অনলাইনে চাকরি বা অনলাইন কাজ যা-ই বলুন, ফ্রি-ল্যান্সিং ক্যারিয়ার আপনাকে চাকরির থেকে বেশি ইনকাম ও সুযোগ সুবিধা দিতে পারে। এটা সম্পূর্ণ প্রমাণিত সত্য। সম্প্রতি বিজনেস ইনসাইডার ও পেওনিয়ারের এক সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে গড় হিসেবে বিশ্বব্যাপী চাকরিজীবিদের চেয়ে তিন গুন বেশি আয় করছে ফ্রি-ল্যান্সাররা।
আর এমন ৭টি ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে যেগুলো থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করা যায়। আর এ কাজগুলো যারা করছেন, তাদের আয়ের কথা একবার ভেবে দেখুন! আশা করি, আপনার আর বুঝতে বা স্বীকার করতে অসুবিধা হবে না যে, ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান সময়ের সবচেয়ে দামী পেশা।
একজন ফ্রি-ল্যান্সার প্রতি ঘন্টায় গড় হিসেবে আয় করছে ২১ ডলার। আমাদের টাকায় যার পরিমাণ ১৫৭৫ টাকা। আপনি যদি চাকরির মত দিনে ৮ ঘন্টা কাজ করেন আপওয়ার্কে, তাহলে আপনার প্রতিদিনের ইনকাম দাঁড়াবে ১২ হাজার ৬শ টাকা।
চাকরি করলে গড়ে প্রতি মাসে অফিস করতে হয় ২৪ দিন। আপনি যদি চাকরির মতই হিসেব করে এ ২৪ দিনই কাজ করেন, তাহলে আপনার প্রতি মাসের বেতন হবে ৩ লাখ ২ হাজার ৪শ টাকা।
না ভাই, এটা আমাদের বানানো তথ্য না। এটা বিজনেস ইনসাইডার ও পেওনিয়ারের বিশ্বজুড়ে একটা অনলাইন সার্ভের তথ্য। প্রমাণ দেখতে Business News Daily তে প্রকাশিত নিউজটা পড়ে আসুন।
আশা করি, আপনার মনে এখন আর কোন সংশয় নাই। তবে বিষয়টা এ রকম নয় যে বাংলাদেশে বসে চাইলেই আপনি সঙ্গে সঙ্গে এ পরিমাণ টাকা আয় করে ফেলতে পারবেন। আপনাকে কাজ জানতে হবে, সরাসরি কাজ নিতে হবে এবং সুন্দুরভাবে সে কাজ সম্পন্ন করে দিতে।
এভাবে ধীরে ধীরে এমন এক সময় আসবে যখন আপনি প্রতি মাসে এর থেকেও বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। কারণ, উপরের হিসেব গড় প্রতি সর্বনিম্ন আয়ের হিসেব।
অনলাইনে চাকরি থেকে আপনার বেতন হতে পারে ৩ লাখ টাকা
কিন্তু কিভাবে আমার মত একজন মানুষের পক্ষে এ দেশে বসে এত টাকা আয় করা সম্ভব! আরে ভাই, আপনি এই ঠকের দেশে জন্ম নিয়েছেন বলে আপনার কাছে এই টাকাটাকে বিশাল একটা অংক মনে হচ্ছে। আর আপনার পক্ষেও অসম্ভব মনে হচ্ছে।
আমেরিকা, কানাডা, জাপান, অস্ট্রলিয়াসহ এমন বহু দেশ রয়েছে যেখানে এ বড় অংকা একজন সাধারণ নাগরিকের এক ঘন্টার শ্রমের মূল্য। আপনি তো আর এই দেশের ঠকবাজ মানুষদের কাজ করবেন না। আপনি কাজ করবেন ওই সব দেশের ক্লায়েন্টদের।
আর ক্লায়েন্টরা আপনাকে দিয়ে কাজ করাবে কিছু খরচ বাচাঁতে। তাদের দেশের কাউকে দিয়ে একটা কাজ করিয়ে যে টাকা পেমেন্ট দিতে হবে, আপনাকে আমাকে দিয়ে করালে তার তিন ভাগের এক ভাগ টাকা খরচ হবে। সুতরাং, সে আপনাকেই খুঁজছে। আপনি সঠিক জায়গায় নেই বলে ওরা আপনাকে খুঁজে পাচ্ছে না। মাঝখানে এ দেশের কিছু অসৎ লোক ওই জায়গায় আছে বলে কাজ পাচ্ছে আর এদেশের মানুষ ঠকাচ্ছে।
আর আপনার মত অনেকেই ওই জায়গায় যেতে পারে না বলে এদের কাছে ঠকেই যাচ্ছে। আসুন, আমরা শপথ করি, আমরা কাউকে ঠকাবো না এবং আমাদেরকে ঠকানোর সুযোগও আমরা কাউকে দেবো না। তাহলে আমরা কি করবো?
