লোকাল এসইও টিপস্ নিয়ে আলোচনার আগে লোকাল এসইও’র গুরুত্ব সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে প্রতি ১০ জন কনজিউমারের মধ্যে ৮ জন লোকাল ইনফরমেশন পাওয়ার জন্য লোকাল সার্চ করেন। এর মানে হলো যদি আপনার বিজনেস লোকাল এসইও দ্বারা অপটিমাইজ না হয়ে থাকে, তাহলে আপনার কনজিউমার হারানোর সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ।
কি দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন? চিন্তার কোন কারণ নেই। আজকে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো দুর্দান্ত কিছু লোকাল এসইও টিপস্ যার মাধ্যমে আপনি আপনার লোকাল এসইও র্যাংকের উন্নতি সাধন করে আপনার লোকাল কম্পেটিটরদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে থাকবেন।
লোকাল এসইও টিপস্
যদি আপনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন এবং আপনার পণ্য বা সেবার মাধ্যমে উপার্জন করতে চান, তাহলে লোকাল এসইও নিয়ে এই আর্টিকেলটি আপনারই জন্য। লোকাল এসইও সম্পর্কে আপনার যদি পূর্বে ধারণা না থেকে থাকে, তাহলে লোকাল এসইও কি আর কেন লোকাল এসইও করবেন তা আপনার প্রথমেই জানা প্রয়োজন।
সংক্ষেপে বলতে গেলে বলা যায় লোকাল এসইও হলো এক ধরনের এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে-
- কোন একটি লোকাল ব্যবসার অনলাইন ভিজিবিলিটি বৃদ্ধি।
- লোকাল সার্চে উক্ত প্রতিষ্ঠান, ওয়েবসাইট ইত্যাদিকে র্যাংক করানো।
- সার্চ ইঞ্জিন থেকে লীড জেনারেট করা।
- অনলাইন রেপুটেশন, ব্র্যান্ড ক্রেডিবিলিটি এবং আস্থা তৈরী করা।
গুগল মাই বিজনেস সেট আপ করা:
গুগল মাই বিজনেস একটি অসাধারণ ফ্রি টুলস যার মাধ্যমে লোকাল বিজনেস এবং প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে তুলে ধরা সম্ভব। যার মধ্যে রয়েছে গুগল সার্চ এবং গুগল ম্যাপের মত অসাধারণ কিছু সার্ভিস। মাই বিজনেস সেটআপ করার জন্য-
- প্রথমে গুগল বিজনেস পেজ ভিজিট করুন।
- আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে সাইন-ইন করুন অথবা নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরী করুন।
- আপনার এলাকার নাম ও ঠিকানা দিয়ে সার্ট করুন এবং সঠিক লোকেশন নির্বাচন করে সেটআপ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।
- এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য গুগল আপনার লোকাল বিজনেসকে ভ্যারিফাই করবে যার জন্য কমপক্ষে ২ সপ্তাহ সময়ের প্রয়োজন।
এর পরবর্তীতে অন্যান্য তথ্য যেমন ব্যবসার বিবরণ, ব্যবসায়ীক ওয়েবসাইট, ওয়ার্কিং আওয়ার, স্ট্রিট নেম, বিজনেস ক্যাটাগরি ইত্যাদি যথাযথভাবে পূরণ করে ফেলুন। একবার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই আপনার অ্যাকাউন্ট লোকাল এসইও’র জন্য প্রস্তুত।
লোকাল লিস্টিং করা:
বিগত কয়েক বছর গুগল আগের যে কোন বছরের চাইতে ওয়েবসাইট/ব্যবসার রেপুটেশনের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। রেপুটেশন এখন র্যাংকিংয়ের জন্য অনেক বড় একটি ফ্যাক্টর। অন্তত বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান তাই বলে। লোকাল লিষ্টিং করার অর্থ হলো গুগলকে সিগন্যাল দেওয়া যে আপনার ব্যবসাটি রেপুটেড এবং বিশ্বস্ত একটি প্রতিষ্ঠান।
