স্মার্টফোন ব্যবহারকারী অধিকাংশ মানুষের কাছেই ইমুলেটর শব্দটি বেশ পরিচিত। নানা কাজে ইমুলেটর ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা রয়েছে অনেকেরই। আবার, অনেকেই রয়েছেন যারা এখনো ইমুলেটর ব্যবহার করেননি, এমনকি ইমুলেটর কি বা কি কাজে ব্যবহৃত হয় সেটাও জানেন না। আসুন, ইমুলেটর সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
ইমুলেটর কি?
ইমুলেট শব্দটির মানে হল অনুকরণ করা, সমকক্ষ হতে চেষ্টা করা। আর যে অনুকরণ করে কিংবা সমকক্ষ হতে চেষ্টা করে, সে-ই ইমুলেটর। তার মানে, আমরা বুঝলাম যে, ইমুলেটর একটি জিনিসকে আরেকটি জিনিসের অনুরূপ করে তুলতে সাহায্য করে।
কম্পিউটারের ভাষায়, ইমুলেটর হল এমন একটি হার্ডওয়ার বা সফটওয়্যার যা একটি গেস্ট কম্পিউটারের মত কাজ করে। এ ধরণের সফট্ওয়্যার একটি কম্পিউটার সিস্টেমকে অন্য আরেকটি কম্পিউটার সিস্টেমের মতই কাজ করতে সাহায্য করে।
অন্যদিকে একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে অন্য একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিংবা কম্পিউটার থেকে এক্সেস করার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর। এ ধরণের ইমুলেটর দিয়ে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের অনেক ফাংশন কম্পিউটারে চালানো যায়। অ্যাপস্ রান করা যায়, গেম খেলা যায়, ফাইল ট্রান্সফার করা যায়।
ইমুলেটর একটি ডিভাইসে আরেকটি ডিভাইসের জন্যে উপযুক্ত এনভায়রনমেন্ট সৃষ্টি করে। ফলে, এক ডিভাইসে থেকেই অন্য ডিভাইসের এক্সেস নেয়া যায় এবং যে কোন অ্যাপ্লিকেশন রান করা যায়।
মূল কথা, একটা ডিভাইসে থাকা যে কোন প্রোগ্রাম, সফট্ওয়্যার কিংবা অ্যাপ্লিকেশন অন্য আরেকটি ডিভাইসের মাধ্যমে রান করার জন্যে ইমুলেটর ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, ইমুলেটর এখানে দু’টি ডিভাইসকে একটির সাথে আরেকটি সিংক করিয়ে দিতে মিডিয়া সফট্ওয়্যার হিসেবে কাজ করে।
ইমুলেটরের কম্পোনেন্ট
তিন ধরণের কম্পোনেন্টের মাধ্যমে একটি ইমুলেটরকে কম্পোজ করা হয়।
- সিপিইউ ইমুলেটর (সর্বাধিক জটিল অংশ)
- মেমোরি সাব-সিস্টেম ইমুলেটর
- ইন-পুট বা আইট-পুট ডিভাইস ইমুলেটর
ইমুলেটর কিভাবে কাজ করে?
ইমুলেটর একটি ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেমে ঢুকে হার্ডওয়্যার ও সফট্ওয়্যারের সাহায্য নিয়ে অন্য অপারিটিং সিস্টেমকে সেখানে চালু করে দেয়।
ইমুলেটর কি কাজে ব্যবহার হয়?
ইমুলেটর মূলত অ্যাপস্, গেমস্ এবং সফট্ওয়্যার টেস্ট করার কাজে ব্যবহার করা হয়। একজন ডেভেলপার যখন কোন অ্যাপ বা গেম ডেভেলপ করেন, তখন সেটি রিলিজ দেয়ার আগে তার ফাংশনালিটি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা টেস্ট করার প্রয়োজন হয়। কোন অপারেটিং সিস্টেমে রিলিজ দেয়ার আগে তাই একজন ডেভেলপার ইমুলেটরের সাহায্য নিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে সেটি টেস্ট করে নেন।
ধরুন, একজন ডেভেলপার অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্যে একটি গেম তৈরি করেছেন। প্লে-স্টোরে আপলোডের আগে তিনি অবশ্যই গেমটির যাবতীয় ফাংশনালিটি চেক করে নেবেন। তখন তিনি যেটা করবেন সেটা হচ্ছে যে কোন একটি ইমুলেটর দিয়ে কম্পিউটারে গেমটি চালিয়ে দেখবেন সবকিছু ঠিক আছে কিনা।
এই তো গেল ডেভেলপারদের জন্য ইমুলেটরের প্রয়োজনীয়তা। একজন সাধারণ ইউজার হিসেবে আপনি কি কাজে ইমুলেটর ব্যবহার করবেন? হুম, সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে আপনার। ধরা যাক, আপনি একজন গেম লাভার। আপনার প্রিয় অনেক অ্যান্ড্রয়েড গেম রয়েছে। আপনার পছন্দের তালিকায় এমন কিছু গেম আছে, যেগুলো খেলতে গিয়ে প্রায়ই অনুভব করেন যে, ইস্ গেমটি কম্পিউটারে খেলতে পারলে ভাল হতো!
খেলতে পারলে মানে কি! অবশ্যই আপনার পছন্দের এই গেমটি কম্পিউটারেই খেলতে পারবেন। আপনার দরকার শুধু সেরা ৪টি অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটরের যে কোনটি। ডাউনলোড করেই কম্পিউটারের সঙ্গে আপনার স্মার্টফোনকে কানেক্ট করে নিন, আর বড় স্ক্রিনেই খেলতে শুরু করুন যে কোন অ্যান্ড্রয়েড গেম।
মাহামুদুল হাসান আসিফ says
Descriptive and interesting post, I have known a lot about emulator, thanks.
Abu taleb says
ধন্যবাদ, ইমুলেটর নিয়ে দারুণ সাহায্যকারী এই লেখাটির জন্যে। ইমুলেটর সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম, এটি দিয়ে কি কাজ হয় বা কোন কাজে ব্যবহার করা হয়, সব বিষয়েই সুন্দর একটি আলোচনা পড়লাম, তাই লেখককে ধন্যবাদ।