স্পিড আপনার ওয়েবসাইটকে হয় ভাসাবে, না হয় ডুবাবে। এ কারণে ওয়েব ডেভেলপার, মার্কেটার, এসইও এনালাইজারসহ সকলেই ওয়েবসাইটের স্পিড চেক করা ও অপটিমাইজ করার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। ওয়েবসাইটের স্পিড অপটিমাইজ আপনার অনলাইন সফলতাকে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তণ করে দিতে পারে।
ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করা কয়েকটি সংস্থার তথ্য মতে, একজন ভিজিটর সচরাচর কোন ওয়েব পেজে ৫ সেকেন্ডের বেশি অপেক্ষা করে না। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু ভিন্ন হতে পারে। যেহেতু আমাদের দেশের নেট স্পিড স্লো, তাই ভিজিটররা আরেকটু বেশি অপেক্ষা করে থাকে।
তবে, এই অপেক্ষার সময়টা যদি দীর্ঘ হয়, তবে কোনও ভিজিটরই বেশিক্ষণ কোনও ওয়েব পেজ লোড হওয়ার জন্যে অপেক্ষা করে বসে থাকবে না। কারণ, কারো হাতেই এত সময় নেই যে আপনার ওয়েবসাইটে এসে বসে থাকবে, যেখানে একই কন্টেন্ট অন্যান্য অনেক ওয়েবসাইটেই রয়েছে।
হুম, আপনার ওয়েবসাইট যদি স্লো হয়, তবে গুগল ভিজিটরদেরকে অন্য ওয়েবসাইটে পাঠিয়ে দেবে এবং আপনার সাইটের র্যাংক পড়ে যেতে থাকবে। কারণ, গুগলের যেসব র্যাংকিং ফ্যাক্টর রয়েছে, সেগুলোর মাঝে ওয়েবসাইট স্পিড অন্যতম একটি।
কাজেই, ওয়েবসাইটের স্পিড অপটিমাইজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আপনি যদি না’ই জানেন, আপনার ওয়েবসাইটের স্পিড কতটুকু, তাহলে কিভাবে অপটিমাইজ করবেন? তাই, আগে স্পিড চেক করে দেখতে হবে, তারপর অপটিমাইজ করতে হবে।
আসুন, ওয়েবসাইটের স্পিড চেক করার কিছু ফ্রি টুলের সাথে পরিচিত হওয়া যাক-
ওয়েবসাইটের স্পিড চেক করার ফ্রি টুল
১. Google PageSpeed Insights
গুগলের টুলটি আগে দিলাম। কারণ, ওয়েবসাইটের র্যাংকিং গুগলের উপরই নির্ভরশীল যেখানে আপনিও আপনার ওয়েবসাইটের অবস্থান চাইছেন। সে হিসেবে গুগলের স্পিড রেজাল্ট অন্যগুলোর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। Google PageSpeed Insights যদি আপনার ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স নিয়ে কোনও ইস্যু খুঁজে পায়, সেটা আপনার জন্যে ভাল এবং গুরুত্ব সহকারেই সেই সব ডাটা সংগ্রহ করা উচিৎ।
গুগলের এই টুলটি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ। জাস্ট উপরে দেয়া নামের উপর ক্লিক করে টুলটির হোম পেজে যান এবং Enter a web page URL লেখা সাদা বক্সটিতে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দিন। এরপর, বক্সের ডান পাশে থাকা Analyze লেখা নীল বাটনটিতে ক্লিক করুন। কিছুক্ষণের মাঝেই আপনি আপনার ওয়েবসাইটের স্পিড রেজাল্ট দেখতে পাবেন।
২. GTmetrix
সম্ভবত GTmetrix টুলটিই ওয়েবসাইট স্পিড টেস্টের সবচেয়ে ডিটেইলস্ রেজাল্ট দেখিয়ে থাকে। এই টুলের মাধ্যমে আপনি একই সঙ্গে পেজ স্পিড এবং ওয়াইস্লো মেট্রিক দেখতে পাবেন। আর উভয়টার স্পিডই GTmetrix গ্রেডের (F থেকে A) মাধ্যমে দেখিয়ে থাকে। এই টুলের ক্ষেত্রেও হোমপেজে গিয়ে URL দিয়ে Analyze বাটনে ক্লিক করতে হয়।
৩. Pingdom Speed Test
Pingdom অত্যন্ত পাওয়ারফুল ওয়েবসাইট টেস্টিং টুল এবং এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই টুলটির রিপোর্ট চারটি অংশে বিভক্ত। আর এগুলো হলো ওয়েব পেজ অ্যানালাইজ, ওয়েব পেজ হিস্ট্রি, ওয়াটারফল ব্রেকডাউন এবং পারফর্মেন্স গ্রেড।
৪. WebPageTest
ওয়েবসাইট মালিক এবং ডেভেলপারদের কাছে রেজাল্টের দিক থেকে WebPageTest অনেক বিশ্বস্ত। প্রতিটি ওয়েবপেজ টেস্টের সময় ইউজার লোকেশন, ব্রাউজারসহ আরো অনেক ক্ষেত্রেই কাস্টোম সেটিংস্ তৈরি করতে পারে। এমনকি, একজন ইউজার একাধিক ওয়েবপেজ টেস্ট রান করতে পারে।
৫. DareBoost
প্রথম দেখায় DareBoost টুলটিকে অন্যগুলোর মতোই মনে হবে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই টুলটি অন্যদের চেয়ে আলাদা এবং ভাল রেজাল্ট দিয়ে থাকে। এই টুল দিয়ে লোকেশন বেইজড্ টেস্ট করা যায়। তবে, এই টুলটি একবার ব্যবহার করার পরেরবার কিন্তু সাইন আপ করতে হয়।
আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে ওয়েবসাইটের স্পিড চেক করার উপরোক্ত ফ্রি টুলগুলো দিয়ে আপনার সাইটটি চেক করে ফেলেছেন। তবে, আমাদের জানান কোন টুলটির রেজাল্ট আপনার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে?
Shakil Ahamed says
ওয়েবসাইটের স্পিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এটি চেক না করলে, স্পিড অপটিমাইজেশন করা যায় না। এই ফ্রি টুলগুলো সম্পর্কে জানানোর জন্যে ধন্যবাদ।