আমরা খুঁজবো কোথায় কোথায় অনলাইনে কাজ পাওয়া যায়। যেমন, আমরা ফ্রিল্যান্সিং করার সেরা ৪টি ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখবো, ভালভাবে বুঝার চেষ্টা করবো। এগুলোতে কি কি কাজ রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। আমরা নিজেরাই কাজ নেবো। নিজেরাই করবো। অন্যদের দিয়ে করাবো। কি কাজ? অনেক কাজ রয়েছে।
আমরা সবচেয়ে সহজ কাজটা দিয়েই শুরু করবো। যে কাজটার জন্য তেমন কোন বিশেষ যোগ্যতা লাগে না। যে কোন লেখা দেখে পড়তে পারা আর কম্পিউটারে টাইপ করা জানলেই চলবে। বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে ক্লায়েন্টের সঙ্গে মেসেজ এ লিখে কথা বলার মত ইংরেজী জানাটা লাগবে। এই টুকু যোগ্যতা কি আপনার নাই? অবশ্যই আছে।
ডাটা এন্ট্রি ক্লার্ক
পেমেন্ট: ঘন্টায় ৯ থেকে ১৬ ডলার
ডাটা এন্ট্রির কাজটা আপনাকে খুব বেশি টাকা এনে দিতে না পারলেও এখানে কাজ করার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েই আমাদের দেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এদের অল্প কিছু কাজের কাজ করলেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই ঠক। আপনাকে এই পরিমাণ কাজ দেবে যে, আপনি সারা মাস গাধার মত খেটে মাস শেষে যে বেতন পাবেন তা খুবই সামান্য। ঘটনা কি?
ঘটনা সহজ। এরা অনলাইনে ঘাটাঘাটি করে কাজ নিয়ে আসে, এনে আপনার আমার মত বেকারদের খুঁজে এনে (এখন অবশ্য খুঁজতে হয় না, এমনিতেই পেয়ে যায়!) কাজ করিয়ে নেয়। আর কাজের বিপরীতে যে পেমেন্টটা তুলে নেয় সেটা আসলেই একটা বড় অংক। আর আপনাকে আমাকে যে বেতন বা কমিশন দেয় সেটা আমাদের মূল কাজের হয়তো ২০ থেকে ২৫%। বাকী টাকা তাদের পকেটে যায়।
যাবেই তো! কাজটা তো আর আমরা আনিনি। অফিসও তো আর আমাদের নয়। এই কাজটা যদি আপনি আনতেন আর আপনার যদি এ রকম একটা অফিস থাকতো। তাহলে, আপনি কি করতেন? নিশ্চয়ই আপনি মানুষদের এতটা ঠকাতেন না। অন্ততপক্ষে ৫০% তাদেরকে দিয়ে দিতেন। দিতেন না? নিশ্চয়ই দিতেন। কারণ, আপনি এতটা খারাপ মানুষ নন।
সুতরাং, নিচের সাইটগুলোতে যান। এই সাইটগুলোতে ডাটা এন্ট্রির প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। এখান থেকে কাজ নিয়ে প্রথমে বাসায় বসে শুরু করুন। বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আলাপ-আলোচনা করুন কারা কারা ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে চায়। যারা করতে চাইবে, তাদের মধ্যে কাজটা ভাগ করে দিন। সবাই মিলে সুন্দরভাবে একজন ক্লায়েন্টের কাজ তুলে দিন। এ ক্লায়েন্ট আপনার জন্য ফিক্সড্ হয়ে যাবে যদি আপনি অন্যদের থেকে একটু কম রেটে আর নির্ধারিত সময়ের ভেতর কাজটা করে দিতে পারেন।