তাই, আপনি যদি চান যে আপনার ব্যবসা লোকাল এসইওতে র্যাংক করুক, তাহলে আপনাকে অবশ্যই Yelp, Citysearch, Manta, YellowPages এর মত ওয়েবসাইটগুলিতে আপনার প্রতিষ্ঠানকে লিষ্টিং করাতে হবে।
নাম ঠিকানা ইত্যাদি প্রদানে সতর্ক থাকা:
গুগল মাই বিজনেস অ্যাকাউন্ট তৈরী করা এবং লোকাল লিষ্টিং তৈরী করার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো আপনার ব্যবসায়িক তথ্যাদি প্রতিটি ওয়েবসাইটে যেন একই থাকে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। সকল ওয়েবসাইটে একই তথ্য থাকার ফলে গুগলের চোখে আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই এই কাজটিতে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
মনে রাখতে হবে গুগল একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। যার কারণে আপনার তথ্য অবশ্যই একটির অপরটির সাথে ১০০% মিলতে হবে। উদাহরণ স্বরুপ আপনি যদি গুগল মাই বিজনেসে আপনার প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে লিমিটেড যোগ করে থাকেন, তাহলে খেয়াল রাখবেন অন্যান্য যে সকল জায়গায় আপনি প্রতিষ্ঠানের নাম লিখবেন সেখানেও যেন লিমিটেড কথাটি থাকে।
রিভিউ পাওয়া:
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকাল এসইও’র জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ র্যাংকিং ফ্যাক্টরগুলির মধ্যে কাস্টমার রিভিউ এর স্থান ২য়। ৮৮% এর বেশি কনজিউমার অন্য কনজিউমার এর রিভিউ পড়ার পরই সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য বা সেবা ক্রয় করবেন।
রিভিউ পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আপনার কাস্টমারদেরকে ভদ্রতার সহিত রিভিউ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা। তবে অবশ্যই সেটি সার্ভিস দেওয়ার পূর্বে নয়। প্রথমে সার্ভিস দিন, এরপর যদি সার্ভিসটি তার ভালো লেগে থাকে, তাহলে তাকে একটি সুন্দর রিভিউ প্রদানের জন্য অনুরোধ করুন।
ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড বৃদ্ধি করা:
এটি হচ্ছে লোকাল এসইও’র সেই গুরুতপূর্ণ ফ্যাক্টর যেটিকে বেশিরভাগ মানুষই এড়িয়ে যান। ভুলে গেলে চলবে না সার্চ ইঞ্জিন সব সময় ভিজিটরদের সবচেয়ে ভালো ওয়েবসাইটকেই র্যাংকে দেখাতে চায়। আপনার ওয়েবসাইটে যত তথ্যই থাকুক না কেন, লোডিং স্পীড বেশি হলো ভিজিটর ওয়েবপেজের প্রথম লাইন লোড হওয়ার আগেই ব্রাউজারের ট্যাব ক্লোজ করে দেবে।
আনবাউন্স এর একটি আর্টিকেলে বলা হয়েছে যে প্রতি ১০০ জন ভিজিটরের মধ্যে ৭৬ জন ভিজিটরের নিকট একটি ওয়েবসাইটের সবচেয়ে অপ্রিয় বিষয় হলো এর অতিরিক্ত লোডিং স্পীড।
লোকাল এসইও টিপস্ নিয়ে আলোচনা আসলে এত অল্প পরিসরে শেষ করা সম্ভব নয়। কারণ লোকাল এসইও হাতেগোনা কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। উপরের বিষয়গুলো ছাড়াও লোকাল কি-ওয়ার্ড অপটিমাইজেশন, ওয়েবসাইটের লোকাল সাইন বসানো, লোকাল পেজ তৈরী করার মত বিষয়গুলি গুরুত্ব রাখে। আর এই সবগুলি কাজের সঠিক সমষ্টিই লোকাল বিজনেসকে সফলতা এনে দিতে পারে। আজ এ পর্যন্তই লোকাল এসইও সম্পর্কিত আপনাদের যে কোন প্রশ্ন অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
Ishak Mahmud says
ধন্যবাদ, লোকাল ব্যবসাকে এসইও করার মাধ্যমে র্যাংকে আনার টেকটিকগুলো সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখার জন্য।