ওয়াশিং মেশিন কি এটা কাউকে জিজ্ঞেশ করার প্রয়োজন নেই। কারণ, আমরা সবাই জানি এটি একটি কাপড় ধোয়ার মেশিন। তবে, ওয়াশিং মেশিন কত প্রকার ও কি কি, এটা একটা প্রশ্ন হতে পারে। কারণ, আমাদের অনেকের কাছেই এই প্রশ্নের উত্তর নেই। অর্থাৎ, সবাই জানে না যে এই মেশিনটি কত প্রকার। আসুন, আমরা ওয়াশিং মেশিনের সংজ্ঞা জানি, সেই সাথে জানি এর প্রকারভেদ।
ওয়াশিং মেশিন কি?
কোন রকম শারীরিক পরিশ্রম ছাড়া বিভিন্ন ধরণের কাপড় ধোয়ার জন্যে যে মেশিন ব্যবহার করা হয়, প্রচলিত অর্থে তাকেই ওয়াশিং মেশিন বলে। এই হোম অ্যাপ্লায়ান্সটির আরো কিছু নাম রয়েছে। যেমন- লন্ড্রি মেশিন, ওয়াশার, ক্লথ ওয়াশার, ইত্যাদি।
ওয়াশিং মেশিনে অটোমেটিকভাবে আমাদের কাপড় ধুয়ে দেয় যেখানে আমাদেরকে হাত দিয়ে কাপড় ঘষতে হয় না কিংবা ধোয়া শেষে কাপড় চিবিয়ে পানি ঝরাতে হয় না। এ সবকিছুই ওয়াশিং মেশিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে করে থাকে। আপনি যদি ১০টি ভাল মানের ওয়াশিং মেশিন থেকে যে কোনটি ব্যবহার থাকেন, তবে আপনার কাজ হচ্ছে মেশিনে কাপড় দেয়া এবং ওয়াশ মুড সিলেক্ট করে দেয়া।
কাপড় দেয়ার পর ওয়াশিং মেশিন নিজ থেকেই অটোমেটিকভাবে পানির পরিমাণ নির্ধারণ করে নেয় এবং প্রয়োজন মাফিক ডিটারজেন্টও নিয়ে নেয়। এমনকি, সিলেক্টিং মুড অনুযায়ী এটি কাপড় ধোয়া, পানি ঝরানো এবং শুকানোর টাইমিংও সেট করে নেয়।
ওয়াশিং মেশিন আবিস্কার
ওয়াশিং মেশিনের প্রথম ধারণাটি আসে ১৬৯১ সালে। তবে, ১৭৫২ সালে The Gentleman’s Magazine নামের একটি ব্রিটিশ পাবলিকেশনে সর্ব প্রথম ওয়াশিং মেশিনের ড্রয়িং ছাপানো হয়। এরপর, ১৭৬৭ সালে Jacob Christian Schäffer নামের একজন জার্মান বিজ্ঞানী প্রথমবারের মতো ওয়াশিং মেশিনের ফিজিক্যাল ডিজাইন করেন যা পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের দ্বারা আধুনিকায়ন হতে থাকে।
১৯৩৭ সালে প্রথম অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিন আবিস্কার হয়। আমেরিকার টেকনোলোজি কোম্পানী Avco Corporation এর সহযোগী সংস্থা Bendix Home Appliances সর্ব প্রথম বাজারে স্বয়ংক্রিয় ওয়াশিং মেশিন নিয়ে আসে। এরপর, ধীরে ধীরে বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানী বিভিন্ন নামে ওয়াশিং মেশিন বানাতে থাকে।
ওয়াশিং মেশিন কত প্রকার ও কি কি?
কাপড়-চোপড়ের লোডিং পজিশনের উপর ভিত্তি করে, দুই ধরণের ওয়াশিং মেশিন রয়েছে। সেগুলো হলো-
- টপ লোডিং ওয়াশিং মেশিন
- ফ্রন্ট লোডিং ওয়াশিং মেশিন
টপ লোডিং ওয়াশিং মেশিন: যে ওয়াশিং মেশিনে টপ অর্থাৎ উপর থেকে কাপড় লোড করা হয়, তাকে টপ লোডং ওয়াশিং মেশিন বলে। এ ধরণের ওয়াশিং মেশিনের উপরে একটি কাভার থাকে যা দিয়ে জামা-কাপড় ঢুকানো এবং বাহির করা হয়। টপ লোডিং ওয়াশিং মেশিন আবার দুই প্রকার। যেমন-
- সেমি অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিন
- ফুল অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিন
ফ্রন্ট লোডিং ওয়াশিং মেশিন: এ ধরণের ওয়াশিং মেশিনের ফ্রন্ট বা সামনে সাইড দিয়ে জামা-কাপড় ঢুকানো ও বের করা হয়। ফ্রন্ট লোডিং ওয়াশিং মেশিনের সামনে দরজার মতো ব্যবস্থা থাকে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, ফ্রন্ট লোডিং ওয়াশিং মেশিন কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। এমনকি, এ মেশিনে ডিটারজেন্টও কম লাগে এবং জামা-কাপড় ধোয়ার ক্ষেত্রে টপ লোডিং ওয়াশিং মেশিনের থেকে ভাল রেজাল্ট দেয়।
শেষ কথা
এই লেখাটি পড়ে আপনারা জানলেন যে ওয়াশিং মেশিন কি এবং কত প্রকার ও কি কি। যারা আগে থেকেই জানতেন, তাদের জানাটা আরো পাকাপোক্ত হলো। আর যারা আগে থেকে জানতেন না, তাদের জানা হয়ে গেল। আশা করি, উভয়েরই লেখাটি পড়ে ভাল লেগেছে।
Leave a Reply