গেমিং ফোন মানেই হচ্ছে হাই পারফরমেন্সের দামি একটি ফোন। যেটাতে আপনারা যে-কোনো গেমই হাই গ্রাফিক্সে কোনও ল্যাগ ছাড়া খেলতে পারবেন। অনেকেই হয়তো ভাবছেন গেমিং ফোন কেনার আগে এতো ভাবার কি আছে?
আপনি ভাবতেই পারেন যে গেমিং ফোনগুলোতে প্রায় সব কিছুই ভালো দেওয়া থাকে। তাই, এটা নিয়ে এতো ভেবে কোন লাভ নেই। আসলে এমনটা না, গেমিং ফোনে যে সব সময় সব কিছু ভালো হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
যেহেতু, গেমিং ফোনগুলো অনেক দামি হয়, তাই চিন্তা ভাবনা না করে এত অর্থ ব্যয় করার কোন মানে হয় না। তাছাড়া, অর্থ ব্যয় করার পরেও যদি ফোনে কোন কিছুর কমতি থাকে, তাহলে মাথা নষ্ট হবার উপক্রম হয়। তাই, গেমিং ফোন কিনতে যাওয়ার আগে অবশ্যই নিম্নের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখবেন।
গেমিং ফোন কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়
গেম খেলার জন্যে ভাল মানের স্মার্টফোন কেনার আগে অনেক বিষয় বিবেচনায় রাখতে হয়। তবে, আজকে আমারা শুধু গেমিং করার জন্য যে-সব বিষয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
১। পারফর্মেন্স
গেমিং ফোনের ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর পারফরমেন্স। পারফরমেন্স ভালো না হলে গেমিং ফোনের কোনও মূল্য নেই। তবে, ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে আপনাকে ৩টি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
- প্রসেসরঃ বাজেট বেশি হলে অবশ্যই High End প্রসেসর নেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রসেসরের ক্ষেত্রে Snapdragon কে বেশি প্রাধন্য দিবেন। কেননা, Mediatek হেভি গেমিং এ হালকা হলেও হিটিং হয়, যার ফলে গেমিং এক্সপেরিয়েন্স তেমন ভালো হবে না।
- স্টোরেজ টাইপঃ গেমিং ফোনে ভালো স্পীড পেতে স্টোরেজ টাইপ অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। তাই, ফোন নেওয়ার সময় UFS 2.1 বা UFS 3.1 স্টোরেজ নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
- র্যাম টাইপঃ অনেকে র্যাম টাইপ সম্পর্কে জানেনই না। র্যাম টাইপ আপনার ফোনের স্পীডে ভালো প্রভাব ফেলে। তাই, সব সময় লেটেস্ট র্যাম টাইপে বেশি প্রাধান্য দিবেন।
২। ব্যাটারি
পাওয়ারফুল ব্যাটারি ছাড়া কোন গেমিং ফোন কল্পণা করা যায় না। গেমিংয়ে ব্যাটারির ভূমিকা অপরিসীম আর আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে গেমিং করেন, তাহলে তো কথাই নেই। গেমিং করতে হলে সর্বনিম্ন 5000mAh ব্যাটারি নিবেন। তা না হলে দেখা যাবে ২-৩ ঘণ্টা গেম খেললেই Low battery ওয়ার্নিং দেওয়া শুরু করবে যা বিরক্তিকর একটা বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
৩। ফাস্ট চার্জিং
গেমিং ফোনে বড় ব্যাটারি থাকার কারণে নরমাল চার্জার দিয়ে চার্জ করতে অনেক সময় লেগে যায়। কিছু কিছু সময় নরমাল চার্জার দিয়ে 5000mAh ব্যাটারি চার্জ করে ২ ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়। তাই, ফোন নেওয়ার সময় ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে এই ধরণের ফোন নিবেন। তবে, ফাস্ট চার্জার বক্সের ভেতরে থাকলে আরো ভালো। এতে করে আপনার চার্জারের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে না।
৪। ডিসপ্লে
ভালো গেমিং এক্সপেরিয়ান্সের জন্য ভালো ডিসপ্লে থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, ডিসপ্লে ভালো হলে ব্যাটারি সেভিংয়েও হেল্প করে। তাই, ডিসপ্লে সেকশনে Super Amoled ডিসপ্লেকে গুরুত্ব দিবেন। আবার High Refresh Rate সমৃদ্ধ ডিসপ্লে নিলে খুব Smooth গেমপ্লে পাবেন।
যদি বাজেট একটু বেশি হয় তাহলে অবশ্যই High Refresh Rate ডিসপ্লে নিবেন।
এতক্ষণ যে-সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম একটি গেমিং ফোন কেনার আগে এই বিষয়গুলো আপনাকে প্রথমে প্রাধান্য দিতে হবে। আরো কিছু বিষয় আছে যেগুলো গেমিং ফোনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ না অর্থাৎ এতে আপনার গেমিং পারফর্মেন্সে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। যেমন-
- ক্যামেরা
- বিল্ড কোয়ালিটি
- ডিজাইন
এগুলো আপনি আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ মতো নিতে পারেন।
আপনার বাজেট কম হলে আপনি হয়তো গেমিং স্মার্টফোনে সবকিছু ভালো নিতে পারবেন না। বাজেট কম হলে গেমিং এর জন্য এই ফোনটি নিতে পারেন। আর যদি বাজেট আপনার জন্য কোন সমস্যা না হয়, তাহলে হেভি গেমিং এর জন্য ৫টি স্মার্টফোন থেকে বাছাই ভাল একটা নিতে পারেন।
শেষ কথা
গেমিং ফোন কেনার আগে উপরের বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে আপনি আপনার বাজেটের সেরা ফোনটি নিতে সক্ষম হবেন। আশা করি, আজকের এই পোস্টটি স্মার্টফোন গেমারদের অনেক উপকারে আসবে।
দিন দিনই গেমিং ফোনের চাহিদা বাড়ছে আমাদের আমাদের তরুণদের মধ্যে। তাই, গেমিং স্মার্টফোন কেনার আগে কিছু বিষয় জানা জরুরি আর সেগুলো জানানোর জন্যে হৈচৈ বাংলাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ, সুমন ভাই। গেমিং ফোন তরুণদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। তাই, কেনার আগে কিছু বিষয় জানা আবশ্যক।