তো একটা ক্লায়েন্ট ফিক্সড্ হয়ে গেলে আরেকটা ধরুন। এবার পরিচিত, অল্প পরিচিত, মহল্লার ছোট ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রণীর মানুষকে কাজে লাগিয়ে দিন। এতদিন যা টাকা পেয়েছেন তা আপনারা বন্ধু বান্ধবরা সমানভাবে ভাগ করে নিয়েছেন। এবার অন্যদের দিয়ে কাজ করিয়ে যে টাকা আসবে তার ৫০% আপনারা রেখে দিন। সব বন্ধু মিলে কিছু কিছু টাকা জমা করুন। টার্গেট করুন ভবিষ্যতে আপনারা নিজেরা আর কাজ করবেন না। আপনারা একটা অফিস নেবেন। অন্যদের দিয়ে কাজ করাবেন।
নিচের সাইটগুলোতে যান। ভালভাবে ঘাটাঘাটি করুন। শুরুতে চেষ্টা করুন ছোট একটি কাজ ধরতে। ধরেই বড় কাজ নিলে আপনি ঠিক সময়ে শেষ করতে পারবেন না। কারণ, আপনি এখনো বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেন নাই। আজকে না হয় নিজে নিজে ঘাটাঘাটি করুন। কাল বন্ধুদের জানাবেন। তাদেরও ঘেটে দেখতে বলবেন। যেই আগে কাজ পাক না কেন, কাজটা সবাই মিলে করবেন। তাহলে সফল হওয়ার সম্ভাবণা অনেক বেড়ে যাবে।
যে সাইটগুলোতে ডাটা এন্ট্রির কাজ পাবেন-
আপওয়ার্কসহ যে কোন আউটসোর্সিং সাইটেই ডাটা এন্ট্রির প্রচুর কাজ রয়েছে। তবে এ কাজে তাদের প্রথম পছন্দ এজেন্সীগুলো। আমাদের দেশে যারা অফিস নিয়ে কাজ করাচ্ছে, এরাই এজেন্সী। এজেন্সীকে পছন্দ করার কারণ হচ্ছে, একটা এজেন্সীতে প্রচুর কর্মী আছে। তাই তারা অল্প সময়ে অনেক কাজ করিয়ে নিতে পারে।
তাহলে আপনার কি হবে! কিছুই হবে না। আপনিও এক সময় এজেন্সী খুলে বসতে পারবেন। তার আগে নিজে নিজে কিছু কাজ নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করে দিন। আর ব্যক্তিগতভাবে কাজ নেয়া যায় এ রকম ওয়েবসাইটগুলো ভিজিট করুন। এগুলো থেকে কাজ পাওয়ার চেষ্টা করুন। নিচে কয়েকটি সাইটের অ্যাড্রেস দেয়া হলো।
বাটনে ক্লিক করে সাইটে যান। কয়েকদিন রিসার্চ করুন। তারপর কাজের জন্য আবেদন করুন। ইনশাল্লাহ্ পেয়ে যাবেন।
উপরোক্ত সাইটগুলোতে ডাটা এন্ট্রি দিয়ে ঘরে বসে আয় কিংবা অনলাইনে চাকরি করা যাবে অনায়াসে। আপনার যেটা দরকার সেটা হচ্ছে পড়ে বোঝার ক্ষমতা এবং লিখে বোঝার ক্ষমতা। অর্থাৎ ইংরেজীতে দক্ষতা। খুব বেশি দক্ষতা না হলেও চলবে। শুধু ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করার মত ইংরেজী জ্ঞান থাকলেই আপনি অনায়াসে ডাটা এন্ট্রির কাজ নিয়ে বাসায় বসে শুরু করে এক সময় নিজেই অফিস নিতে পারবেন।
Rakib says
Thanks for your valuable advice and I will pray for your successful achievement.
