একটি সম্পর্কের মধ্যে গার্লফ্রেন্ডের করা প্রতারণাই হল সর্ব নিকৃষ্ট কাজ যা তার বয়ফ্রেন্ডকে চরমভাবে আঘাত করতে সক্ষম। আপনার গার্লফ্রেন্ডের কারণে আপনি যতভাবে যন্ত্রণা পেতে পারেন, তার মধ্যে নিষ্ঠুরতম আচরণ হল এই প্রতারণা। বিশেষ করে এটি তখন আরো বেশি কষ্টদায়ক, যখন আপনি তার প্রতি অনেক বেশি আস্থা রাখেন।
মেয়েদের সম্পর্কে প্রচলিত একটি প্রবাদ রয়েছে যে, তারা কখনো প্রতারণা করে না। কিন্তু আজকের যুগে কথাটিকে আর কোনভাবেই সত্য বলা যায় না। আজকের দিনের চরম বাস্তবতা এটাই যে, মেয়েরাও তাদের বয়ফ্রেন্ডের সাথে প্রতারণা করে থাকে। পার্থক্য শুধু এটাই যে, তার তুলনামূলক সংখ্যাটা ছেলেদের চাইতে অনেক কম।
অপরদিকে প্রত্যেকটি মেয়েই যে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে প্রতারণা করে এমন ভাবাটাও ভুল। কিছু কিছু সময় ছেলেদের মনে কোন কারণ ছাড়াই সন্দেহের সৃষ্টি হয় যার বাস্তবে কোন ভিত্তিই থাকে না। যেমন, গার্লফ্রেন্ডকে অন্য কোনও ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলেই সন্দেহ করে বসার মতো বাতিক আছে কিছু ছেলের। অহেতুক সন্দেহ না করে জেনে নিন আপনার গার্লফ্রেন্ডকে অন্য ছেলেদের সঙ্গে কথা বলতে বারণ করবেন কিভাবে।
যদি আপনার সাথে আপনার গার্লফ্রেন্ডের সম্পর্ক অনেক দিনের হয়ে থাকে, তাহলে আমার মতে আপনার মনের সন্দেহ বা খুঁতখুতি নিয়ে সরাসরি তার সাথে কথা বলাটাই ভালো। যদি আপনি কোন কারণে সেটি করতে না চান, তাহলে জেনে নিন যেসব লণে বুঝবেন আপনার গার্লফ্রেন্ড আপনার সঙ্গে প্রতারণা করছে।
আকষ্মিকভাবে সময় পরিবর্তন:
স্বাভাবিকভাবেই মানুষের কাজ পরিবর্তন হয়, মানুষও পরিবর্তিত হয়, এমনকি একে অন্যের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিও পরিবর্তন হয়। কিন্তু এই সব পরিবর্তন যদি হঠাৎ একসাথে হওয়া শুরু করে, তবে অবশ্যই এটা চিন্তা করার মত ব্যাপার।
হতে পারে আপনার গার্লফ্রেন্ডের কর্মস্থলের কাজের সময়ের ক্ষেত্রে সত্যিই কোন পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু যদি সেটা না হয়, তাহলে আপনি কি করবেন? হ্যাঁ, এই মুহুর্তে আপনি যেমনটা ভাবছেন, সবাই ঠিক একই ভাবনায় পড়ে যায়। যদি এমনটা ঘটেই থাকে, তাহলে আপনি মনের যন্ত্রণায় ভুগতে শুরু করবেন, এটাই স্বাভাবিক। আগে জেনে নিন অসম্ভব মানসিক চাপে পড়ে গেলে আপনার কি করা উচিৎ। তারপর, মাথা ঠান্ডা রেখে খারাপ কিছু ঘটার পূর্বেই ভালোভাবে খোঁজ-খবর নিন।
ফোনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা:
গোটা পৃথিবী জুড়েই ইন্টারনেটে রাজত্ব আর তারই ধারাবাহিকতায় আপনার গার্লফ্রেন্ডও তার ফোন ব্যবহার করে বন্ধু বা পরিচিত মানুষদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবে সেটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু আপনি যদি লক্ষ্য করেন যে, সে আপনার সাথে থাকাকালীন সময়েও আগের তুলনায় অনেক বেশি সময় ধরে ফোন ব্যবহার করছে, তাহলে বুঝতে হবে হয়তো ফোনের অপর প্রান্তে এমন কোন ব্যক্তি রয়েছে যে তার কাছে আপনার চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
একইসাথে ফোন ব্যবহারের সময় তার মুখের অভিব্যক্তিগুলোর প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখুন। আপনার গার্লফ্রেন্ড কি ফোনের ম্যাসেজ পড়ার সময় প্রতিনিয়ত হাসছে? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়ে থাকে, তাহলে আমার মনে হয় কি ঘটছে সেটা বোঝার জন্য আপনি যথেষ্ট বুদ্ধিমান।
