একটা সম্পর্কের বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ্য হতে চাওয়ার প্রবণতা অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছেলেদের ভিতরে এ ধরনের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কিন্তু আপনার যতই ইচ্ছা করুক না কেন, আপনি খুব সহজে যে আপনার গার্লফ্রেন্ডকে এ কথাটি জানাতে পারবেন না, তা খুব সহজেই অনুমেয়।
কারণ, এ ধরনের প্রচেষ্টায় একে অপরের সাথে স্বাচ্ছন্দ বোধ করা খুবই জরুরী। তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে তার সাথে অবশ্যই আপনাকে সৎ থাকতে হবে, কোন প্রকার শারিরীক বা মানসিক চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। একই সাথে তার মন মানসিকতাকে বুঝতে হবে। যদি আপনি সত্যিই তার সাথে এমন মুহুর্তকে উপভোগ করতে চান, তাহলে একই সাথে এটিও নিশ্চিত করুন যে, সেও যেন আপনার মতই স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।
একই সাথে আপনাকে আপনার সিদ্ধান্তের প্রতিও নিশ্চিত থাকতে হবে। ঘনিষ্ঠ্য হতে চাওয়ার আগে অবশ্যই তার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলে নেওয়া জরুরী। সেই সাথে আপনার গার্লফ্রেন্ডের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করার উপায়গুলো জানতে হবে এবং নিজেকে তার জন্যে আরধ্য করে তুলতে হবে। তবেই আপনি তার সাথে আরো ঘনিষ্ঠ্য হওয়ার সুযোগ পাবেন।
ঘনিষ্ঠ্য হওয়ার মধ্য দিয়ে একটি সম্পর্ক আরো অনেক বেশি গভীর হয়। একে অপরের প্রতি মায়া মমতা বৃদ্ধি পায়। তবে এর জন্য উভয়েরই ঘনিষ্ঠ্য হওয়ার জন্য শারিরীক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। তাই চলুন দেরী না করে জেনে নেওয়া যাক গার্লফ্রেন্ডের সাথে কিভাবে এ ব্যাপারে কথা বলবেন।
তার সাথে খোলামেলা আলোচনা করুন:
আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ড সম্পর্কে বা তার সাথে ঘনিষ্ঠ্য হতে চাওয়া সম্পর্কে কি ভাবেন, এটা সে কখনোই বুঝতে পারবে না, যদি না আপনি তার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেন। এর জন্য একে অপরের প্রতি বিশ্বাস এবং যে কোন ধরনের কথা একে অপরের সাথে আলোচনা করার মতো সম্পর্ক তৈরী করে নিতে হবে।
সম্পর্কের মধ্যে যতক্ষণ সংকোচ কাজ করবে ততক্ষণ আপনি চাইলেও কোনভাবে তার সাথে কথা বলতে পারবেন না বা যদি বলেও ফেলেন তবুও সে রাজী হবে না। আপনি কেন তার সাথে ঘনিষ্ঠ্য হতে চাইছেন বা আপনাদের সম্পর্কের উপর এর পরবর্তী প্রভাব কি কি হতে পারে তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন।
তাকে ভাবার মত সময় দিন:
আপনি যদি তার সাথে কথা বলেন, তাহলে হতে পারে ঠিক ঐ মুহুর্তে তার কাছে আপনার প্রস্তাব বা প্রশ্নের কোন উত্তর থাকবে না। আর না থাকাটাই অতি স্বাভাবিক। একটা মেয়ের জন্য এটা অনেক বড় সিদ্ধান্ত, যা সে কখনোই হঠাৎ করেই নেবে না। তাকে এটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার মত সময় দিন।
তাকে এটাই বলুন যে, সে তার মতো চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিক এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সেটা আপনাকে জানাক। ততক্ষন আপনি তার জন্য অপেক্ষা করবেন। তবে আপনাকে এটা মনে রাখতে হবে যে, আপনার যতদিনের সম্পর্কেই থাকুন না কেন, আপনার গার্লফ্রেন্ডের অধিকার রয়েছে আপনাকে ‘না’ বলার ।
