ইমেইল লিস্ট যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনেক বড় একটি সম্পদ। আপনি চাইলে এই লিস্ট ব্যবহার করে নতুন নতুন কাস্টমার তৈরী করতে পারবেন, পুরাতন কাস্টমারদের আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিভিন্ন আপডেট দিতে পারবেন আবার এই ইমেল লিস্ট থেকে আয় করতে পারবেন।
বিশেষ করে, অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসার ক্ষেত্রে ইমেইল লিস্ট যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপনের চাইতে অনেক বেশি কার্যকার হিসেবে প্রমাণিত। যার কারণে আজও অসংখ্য কোম্পানী তাদের ব্যবসায়ীক প্রচার ও প্রসারের কাজে ইমেইল মার্কেটিং পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে।
ইমেইল লিস্ট থেকে ভাল মানের আয় করার আগে কিভাবে ইমেইল লিস্ট তৈরী করতে হয় সেটা জানা প্রয়োজন। এটি একটি সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। রাতারাতি কেউ তার কাঙ্খিত ইমেইল লিস্ট তৈরী করতে পারে না। অনেকে অবশ্য বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে ইমেইল লিস্ট সংগ্রহ করে থাকেন। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই বড় ধরনের বিনিয়োগ প্রয়োজন।
ইমেল লিস্ট থেকে আয়
আপনি যদি ফেসবুক ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন, তাহলে একবার ভেবে দেখুন তো দিনে কতবার আপনি ফেসবুকে লগইন করেন? অনেক বার, তাই না? উন্নত বিশ্বেও বার বার ইমেইল চেক করার ব্যপারটাও অনেকটা একই রকম।
আর এখানেই একজন ইমেইল মার্কেটারের সফলতাটা লুকিয়ে থাকে। তবে ইমেল লিস্ট যদি আয় করতে চান, তবে কি কারণে ইমেইল মার্কেটিং থেকে আয় করার সেরা বছর ২০২০ সেটা অবশ্যই জেনে নেবেন। আর যদি জানা থাকে, তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেওয়া যাক ইমেল লিস্ট থেকে আয়ের পদ্ধতিগুলো-
পণ্য বিক্রয় করে:
আপনার ওয়েবসাইটে থাকা যে পণ্য সম্পর্কে আপনি আপনার ইমেইল লিস্ট ব্যবহার করে সবাইকে জানাতে পারেন। পণ্যটির গুণগত মান ও সুবিধাগুলি সম্পর্কে ইমেইলে বিস্তারিত আলোচনা করে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে হবে। এতে আপনার ওয়েবসাইটে থাকা পণ্য বিক্রয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যাবে।
আপনি যখনই নতুন কোন পণ্য ওয়েবসাইটে আপলোড করবেন, তখনই সেটা সম্পর্কে সবাইকে জানানোর চেষ্টা করুন। মানুষ নতুন নতুন জিনিষ সম্পর্কে জানতে চায়। আবার যদি পূর্বের কোন পণ্যের কোন আপডেট ভার্সন এসে থাকে, সেটা সম্পর্কেও আপনার কাস্টমারদের ইমেইলের মাধ্যমে অবহিত করুন।
কোর্স বিক্রয় করে:
ইন্টারনেটের এই বিপ্লবকালে মানুষ নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চায়। নতুন নতুন বিষয়ে শিখতে আগ্রহী মানুষগুলিকে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে থাকা বিভিন্ন কোর্স সম্পর্কে জানাতে পারেন এবং সেখান থেকে আয় করতে পারেন। কোর্স বিক্রয়ের সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো যে এটি ডিজিটাল প্রোডাক্ট হওয়াতে একবার বিনিয়োগ করে আজীবন ইনকাম করা সম্ভব।
ধরে নিন, আপনার রান্না বান্না সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইট আছে। এখন আপনি চাইলে বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার তৈরীর একটি কোর্স তৈরী করে সেটিকে ওয়েবসাইটে আপটলোড করে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে এমন মানুষদের খুঁজে বের করতে পারেন যারা প্রকৃতভাবে কোর্সটি করতে আগ্রহী।
