গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যেই আপনার কাছে মোটামুটি সহজ হয়ে উঠেছে, তাই না? কারণ, আপনি এখন জানেন এই সোনার হরিণটিকে ধরতে কিন্তু বনে বনে ঘুরার প্রয়োজন নেই। সঠিক উপায় অবলম্বন করে ঘরে বসে আবেদন করলেই মিলে যাবে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট, খুলে যাবে ইনকামের একটি অসাধারণ রাস্তা। এরপর শুধু আর্টিকেল লিখে যান আর হালকা পাতলা এসইও করুন। ১ম পর্ব পড়তে এখানে, ২য় পর্ব পড়তে এখানে এবং ৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট – ১০০% গ্যারান্টি
এ লেখাটার চতুর্থ এবং শেষ পর্ব চলছে। আপনি নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে প্রতিটি পর্বেই ১০০% গ্যারান্টি কথাটা রয়েছে। এটা এ কারণে যে, আপনাকে শতভাগ নিশ্চিত করা যে এ পর্বগুলোতে যে গাইড লাইন দেয়া হয়েছে সে গাইড লাইন অনুযায়ী আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে সাজিয়ে নিয়ম মোতাবেক আপ্লাই করলেই অ্যাডসেন্স অ্যাকাউট পেয়ে যাবেন, এতে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নেই। চলুন দেখে নেয়া যাক পরবর্তী পদক্ষেপগুলো-
- গুগল অ্যাডসেন্স থেকে পিটির ইনকাম মাসে ৪ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা, আপনার?
- ইউটিউব থেকে তিনি আয় করেন মাসে ৯ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা, আপনি?
৬. সার্চ ইঞ্জিনে আপনার ওয়েবসাইট সাবমিট করুন
ওয়েবের বিশাল ভান্ডার থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার একমাত্র উপায় সার্চ ইঞ্জিন। ওয়েবে অনেক সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে। কিন্তু আমাদের টার্গেট করতে হবে শুধু মাত্র দুইটা সার্চ ইঞ্জিনকে আর সে দুটো হল গুগল সার্চ ইঞ্জিন এবং ইয়াহু বা বিং সার্চ ইঞ্জিন। আপনি যখন সার্চ ইঞ্জিনে আপনার ওয়েবসাইটা সাবমিট করবেন তখন গুগল জানবে যে, আপনি জানেন কিভাবে আপনার কন্টেন্টগুলোকে মানুষের সামনে তুলে ধরতে হয়। অর্থাৎ, আপনি যে জেনে-শুনে-শিখেই এসেছেন এটা সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে জানান দেয়াসহ আরো কিছু বাড়তি সুবিধার জন্য আপনাকে আপনার সাইট সাবমিট করতে হবে।
সুতরাং, গুগল ওয়েব মাস্টার টুল এবং বিং ওয়েব মাস্টার টুলে আপনার সাইট সাবমিট করে ভেরিফাই করিয়ে নিন। গুগলের জন্য আপনার একটি জি-মেইল অ্যাকাউন্ট আর বিং এর জন্য আপনার একটি ইয়াহু মেইল অ্যাকাউন্ট লাগবে। যদি থাকে, তো শুরু করুন। না থাকলে এখনি করে নিন। জি-মেইল দিয়ে গুগল ওয়েব মাস্টার টুল আর ইয়াহু মেইল দিয়ে বিং ওয়েব মাস্টার টুল লগইন করলেই আপনি অ্যাক্সেস পাবেন আর অ্যাক্সেস পেলেই আপনি ড্যাশবোর্ড দেখতে পাবেন। ড্যাশবোর্ড থেকে আপনার সাইটের সাইট ম্যাপ সাবমিট করে দিন।
অনেক নতুন ব্লগের ক্ষেত্রেই গুগুল ইনডেক্স করা শুরু করতে প্রায় ২ সপ্তাহ সময় নিয়ে নেয়। কাজেই চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, মনিটোরিং করে যান; দু’একদিন পর পরই দেখুন আপনার সাইটটি ঠিক মতো ইনডেক্স হচ্ছে কিনা। গুগল ঠিক মতো ইনডেক্স করা শুরু করলেই হবে, বাকী সার্চ ইঞ্জিনগুলো অটোমেটিক ইনডেক্স করবে, সে নিয়ে আপনাকে মাথা ঘামাতে হবে না। তবে দ্রুত আর স্মুথ ইনডেক্সের জন্য আপনার আর্টিকেলগুলো নিয়মিত ফেসবুক, টুইটার এবং গুগল প্লাসে শেয়ার করুন, বন্ধুদের দিয়েও শেয়ার করান।
৭. ওয়েব মাস্টার টুল এবং অ্যানালিটিক্সে মনোযোগ দিন
ওয়েবসাইট বা ব্লগ মালিকদের জন্য গুগলের একটি ফ্রি পরিসেবা হচ্ছে গুগল অ্যানালিটিক্স যেখান আপনি আপনার সাইটের রিয়েল টাইম ভিজিটর, ডেইলি ভিজিটর, উইকলি এবং মান্থলি ভিজিটর সংখ্যা দেখতে পাবেন এবং ভিজিটরদের মতিগতি অ্যানালাইস করতে পারবেন। এমনকি আপনার সাইট ইনডেক্সিং কোন সমস্যা থাকলে কিংবা সাইটে ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়্যার ঢুকলেও ওয়েব মাস্টার টুল আপনাকে নোটিফাই করবে। সুতরাং, এ সব সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনার সাইটে গুগল অ্যানালিটিক্স অ্যাড করে নিন।
৮. অন্যান্য অ্যাড পাবলিশিং বন্ধ করুন
