এখনকার যুগে ভিডিও চ্যাটিং খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। আমরা সবাই মোটামোটি কম বেশি চাকরি বা ব্যবসার খাতিরে বা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ভিডিও চ্যাট করে থাকি। আর এর জন্য ইমো, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবারসহ আরও বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে থাকি। এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব সেরা ৫টি ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপস নিয়ে।
যদিও ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপস আমরা সবাই কম বেশি ব্যবহার করে থাকি, তবুও এর ব্যাপারে লেখার উদ্দেশ্য হল, আপনি যাতে সহজেই আপনার ব্যবহার করা অ্যাপের সাথে অন্য অ্যাপগুলো তুলনা করতে পারেন। তাছাড়াও, ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেই কোন একটা অ্যাপ বহুদিন ব্যবহার করলে এর ইন্টারফেস আমার কাছে বোরিং লাগতে শুরু করে। তখন অন্য একটা অ্যাপ খোঁজার চেষ্টা করি, যা ফাংশনের দিক দিয়ে মোটামোটি সেইম। কিন্তু, আলাদা ইউজার এক্সপেরিয়ান্স দিবে।
৫টি ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপস
যাই হোক, যে কোন কারণেই হোক, আপনার যদি বর্তমানে ব্যবহার করতে থাকা ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপটা সুইচ করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে আজকের আর্টিকেলটা আপনার জন্যেই লেখা। এই আর্টিকেল থেকে খুব সহজেই ৫টি ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপস সম্পর্কে একটা ওভারভিউ পেয়ে যাবেন বলে আশা করছি।
১) ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জার
ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারের নাম জানি না, এমন হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নাই বললেই চলে। তরুণ-তরুণীদের কাছে জনপ্রিয়তার দিক থেকে ম্যাসেঞ্জারই সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপ। আর অন্যান্য ভিডিও চ্যাটিং আপের চেয়ে ম্যাসেঞ্জারের সুবিধা হল, আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে অন্য যে কোন সোশ্যাল প্লাটফর্ম ইউজারের চেয়ে ফেসবুক ইউজারের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই, ম্যাসেঞ্জার ইউজার করলে আপনি মোটামোটি সবার সাথেই ভিডিও চ্যাট করতে পারবেন, অন্য আর কোন ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপ ব্যবহার ছাড়াই।
অন্যান্য অ্যাপ ব্যবহার করতে গেলে হয়তো দেখবেন যে, যার সাথে চ্যাট করতে চাচ্ছেন, তিনি অ্যাপটা ব্যবহার করেন না। কিন্তু, ম্যাসেঞ্জারের ক্ষেত্রে এমন হবার সম্ভাবনা তুলনামূলক কম। ছাপ্পান্ন লক্ষেরও বেশি ইউজারের ব্যবহার করা এই অ্যাপটি ইন্সটল করতে চাইলে ভিজিট করতে পারেন নিচের বাটনটিতে।
২) গুগোল ডুয়ো
ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারের সমান জনপ্রিয় না হলেও গুগোল হ্যাংআউটসও কিন্তু কম জনপ্রিয় নয়। আর গুগোল হ্যাংআউটস ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিস্টেমে ডিফল্টভাবে ইন্সটল করাই থাকে। ফলে, গুগোল হ্যাংআউটস ব্যবহার করলে, অন্য অ্যাপ ব্যবহার করে স্টোরেজের উপরে বাড়তি প্রেশার ফেলার প্রয়োজন পড়ে না।
