আপনাকে আর আয় নিয়ে ভাবতে হবে না। আপনি ভিডিও আপ্লোড দিবেন আর গুগল এডসেন্স থেকে আয় করতে পারবেন।
৭. ডিজাইন টেমপ্লেট বিক্রি
বর্তমানে টেমপ্লেটের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কোম্পানিগুলো সহজে তাদের কোম্পানির বিভিন্ন ব্যানার, ছবি ডিজাইন করার জন্যে অনলাইন থেকে বিভিন্ন টেমপ্লেট কিনে থাকে। টেমপ্লেটগুলোতে আগে থেকে বিভিন্ন আকর্ষনীয় ডিজাইন করা থাকে। ফলে অন্যদের জন্য সেগুলো এডিট করা সহজ হয়। আপনিও নতুন নতুন টেমপ্লেট ডিজাইন করে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।
৮. ওয়ার্ডপ্রেস টেমপ্লেট বিক্রি
ওয়ার্ডপ্রেস হল বর্তমানে ওয়েব ডেভেলপিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় টুলস। সে কারণে ওয়ার্ডপ্রেস টেমপ্লেটের প্রচুর চাহিদা। আর ভাল টেমপ্লেট ১০০০ ডলারেরও বেশি পর্যন্ত বিক্রি হয়। আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস টেমপ্লেট ডিজাইন করতে পারেন, তাহলে আপনার আয়ের বিস্তর সুযোগ রয়েছে।
৯. ফ্রিল্যান্সিং
আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন এর যে কোন কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। এক্ষেত্রে বায়ার আপনাকে যে ডিজাইন করতে বলে, আপনাকে সে রকম ডিজাইন করতে হবে। অথবা গিগ তৈরি করে সেল করতে হবে। সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলা হল-
১০. এফিলিয়েট মার্কেটিং
আপনার যদি ইতিমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠিত গ্রাফিক্স ডিজাইনের ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে, তাহলে আপনি সেখানে বিভিন্ন এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ব্লগ বা ইউটিউবে বিভিন্ন পণ্যে এফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করতে হবে। কেউ আপনার শেয়ার করা লিঙ্ক থেকে পণ্য কিনলে আপনি কিছু কমিশন পাবেন। টপ এফিলিয়েট মার্কেটপ্লেসগুলো হলো-
সর্বশেষে বলা যায়, আপনি যদি একজন ভাল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হন, তাহলে আপনি যে কোন জায়গায় ভাল দাম পাবেন। আর আপনার অর্থ উপার্জনের জায়গার অভাব হবে না। শুধু আপনাকে আপনার কাজে মনোনিবেশ করতে হবে আর নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই আপনি হবেন একজন সফল গ্রাফিক্স ডিজাইনার।
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আমি Teesport এ ডিজাইন পাঠাইতে চাই, কিভাবে পাঠাব? অনুগ্রহপূর্বক জানালে উপকৃত হব।
ধন্যবাদ, গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে ইনকাম করার দারুণ উপায়গুলো শেয়ার করার জন্যে.
গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্যে দারুণ একটি পোস্ট যা তাদেরকে আয় করার নানা উপায় সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেবে। এ-রকম উপকারি পোস্ট, বিশেষত আয় সংক্রান্ত আর্টিকেল পোস্ট করার জন্যে হৈচৈ বাংলাকে অনেক ধন্যবাদ।