Thanks & B.rgds
Rakib
Antor says
Thank you, Rakib. I hope your success too.
বৃষ্টি আক্তার নুপুর says
আমি জব করতে চাই? কি করে শুরু করবো প্লিজ সাহায্য করেন আমাকে
টি আই অন্তর says
প্রথমত, ডিসিশন নিন যে আপনি কোন কাজটি করবেন, কোন কাজটি আপনার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে কিছুটা হলেও মিলবে। এই পোস্টে মূলত: ডাটা এন্ট্রির কাজ নিয়ে লেখা হয়েছে, এই কাজটি থেকে কেমন আয় করা যেতে পারে তার উপর একটা ডিটেইল আইডিয়া দেয়া হয়েছে। আপনি যদি এই কাজটিই করতে চান, তবে আপওয়ার্কে একটা অ্যাকাউন্ট খুলুন, যদিও অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করানো এখন অনেক টাফ হয়ে গিয়েছে। আই ফ্রিল্যান্স, পিপল পার আওয়ারসহ অন্যান্য যেসব ফ্রিল্যান্সিং সাইটের ওয়েব অ্যাড্রেস দেয়া হয়েছে, সেগুলো ভিজিট করুন এবং প্রত্যেকটিতেই অ্যাকাউন্ট খুলুন। প্রোফাইল সাজিয়ে নিন এবং বিড করতে শুরু করুন।
Rakib says
Please advise me about Payment collection way.
Antor says
Currently, the only way is PayPal zoom which has been started in Bangladesh. You can collect your payments from anywhere around the world via PayPal Zoom.
Antor says
এই লিংকে গিয়ে পে-পাল অ্যাকাউন্ট খুলবেন কিভাবে জেনে নিন।
Biplob says
ভাই আমি কাজ করতে চাই আমাকে কাজ দিবেন? দিলে আমার ইমেল নাম্বারে লিংক দিবেন আমি কাজ করে দিব।
টি আই অন্তর says
ভাই, কাজ তো আমাদের হাতে নেই, আমরা কিভাবে কাজ দেবো? আমরা শুধু কাজের সন্ধান দিচ্ছি, কাজ পাওয়ার প্রক্রিয়া জানিয়ে দিচ্ছি। অ্যাকাউন্ট খোলা, পেমেন্ট প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য যাবতীয় বিষয়ে ইনফর্মেশন নিয়ে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনাদের জানিয়ে দিচ্ছি। কাজ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে আপনাদের নিজেদেরকে। কোথাও আঁটকে গেলে কিংবা কোন কিছু না বুঝলে আমরা অবশ্যই সাহায্য করবো, ভাল থাকুন।
Md Al Amin Hossen says
আমি অনলাইনে জব করতে চাই। কি করে শুরু করবো, প্লিজ সাহায্য করেন আমাকে।
টি আই অন্তর says
আপনি আপওয়ার্ক কিংবা ফ্রিল্যান্সারে অ্যাকাউন্ট খুলুন। এরপর প্রোপাইল সাজিয়ে নিয়ে জবপোস্টগুলোতে অ্যাপ্লাই করতে থাকুন। একবার একটা কাজ পেয়ে গেলেই ক্রমাগত কাজ পেতে থাকবেন।
Dipu vashani says
আমিও কাজ করতে চাই,আপনাদের বাংলা বানান অনেক আছে বলে মনে হচ্ছে, যা হোক আমি কিভাবে কাজ পেতে পারি?
Md.Ebrahim says
অনলাইনে চাকরি সম্পর্কে অসাধারণ একটি লেখা। সত্যিকার অর্থেই ফ্রিল্যান্সিং করে এই পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব।