এই পৃথিবীতে যে কত কিছু রয়েছে তা ভেবেও কোন দিন শেষ করা সম্ভব না। তা হোক স্থলে কিংবা পানিতে। স্থলের প্রাণী, উদ্ভিদ কিংবা পানিতে বাস করা যে কোনো প্রাণী হোক না কেন, তাদের সবার কাছে মানুষ আজও পৌঁছাতে পারেনি। এই পৃথিবীতে অনেক ধরণের মাছ রয়েছে যারা খুবই ভয়ংকর এবং একইসাথে বিপদজনকও বটে।
ভয়ংকর এবং বিপদজনক মাছ বলতে আমরা সাধারণত হাঙরকেই বুঝি। কিন্তু আজ আমরা জানবো অন্যান্য আরো ৫টি ভয়ংকর ও বিপদজনক মাছ সম্পর্কে। আর আপনি অবাক হবেন এই জেনে যে এর মধ্যে হাঙরের নামই থাকবে না। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ৫টি বিপদজনক ও ভয়ংকর মাছ সম্পর্কে।
১. Piranha
এই নামের একটা হলিউড মুভির সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। সেই মুভিতে একটা মাছ যে কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে তা দেখানো হয়েছে। ভাববেন না যে শুধু মুভিতেই দেখানোর জন্য মাছটিকে ভয়ংকর করে তোলা হয়েছে। যদি ভয়ংকর মাছদের একটা দল বানানো হয় তাহলে নিঃসন্দেহে সেই দলের নেতৃত্বে থাকবে এই পিরানহা মাছ।
দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় এই ভয়ঙ্কর এবং বিপজ্জনক মাছটি তার ধারালো দাঁতের এবং শক্তিশালী চোয়ালের জন্য পরিচিত। বর্তমানে ৪০ থেকে ৬০ টি প্রজাতির পিরানহা রয়েছে যারা প্রায় ২৫ সেমি লম্বা। এরা বিশুদ্ধ পানিতে বাস করে, বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকার নদীগুলিতে। যেমন আমাজন, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, দ্য ওরিনোকো, ভেনিজুয়েলা এবং কলম্বিয়াতে। এদের ভয়াবহতা এবং ক্ষতি নিয়ে প্রায় ১০টির মতো মুভি তৈরি হয়েছে।
২. Goliath Tigerfish
মাছের নাম শুনেই যেন বোঝা যাচ্ছে যে এরা খুবই হিংস্র এবং ভয়ঙ্কর। আসলেও তাই। এটি টাইগারফিশ পরিবারের সবচেয়ে বড় সদস্য এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক মাছের বংশধর। পিরানহা মাছের সাথে এর পার্থক্য হলো এরা বেশি পেশীবহুল এবং এর চোয়াল কুমিরের মতো। এরা প্রায় দেড় মিটার এবং ৭৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
এই মাছেরা কঙ্গো নদী অববাহিকার পাশাপাশি লুয়ালাবা এবং জাম্বেজির মতো আফ্রিকান নদীতেও থাকে। এই মাছগুলো গভীর পানি মাছ, যার কারণে এদের খুঁজে পাওয়া কিছুটা দুষ্কর।
৩. Barracuda
এই মাছটি গভীর সমুদ্রের মাংসাশী মাছেদের বংশধর। এই বিপজ্জনক মাছের প্রধান চরিত্রটি হল, তারা খুব দ্রুত তাদের শিকারকে আক্রমণ করতে পারে। যার প্রধান কারণ, তারা তাদের লেজ সরানোর মাধ্যমে 0 থেকে 90 কিলোমিটার / ঘন্টা পর্যন্ত দ্রুতগতিতে চলাচল করতে পারে।
যদিও মানুষ তাদের খাদ্যতালিকাগত পছন্দের কোন অংশ নয়, তারপরও প্রতিকূল পরিবেশে এরা একজন মানুষের উপর আক্রমণ করে বসতেই পারে। এরা সাধারণত দৈর্ঘ্য 45 সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং ক্রান্তীয় সমুদ্রের মধ্যে বিশেষত ক্যারিবিয়ান সাগরে এদের দেখা মেলে।
৪. Stonefish
বিশ্বের সেরা ভয়ংকর মাছের তালিকা বানাবেন আর তা থেকে স্টোনফিশের নাম বাদ দিবেন তা তো হতে পারে না। এই মাছটি কিছুটা লাজুক প্রকৃতির এবং এর পরিচিতি খুবই সামান্য। তারপরও এই মাছটি বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাছেদের মধ্যে অন্যতম।
এই মাছেরা প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও ভারত মহাসাগরের পানিতে বাস করে এবং ছোট ছোট মাছকে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। মাছটির কাঁটার সাথে যদি কোন মানুষের সরাসরি সংস্পর্শ ঘটে, তবে তা বিপদের কারণ হতে পারে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে বিষ রয়েছে। এরা ছদ্মবেশে দেখতে অনেকটা পাথরের মতো।
৫. Viperfish
সমুদ্রের প্রায় 2000 মিটার গভীরে থাকা এই ভয়ংকর মাছটি তার বাইউলুমিনসেন্ট অঙ্গ ব্যবহার করে শিকার করার জন্য, যখন সমুদ্রের তলদেশে সূর্যালোক পৌঁছায় না। এই ধরণের মাছগুলো যেমন বিপদজনক তেমনি এর চেহারাও ভীতিকর।
নিম্ন চোয়ালের তীক্ষ্ণ দাঁত এদের ভীতিকর চেহারার কারণ। এরা প্রায় 35 সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে এবং জ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে বর্তমানে এটি মহাসাগরের এক চতুর্থাংশ দখল করে রয়েছে।
শুধু এই পাঁচটি মাছই নয়, আরও অনেক মাছ রয়েছে যারা ভয়ংকর এবং একই সাথে বিপদজনকও বটে। এখানে বিশ্বের সেরা পাঁচটি ভয়ংকর ও বিপদজনক মাছ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
Leave a Reply