মোবাইল ডিভাইসে উন্নত ক্যামেরা সুবিধা থাকার কারণে ভিডিও রেকডিং করা এখন খুবই সহজ। কিন্তু ভিডিও এডিটিং করাটা ততটা সহজ এখনো হয়ে ওঠেনি। সত্যি বলতে কি, ভিডিও এডিটিং শেখা কিছুটা কমপ্লিকেটেড।
ঝামেলা এড়াতে আপনি যদি মনে করেন যে, এডিটিং করার দরকার নেই, ভিডিও শ্যুট করে সরাসরি আপলোড করে দেবো, তবে ভুল করবেন। আসলে, এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে যেগুলোর জন্যে আপনার ভিডিও এডিটিং শেখা উচিৎ।
যেসব কারণে আপনার ভিডিও এডিটিং শেখা উচিৎ
ভিডিও দ্রুত সাড়া ফেলে
ছবি যেখানে মানুষের হৃদয়ে হাজারো কথা বলে, ভিডিও সেখানে লক্ষ কথা বলতে সক্ষম। ভিডিও যে কারো আবেগ, অনুভূতিতে দ্রুত সাড়া ফেলতে পারে। এটি মানুষকে খুব সহজেই হাসাতে পারে, কাঁদাতে পারে, এমনকি রাগাতেও পারে।
আপনার রেকর্ড করা ভিডিও অন্যদের হৃদয়ে কেমন সাড়া ফেলবে, এটা নির্ভর করবে আপনার এডিটিং টেকনিকের উপর। একটা সাধারণ ভিডিওকে আপনি এডিটিং করে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন এবং কেড়ে নিতে পারবেন মানুষের ভাললাগা, ভালবাসার অনুভূতি।
ইউটিউব থেকে ইনকাম
নানা রকম ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবের মাধ্যমে বাইরের দেশের মানুষ বহু আগে থেকেই মোটা অংকের আয় করছেন। এমন একজন আছেন ইউটিউব থেকে যার প্রতি মাসের ইনকাম ৯ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। এ রকম আরো বহু মানুষ আছে আমাদের পাশের দেশ ইন্ডিয়াসহ অন্যান্য দেশে, যাদের ইউটিউবের ইনকামের পরিমাণ আপনার চোখ কপালে তুলে দেবে।
আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব থেকে ইনকাম করছেন আমাদের দেশের তরুণরাও। নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে ইউটিউবে এখন অসংখ্য বাংলা চ্যানেল রয়েছে। তাজা খবর থেকে শুরু করে, ফানি ভিডিও, শিক্ষণীয়, প্যারানর্মাল, এমনকি মহাকাশ নিয়েও বাংলায় প্রচুর ইউটিউব চ্যানেল গড়ে উঠেছে।
ভিডিও এডিটিং শিখে আপনিও ইউটিউবে চ্যানেল খুলে নিতে পারেন। অন্যান্যদের মতো ভিডিও আপলোড করে ভিউ বাড়িয়ে ইনকাম শুরু করতে পারেন। এডিটিং শিখে নিয়ে ইউটিউবের জন্যে ভিডিও তৈরি করার সেরা ১০টি আইডিয়া থেকে যে কোনটি নিয়ে শুরু করে দিতে পারেন।
ভিডিও গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং টুল
সঠিক কৌশল আর এডিটিং সিক্রেট দিয়ে আপনি খুব সহজেই যে কাউকে যে কোন মেসেজ দিয়ে দিতে পারবেন। হতে পারে, এটা কোন সচেতনতা মূলক মেসেজ, হতে পারে আপনার আপকামিং কোন ইভেন্টের অগ্রিম মেসেজ। ম্যাচিং মিউজিকসহ ভিডিওর মতো পাওয়ারফুল মার্কেটিং টুল খুব কমই আছে।
মানুষ এখন শুধু টিভিতেই প্রমোশনাল ভিডিও দেখে না, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব ও মোবাইলে ভিডিও দেখে অভ্যস্ত। যারফলে, ছোট বড় কোম্পানীগুলো এখন তাদের পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্যে টিভির উপর নির্ভরশীল নয়। বরং, প্রপেশনাল ভিডিও এডিটরদের দিয়ে প্রমোশনাল ভিডিও বানিয়ে ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করছে।
আপনি যদি ভাল মানের ভিডিও এডিটিং করতে পারেন, তবে বিভিন্ন কোম্পানীর প্রোডাক্ট মার্কেটিং ভিডিও তৈরি করে আয় করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন অ্যাডভার্টাইজিং হাউজে উচ্চ বেতনে চাকরি পেতে পারেন, গড়তে পারেন দারুণ ক্যারিয়ার।
ভিডিও এডিটিং শেখা কঠিন কিছু নয়
প্রযুক্তির অগ্রগতি ও সফট্ওয়্যারের সহজ লভ্যতার কারণে ভিডিও এডিটিং শেখা মোটেই কঠিন কোন ব্যাপার নয়। চাইলে আপনি ঘরে বসে নিজে নিজেই ভিডিও এডিটিং শিখতে পারেন। এর জন্যে আপনার দরকার হবে একটি ভাল মানের ভিডিও এডিটিং ল্যাপটপ যা আপনাকে দেবে নিজের মতো নিজের সময়ে এডিটিং শেখার সুবিধা। সেই সাথে আপনার প্রয়োজন হবে ভাল মানের ভিডিও এডিটিং সফট্ওয়্যার। এই দুই জিনিস থাকলে আর চৌকান্না হলে আপনার জন্যে ভিডিও এডিটিং শেখা কোন ব্যাপারই না।
শেষ কথা
ভিডিও এডিটিং এখন অনেক সন্মানজনক ক্যারিয়ার। আপনি যদি একজন ভাল মানের ভিডিও এডিটর হতে পারেন, তবে আপনার জন্যে যেমন কোথাও চাকরির অভাব হবে না, আবার আপনি নিজেও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আয় করতে পারবেন। কাজেই, অলস সময়টাকে কাজে লাগিয়ে দিন, অহেতুক নষ্ট না করে ভিডিও এডিটিং শিখে নিন।
Leave a Reply