আপনার গার্লফ্রেন্ড যদি এখনো ভার্জিন হয়ে থাকে অথবা যদি সে ইতিপূর্বেও কোন ছেলের সাথে ঘনিষ্ঠ্য হয়ে থাকে, তবুও সে আপনাকে মানা করতেই পারে। আপনার অনেক দিন একসাথে রয়েছেন বা এর আগেও সে কোন ছেলের সাথে ঘনিষ্ঠ্য ছিল, তার মানে এই নয় যে, আপনার তাকে চাপের মুখে রাজী করানোর অধিকার রয়েছে।
তাকে এটাই বলুন যে, আমি মনে করি তুমি যদি স্বাচ্ছন্দ বোধ না করো, তাহলে এই মুহুর্তে এ সবের কোন প্রয়োজন নেই। এতে আমাদের সম্পর্কের উপর কোন প্রভাব পড়বে না। এরপর যতদিন না সে নিজে থেকে এ ব্যাপারে কথা বলে, ততদিন অপেক্ষা করুন। প্রতিদিনই এসব নিয়ে কথা বলে আপনার প্রতি তার মন বিষিয়ে তুলবেন না।
ভুল চিন্তা করা থেকে বিরত থাকুন:
আপনার গার্লফ্রেন্ড আপনার সাথে ঘনিষ্ঠ্য হতে কেমন আগ্রহী বা কতটা আগ্রহী, তা আপনাকে লক্ষ্য করতে হবে। আপনার কথায় যদি সে কোন উত্তর না দেয়, তার মানে এটা কখনোই ধরে নেবেন না যে সে রাজী কিন্তু লজ্জায় চুপ করে আছে।
যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে, তাকে রাজী করানোর জন্য আপনাকে অনুরোধ, চাপ প্রয়োগ এমনকি প্রতারণার আশ্রয় নিতে হচ্ছে, তাহলে এটি নিশ্চিত যে সে এ ব্যাপারে আগ্রহী নয়।
তার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন:
আপনার গার্লফ্রেন্ড যদি আপনার সাথে ঘনিষ্ঠ্য হতে রাজীও হয়ে থাকে, তবুও সে চাইবে কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হতে। আর এজন্য সে আপনাকে ঘনিষ্ঠ্য হবার পূর্বেই কিছু প্রশ্নও করতে পারে। আপনাকে যতটা সম্ভব সৎভাবে এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এসব প্রশ্নের মধ্যে এমনও কিছু প্রশ্ন থাকতে পারে যা শুনে হয়তো আপনি নিজেও অবাক হয়ে যাবেন। একমুহুর্তের জন্য তার প্রতি নেতিবাচক ধারণাও চলে আসতে পারে।
কিন্তু সে জানতে চায় তার মানে এই নয় যে তার মধ্যে কোন সমস্যা রয়েছে। আপনার সাথে ঘনিষ্ঠ্য হবার পূর্বে অবশ্যই তার অধিকার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে নিশ্চিত হবার এবং এই একই কথা আপনার বেলাতেও প্রযোজ্য। আপনিও চাইলে সে রাজী হবার পর তার সাথে এসব নিয়ে কথা বলতেই পারেন।
ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের কথা বলে নেওয়াকে আমি অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত মনে করি। কারণ, এর মাধ্যমে আপনারা উভয়ের হঠাৎ উৎপন্ন হওয়া যে কোন ভুল ধারণা থেকে মুক্তি পাবেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, এ ধরনের সম্পর্ক তৈরী করতে যেয়ে সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
আর শুধুমাত্র কিছু সময়ের ঘনিষ্ঠ্যতার জন্য আপনি নিশ্চয়ই আপনার প্রিয় মানুষটিকে হারাতে চাইবেন না। তাই যতটা সম্ভব একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করুন।
সম্পর্কে ঘনিষ্ঠ্য হবার পর আগের চাইতেও একে অপরের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করুন। আপনার গার্লফ্রেন্ডের মনে যেন কখনোই এমন কোন ভাবনা না আসে যে ঘনিষ্ঠ্য হবার পর আপনার কাছে তার গুরুত্ব কমে গেছে। এতে একদিকে যেমন সে কষ্ট পাবে, তেমনি আপনিও তার কাছ থেকে আশানুরুপ ব্যবহার পাবেন না। ফলে একটা সময় সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটবে। তাই আগে ভাবুন এবং দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিন।
Leave a Reply