এভাবে কোর্সটি যতদিন আপনার ওয়েবসাইটে থাকবে, ততদিন আপনার ইনকামও হতে থাকবে। তবে অবশ্যই চেষ্টা করবেন কোর্সটিকে নিয়মিত আপডেট করতে। নির্দিষ্ট সময় পর পর কোর্সটিতে নতুন নতুন বিষয় যোগ করুন এবং ইমেইলের মাধ্যমে সবাইনে আপডেট জানান।
ইমেইল লিস্ট বিক্রয় করে:
আপনি যে বিষয় নিয়েই কাজ করেন না কেন, মনে রাখবেন আপনি একা নন। আপনার মত বহু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা হয়তো একই বিষয়ে সম্পৃক্ত অন্য কোন বিষয় নিয়ে কাজ করে এবং তাদের কাছে আপনার সংগ্রহে থাকা ইমেইল লিস্ট বিক্রয় করে আপনি ভালো পরিমাণ অর্থ ইনকাম করতে পারেন।
পূর্বের উদাহরণটি ধরেই বলি, আপনার যদি রান্না বান্না বিষয়ক ওয়েবসাইট থাকে, তাহলে দেখা যাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কিচেন প্রোডাক্ট বিক্রয় করে এমন কোম্পানীগুলি আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। আবার আপনি নিজ থেকেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ইমেইল করতে পারেন আপনার ইমেইল লিস্ট ক্রয়ের প্রস্তাব দিয়ে।
আপনার ওয়েবসাইটের বিষয় বস্তু, কোন ধরনের মানুষেরা আপনার ইমেইল সাবস্ক্রাইবার এবং এই ইমেইল লিষ্ট থেকে ঐ কোম্পানী কি কি লাভ পেতে পারে তা বর্ণনা করে যোগাযোগ করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় খুব ভালো দামে ইমেইল লিস্ট বিক্রি হয়ে যায়।
ফিল্যান্সার হিসাবে কাজ করে:
ইমেইল কালেকশন করা একটি কষ্টসাধ্য ও সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তবে, একবার যদি আপনি এটা শিখে ফেলেন তাহলে, এটা থেকে বিপুল পরিমাণ ইনকাম জেনারেট করা সম্ভব। আপওয়ার্কের মত জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতে প্রতিদিনই ইমেইল লিষ্ট বিল্ডিং সংক্রান্ত শত শত জব পোষ্ট হয়ে থাকে। আবার ফাইবারেও গিগ তৈরী করে অন্য কোন কোম্পানীর জন্য ইমেইল সংগ্রহের কাজ করা যায়।
লিড বিক্রয় করে:
ইমেইল লিষ্ট থেকে যতভাবে আয় করা যায়, তার মধ্যে লিড বিক্রয় সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এর কারণে হচ্ছে এর মাধ্যমে অল্প সময়ে অনেক বেশি ইনকাম করা যায়। ধরে নিন, আপনি ইমিগ্রেশন আইন নিয়ে একটি ওয়েবসাইট বানালেন এবং সেটিকে গুগলে র্যাংক করলেন। তো স্বাভাবিকভাবেই বলা যায়, আপনার ওয়েবসাইটে তারাই আসবে যারা ইমিগ্রেশন আইন সম্পর্কে জানতে চায় বা যাদের এ সংক্রান্ত কোন সহযোগীতা লাগবে।
তো আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে, আপনার ওয়েবসাইটে একটি কনট্যাক্ট ফরম রাখুন যেটা ব্যবহার করে যার এ বিষয়ে সাহায্য লাগবে, সে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। এখন আপনি যদি পেশায় ইমিগ্রেশন সম্পর্কিত উকিল না হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এ বিষয়ে কাজ করেন এমন একজন উকিলের সাথে আলাপ করে আপনার ওয়েবসাইটে যারা রেজিষ্ট্রেশন করেছেন, তাদের তথ্য সরবরাহ করে প্রতিটি তথ্যের জন্য ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে পারেন।
ইমেল লিস্ট থেকে আয় করার কনসেপ্টটা আমাদের দেশের খুব কম মানুষ জানেন। কারণ, আমাদের দেশে ইমেইলের ব্যবহার এখনও খুব বেশি জনপ্রিয় হয়নি। একান্ত ব্যক্তিগত কাজ ছাড়া খুব বেশি মানুষ তাদের ইমেইল অ্যাকাউন্টে লগ ইন করেও দেখেন কিনা সেব্যাপারে সন্দেহ আছে।
কিন্তু উন্নত বিশ্বের চিত্রটা একটু ভিন্ন রকম। সেখানে দিনের নির্দিষ্ট সময় পর পর ইমেইল চেক করা এবং ইমেইলের মাধ্যমে অন্যান্যদের সাথে যোগাযোগ করাটা মানুষের দৈনন্দিন জীবনেরই একটা অংশ। আর তাই সেখানে ইমেইল লিষ্ট ব্যবহার করে আয় করাটাও সহজ।
Jose N Stalvey says
হুম, ভাববার বিষয়! ইমেল লিস্ট থেকে চাইলেই কি আয় করা যায়!