তবে, এক্ষেত্রে অন্য একটি অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন। তা হল, গুগোল হ্যাংআউটস বিজনেস পারপাসে রেলিগেট হয়ে যেতে পারে। কারণ, গুগোল এই মুহুর্তে গুগোল ডুয়ো নামে অন্য আরেকটি অসাধারণ ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপকে প্রাধান্য দিচ্ছে। গুগোল ডুয়ো গুগোলেরই আরেকটি ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপস, যা ওয়ান টু ওয়ান ভিডিও চ্যাটিং-এর জন্য খুবই ভাল। গুগোল ডুয়ো ইন্সটল করতে চাইলে ক্লিক করতে পারেন নিচের এই বাটনটিতে।
৩) ইমো
জনপ্রিয়তা বা স্টোরেজের চিন্তা থেকে বেরিয়ে যদি ইন্টারনেট কনেকশন নিয়ে টেনশনে থাকেন, তাহলে আমি বলব ইমো আপনার জন্য সবচেয়ে ভাল চয়েস। দুর্বল ইন্টারনেট কানেকশনের ক্ষেত্রে ইমোর ইউজার রিভিউই সবচেয়ে ভাল। আপনার ২জি ইন্টারনেট কানেকশনেও সাপোর্ট দিতে পারবে ইমো।
আর, ইমোর অডিও সিগন্যালও অন্যান্য বেশিরভাগ ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপের তুলনায় বেশি ক্লিয়ার। আর যদি সমস্যার কথা ভাবেন, তাহলে, অন্যান্য অ্যাপের চেয়ে ইমোতে বিজ্ঞাপণ একটু বেশি ফেইস করতে হতে পারে। প্রায় সাড়ে সাতচল্লিশ লক্ষ ইউজারের ব্যবহার করা এই অ্যাপটি ইন্সটল করতে চাইলে ক্লিক করতে পারেন ছবির নিচের নীল বাটনটিতে।
৪) জাস’টক
হ্যাংআউটস, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার, ইমো এর মত একেবারে মেইনস্ট্রিম অ্যাপ ব্যবহার না করে, একটু নতুন কিছু যদি ব্যবহার করতে চান, তাহলে আমার মনে হয়, জাস’টক আপনার জন্য খুব ভাল একটা অপশন হতে পারে। এই অ্যাপে আপনি ইচ্ছামত থিম ইউজ করার পাশাপাশি, ভিডিও চ্যাটিং-এর সময় ডুডল করতে পারবেন। যা আপনাকে আলাদা ভিডিও চ্যাটিং এক্সপেরিয়ান্স দিবে।
আর অসুবিধার কথা বলতে হলে, অন্যান্য মেইনস্ট্রিম অ্যাপের মত জাস’টক জনপ্রিয় না হওয়ায়, হয়তো যার সাথে কথা বলতে চান, তাদের সবার কাছে জাস’টক পাবেন না, এটাই স্বাভাবিক হবে। প্রায় দুইলক্ষ ইউজার এবং ৪.৬ রেটিং-এর এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে চাইলে গুগল প্লে-স্টোরে চলে যেতে পারেন নিচের লিংকে ক্লিক করে।
৫) স্কাইপ
অত্যন্ত পুরাতন এবং যথেষ্ট জনপ্রিয় ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপ স্কাইপ। যদি গ্রুপ ভিডিও চ্যাটের কথা ভাবেন, তাহলে বেশির ভাগ ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপের চেয়েই স্কাইপকে বেটার অপশন বলব। স্কাইপে এক সাথে ২৫ জন পর্যন্ত ভিডিও চ্যাট করতে পারেন। সাথে স্ক্রিন শেয়ারিং-সহ আরও অনেক সুবিধা আছে স্কাইপে।
আর স্কাইপের ব্যবহারকারিও এককোটির উপরে। স্কাইপের অসুবিধার ব্যাপারে বলা যেতে পারে, ওয়ান টু ওয়ান ভিডিও চ্যাটে স্কাইপের চেয়েও অপ্টিমাইজ আরও কিছু ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপ থাকায়, অনেক ইউজারই এটা ব্যবহার করতে চান না। যাই হোক, স্কাইপ ডাউনলোড করতে চাইলে ক্লিক করতে পারেন নিচের বাটনটিতে এবং ডাউনলোড করতে পারেন প্লে-স্টোর থেকে।
তো, এই ছিল আমাদের আজকের অ্যান্ড্রয়েডের সেরা ৫টি ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপস নিয়ে আলোচনা। আসলে, যেগুলো নিয়ে বললাম, সেগুলো ছাড়াও বেশ কয়েকটি ভাল ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপস আছে। যেমন, স্কাইপ বা হোয়াটস অ্যাপ। তবে, পার্টিকুলার কিছু ক্ষেত্র চিন্তা করলে, যেমনঃ জনপ্রিয়তা বা স্টোরেজ সেইভিং বা দুর্বল নেটওয়ার্কেও ভাল পার্ফরমেন্সের মত ব্যাপারগুলো চিন্তা করলে, আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে এই অ্যাপগুলোর স্পেশালিটি আছে। তার জন্যেই এগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম।
Leave a Reply