আপনার অবস্থান সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠা:
আপনার গার্লফ্রেন্ড কি আপনার প্রতি ইদানিং খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে? আপনার কাছে বিষয়টি ভালো লাগার কারণ বলে মনে হলেও এর পেছনের কারণটি আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। যদি এমনটি ঘটে থাকে, তাহলে অবশ্যই বিষয়টিকে আমলে নিয়ে এর পেছনে কোন কারণ রয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা উচিৎ।
যদি সে সত্যিই আপনার প্রতি যত্নবান হওয়ার মনোভাব নিয়ে এমনটা করে থাকে, তাহলে সেটা খুবই ভালো কথা। কিন্তু যদি আপনার বর্তমান অবস্থান বা আপনি কখন বাসায় আসবেন এমন প্রশ্নগুলির পেছনের কারণ যদি হয় আপনার হাতে ধরা পড়া থেকে রক্ষা পাওয়ার কৌশল, তাহলে সেটা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক।
সম্পর্কে কলহ বৃদ্ধি পাওয়া:
আপনার গার্লফ্রেন্ড যদি প্রতিনিয়ত কারণে অকারণে আপনার সাথে ঝগড়া করে বা অশান্তির সৃষ্টি করে, তার মনে হয়তো এই যে সে আপনাকে জানাতে চায় সে আর এই সম্পর্কে আগ্রহী নয়।
যেহেতু সে নিজের উপর দোষ নিয়ে সরাসরি সম্পর্ক থেকে বের হতে পারছে না, তাই সে আপনার সাথে ঝগড়া বা অশান্তি করছে যাতে আপনি নিজেই সম্পর্ক থেকে দুরে সরে দাড়ান।
আপনাকে বাইরে সময় অতিবাহিত করার জন্য উৎসাহিত করা:
আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে সময় কাটাবেন, এটা খুবই ভালো কথা। কিন্তু আমার মনে হয় না যে, অধিকাংশ মেয়েরা এটি পছন্দ করে থাকে। অধিকাংশ গার্লফ্রেন্ডরাই চান না যে তাদের বয়ফ্রেন্ড অবসর সময়ে তার সাথে সময় অতিবাহিত করার পরিবর্তে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাক।
আপনার গার্লফ্রেন্ড যদি আপনাকে এমনটা করার জন্য জোর করে বা উৎসাহিত করে, তার মানে হলো পরোক্ষভাবে সেও আপনার কাছ থেকে অন্য কারো সাথে সময় অতিবাহিত করার অনুমতিটা নিয়ে নিচ্ছে।
ফোন আপনার আয়ত্বের বাইরে রাখা:
কারো অনুমতি ছাড়া তার ফোন ব্যবহার করাকে অবশ্যই ভালো কোন অভ্যাস বলা যায় না। কিন্তু যদি দেখা যায় যে, সে ইদানিং তার ফোন এবং প্রাইভেসির ব্যাপারে অতিরিক্ত সচেতন হয়ে উঠছে, তাহলে অবশ্যই আপনাদের সম্পর্কের মধ্যে ভুল কিছু ঘটে চলেছে।
অতিরিক্ত সচেতন বলতে আমি বোঝাচ্ছি ফোনের অ্যাপ পাসওয়ার্ড প্রোটেক্ট করে রাখা, এমন কোন স্থানে ফোন না রাখা যেখান থেকে আপনি ফোনটি সহজে ব্যবহার করতে না পারেন, ইত্যাদি। যদি সে সত্যিই এমনটা করে থাকে, তাহলে আপনার তাকে এর পেছনের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ।
প্রতিটি সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে সর্বাগ্রে প্রয়োজন বিশ্বাসের। কিন্তু এটাও সত্য যে বিশ্বাস করা ছাড়া বিশ্বাস ভাঙ্গা সম্ভব নয়। জেনে নিন আপনার ভালবাসায় বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে কিভাবে আবার সেই বিশ্বাসকে জোড়া দেবেন।
তবে, আপনার অবশ্যই ততক্ষণ এমন কিছু ভাবা উচিত নয়, যতক্ষণ না আপনার আশে পাশে উপরে বর্ণিত লক্ষণগুলির মত অস্বাভাবিক কোন কিছু ঘটে। আর যদিও বা ঘটে, তাহলে প্রথমেই তার প্রতি সন্দেহ না করে ভালোভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে নিশ্চিত হতে পারলে তারপরেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ।
Leave a Reply