ভেবে দেখুন তো! আপনি একটি পার্টিতে রয়েছেন এবং সেখানে একটি সুন্দরী মেয়ের সাথে আপনার পরিচয় হলো। আপনারা দুজনে সন্ধ্যাটা একসাথে গল্প করে পার করলেন আর আশ্চর্যজনকভাবে আপনি দেখলেন আপনাদের মধ্যে রয়েছে অদ্ভুত কিছু মিল। আপনি তাকে মনে মনে পছন্দ করে ফেললেন এবং আপনার মনের কথা তাকে জানাবেন বলে ঠিক করলেন। কিন্তু সমস্যাটা বাধলো তখনই যখন আপনার খেয়াল হলো যে মেয়েটি সিঙ্গেল কিনা তাতো আপনি জানেনই না।
যদিও মেয়েদের কিছু বৈশিষ্টের দিকে লক্ষ্য করলে আপনি এ ব্যাপারে কিছুটা ধারণা পেতে পারেন। যেমন, খেয়াল করে দেখতে পারেন মেয়েটির হাতে বিয়ের আংটি রয়েছে কিনা বা মেয়েটির কথা বার্তায় তার কারো সাথে সম্পর্ক রয়েছে তা প্রকাশ করে কিনা। কিন্তু তা থেকে পুরোটা নিশ্চিত হওয়া যাবে এমনটি বলা সম্ভব নয়।
আবার কোন মেয়েকে “আচ্ছা শুনুন, আপনি কি সিঙ্গেল?” এমনটা জিজ্ঞাসা করাটাও শোভনীয় নয়। আবার আপনার যদি এমন কোন বন্ধু না থাকে, যে ওই মেয়েটিকে আগে থেকেই চেনে, তাহলে এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা আপনার জন্য কষ্টকর।
আপনাকে মনে রাখতে হবে যে একটি মেয়ে আপনার সাথে সুন্দর করে কথা বলছে। তার মানে এই নয় যে সে আপনার প্রেমে পড়ে গিয়েছে। হতে পারে সে আপনাকে তার একজন ভালো বন্ধুর স্থান দিয়েছে। তাই মেয়েটি সিঙ্গেল কিনা বা সে আপনার ব্যাপারে আগ্রহী কিনা তা নিশ্চিত না করে যদি তাকে প্রস্তাব করে বসেন, তাহলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আপনি এক্ষেত্রে ওই মেয়েটিকে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে তো পাবেনই না বরং একজন ভালো বন্ধুও হারাবেন। তাই চলুন জেনে নেই যে, কিভাবে একটি মেয়ে সিঙ্গেল কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়।
ফোনের ব্যবহার:
পরিবার এবং আপনজনদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা ছাড়াও মেয়েরা প্রধানত যে দুইটি কারণে তাদের ফোন ব্যবহার করে তা হলো বন্ধু-বান্ধব বা বয়ফ্রেন্ডের সাথে বেশিরভাগ সময় যুক্ত থাকা। সাধারণত বেশির ভাগ বয়ফ্রেন্ডরাই কিছু সময় পর পরই তাদের গার্লফ্রেন্ডের খোঁজ খবর নিয়ে থাকে আর মেয়েরা কখনোই তার প্রিয় মানুষের সাথে কথা বলা বা যোগাযোগ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না।
তাই যদি আপনি দেখেন যে মেয়েটি তার ফোন ঘন ঘন চেক করছে না বা তার ফোনটি কথা বলার সময় সাইলেন্ট করে রাখছে, তাহলে মেয়েটির সিঙ্গেল হওয়ার সম্ভবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।
অন্যান্য ছেলেদের সাথে মেশার প্রবণতা:
সামাজিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকেই সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রেও ব্যপারটি তার ব্যতিক্রম নয়। স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে একটি মেয়ের বিভিন্ন ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক তৈরী হতে দেখা যায়।
আবার অনেক মেয়ে এমন রয়েছে, যারা প্রয়োজন ছাড়া কোন ছেলের সাথে কথা বলা বা মেলা মেশা করা পছন্দ করেন না। অপরদিকে এর মানে এটিও হতে পারে যে মেয়েটির অন্য কারো সাথে সম্পর্ক রয়েছে এবং সে তার বয়ফ্রেন্ডের ইচ্ছার সম্মান রেখে এমন ছেলেদের সাথে দুরত্ব বজায় রাখছে, যারা তার বন্ধু নয়।
পোশাক পরিধান:
একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো, আপনি যার সম্পর্কে ভাবছেন, সে কেমন পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করেছে। যদি দেখেন যে সে একেবারেই স্বাভাবিক পোশাক পরে আছে, এমনকি কোন মেকআপ বা হেয়ার ষ্টাইলও করেনি, তাহলে সম্ভবত সে চায় না যে আপনি তার প্রতি আকৃষ্ট হন। অথবা সে এমন মেয়েদের মধ্যে পড়ে যারা লোকজনের মধ্যেও নিজেদের কেমন দেখা যায় তা নিয়ে খুব একটা ভাবে না।
এর বিপরীত দিকে যদি দেখেন যে, সে খুব সুন্দরভাবে গোছগাছ করেছে বা নিজেকে সুন্দর দেখানোর সম্ভবপর প্রয়াস গুলো করেছে, তাহলে আপনি ভেবে নিন যে, সে শুধু সিঙ্গেলই নয় বরং সে এমন কাউকে খুঁজছে যার সাথে সে সম্পর্ক শুরু করতে পারে।
সোস্যাল মিডিয়ার ব্যবহার:
একটি মেয়ের রিলেশনশীপ ষ্ট্যাটাস সম্পর্কে জানার সবচেয়ে সহজ উপায়টি হচ্ছে তার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম অথবা টুইটার প্রোফাইল চেক করা। যদি কেউ কোন সম্পর্কে জড়িয়ে না থাকে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তারা তাদের প্রোফাইলে রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস সিঙ্গেল রাখে। যদি কোন কারণে রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস লুকানো থাকে, তাহলে আগে থেকেই ভেবে বসবেন না যে, তার কারো সাথে সম্পর্ক আছে।
রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস লুকিয়ে রাখারও ব্যক্তিগত অনেক কারণ থাকতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি তার পোষ্ট করা ছবিগুলো দেখতে থাকুন আর লক্ষ্য করুন যে তার পোস্ট করা ছবিগুলোর মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি আছে কিনা যার সাথে পোস্ট করা ছবির সংখ্যা তার অন্যান্য বন্ধুদের তুলনায় বেশি।
এবার লক্ষ্য করুন যে, ঐ ব্যক্তির সাথে তোলা ছবিগুলোতে তার অন্যান্য বন্ধুরা কেমন কমেন্ট করছে। যদি দেখেন যে বেশিরভাগ কমেন্টই “তাদের দুজনকে একসাথে কতটা সুন্দর দেখায় বা তাদের সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হোক” এমন হয়, তবে বেশিরভাগ সম্ভবনা এটাই যে মেয়েটি সিঙ্গেল নয়।
বন্ধুদের সাথে মেলামেশা:
যদি কোন মেয়ের বয়ফ্রেন্ড থাকে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সে তার বন্ধু এবং বয়ফ্রেন্ডের সাথে কাটানোর জন্য সময় ভাগাভাগি করে নেয়। যদি দেখা যায় যে সে শুধুই তার মেয়ে বন্ধুদের সাথে সময় দিচ্ছে, তাহলে এটি ভাবা যেতেই পারে যে, সে এখনো সিঙ্গেল। কিন্তু এর মানে এটিও হতে পারে যে, তার বয়ফ্রেন্ড হয়তো কাজের প্রয়োজনে বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকে বা তার সাথে অনেক বেশি সময় রয়েছে বন্ধুদের সাথে মজা করার জন্য।
ব্যক্তিগত জীবনটা একা একা পার করা কারোর জন্যই সুখকর নয়। আমাদের সবারই এমন কাউকে প্রয়োজন হয়, যার সাথে আমরা আমাদের একান্ত ব্যক্তিগত আবেগগুলি ভাগাভাগি করে নিতে পারি। আর যখন কারো জন্যে আমাদের মনে সেই ভালোবাসার সৃষ্টি হয়, তখন আমরা তাকে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠি।
কিন্তু কাউকে পাওয়ার চেষ্টা করার আগে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোকেও সমান মর্যাদা দেওয়া অনেক জরুরী একটি বিষয়। যদি কোন মেয়ে সিঙ্গেল না হয়, তাহলে অবশ্যই তার সম্পর্কের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তার সাথে সৌজন্যমূলক দূরত্ব ধরে রাখাটাই ভালো, আবার সে সিঙ্গেল হলেই যে আপনার প্রতি আগ্রহী হবেন, এমনটা হওয়াটাও জরুরী নয়। তবে যদি আপনি নিশ্চিত হন যে সে সিঙ্গেল, তবে আপনি আপনার ভালো দিকগুলি দিয়ে অবশ্যই চেষ্টা করে দেখতেই পারেন।
ali says
আমি সিঙ্গেল বয়, একটি সিঙ্গেল গার্ল এর অপেক্ষায় আছি।