যদিও গুগল অন্যান্য নেটওয়ার্কের অ্যাড পাবলিশিং এ কোন বাধা দেয় না কিন্তু শুরুতে অর্থাৎ গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করার আগে আপনার সাইটে অন্য কারো অ্যাড রাখা যাবে না। যদি রাখেন তো, গুগল অ্যাডসেন্স পাবেন না। আবার পাওয়ার পর আপনি চাইলে গুগলের অ্যাডের পাশাপাশি অন্যান্য নেটওয়ার্কের অ্যাডও আপনার সাইটে প্রদর্শন করতে পারবেন। কিন্তু গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদনের পর থেকে ভেরিফিকেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য অ্যাড প্রদর্শন বন্ধ রাখুন।
৯. কিছু বাড়তি পরামর্শ মেনে চলুন
- আপনার যদি একের অধিক ওয়েবসাইট থাকে, তবে সবচেয়ে ভালটা দিয়ে অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করুন।
- বাংলাদেশি হিসেবে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজীতে করা সাইট দিয়ে আবেদন করতে হবে। বাংলা ভাষার সাইট দিয়ে আবেদন করলে আবেদন নাকচ হয়ে যাবে। গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টের জন্য এ যাবৎ মনোনীত ভাষাগুলোর লিস্ট দেখে নিন এখানে।
- গুগল আপনার ঠিকানা ভেরিফাই করবে। সুতরাং সঠিক ঠিকানা ব্যবহার করুন। তবে চাইলে আপনি ভবিষ্যতে ঠিকানা বদল করতে পারবেন। কিন্তু কোনভাবেই আপনার পেয়ি নেম অর্থাৎ যে নামে টাকা আসবে তা বদল করতে পারবেন না। সুতরাং, যে নামে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, আবেদনে কেবল ওই নামটিই ব্যবহার করুন। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে, আবেদন করার আগে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে নিন। তারপর ওই অ্যাকাউন্টের নাম দিয়ে আবেদন করুন।
- অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করতে হলে আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের বেশি হতে হবে।
- আবেদন করার আগে গুগলের অ্যাডসেন্স গাইডটি পড়ে নিন।
অ্যাডসেন্সের জন্য অ্যাপ্লাই করার আপনাকে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনের মুখোমুখি হতে হবে। প্রথম স্টেপের পর, আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করতে হবে। এর জন্য, আপনার অ্যাকাউন্ট লগইন করে অ্যাড কোড জেনারেট করে আপনার সাইট বা ব্লগে পেস্ট করতে। সাইটে কোড দেয়ার পর সেকেন্ড স্টেপ ভেরিফিকেশন শুরু হবে।
আপনি যখন সম্পূর্ণ অনুমোদন পাবেন তখন অ্যাডসেন্সের পলিসি মেনটেন করে আপনি যে কোন সাইটে অ্যাড প্রদর্শন করতে পারবেন। এমনকি যত খুশি তত সাইটেই অ্যাড বসাতে পারবেন।
আশা করি, এখন আপনি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টের জন্য আবেদন করার পুরো প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পাওয়া আসলেই খুব সহজ, শুধু আপনাকে উপরোক্ত গাইড লাইনগুলো পুরোপুরি ফলো করতে হবে। অ্যাডসেন্সের অ্যাডসহ আপনার সাইট বা ব্লগটি দেখার জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকবো। আশা করি, অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পাওয়ার পর আমাদেরকে জানাবেন, আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন।
আর আবেদন করার পূর্বে আপনার যদি কোন সহযোগীতার প্রয়োজন হয়, নিচে কমেন্টের ঘরে লিখে আমাদের জানাবেন। আপনাকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগীতা করবো।
Sastho Barta says
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টের বিষয়ে অনেক পোষ্ট পড়েছি, তবে আপনার পোষ্টটি অনেক ভালো লাগলো। অনেক কাজে আসবে।
ধন্যবাদ
Al Mahmud Raihan says
গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার উপায় নিয়ে অসাধারণ লিখেছেন, ধন্যবাদ। এ উপায়গুলো মেইনটেন করলে যে কোনও সাইটই গুগলের অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভাল পাবে।
Niloy says
বাংলাদেশি হিসেবে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজীতে করা সাইট দিয়ে আবেদন করতে হবে। বাংলা ভাষার সাইট দিয়ে আবেদন করলে আবেদন নাকচ হয়ে যাবে।///// তাহলে হইচই সাইটে আমরা যে বিজ্ঞাপন দেখতেছি সেগুলো কি অ্যাডসেন্স না???
টি আই অন্তর says
ভাই, আপনি ভুল জানেন। গুগল বাংলায় অ্যাডসেন্সের অনুমোদন দিয়েছে অনেক আগেই। আর বাংলা সাইট দিয়েই আবেদন করা যায় এবং অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পেতেও তেমন কোনও সমস্যা হয় না। আপনি যদি অ্যাডসেন্সের সব রুল ফলো করে বাংলা সাইট দিয়েই আবেদন করেন, ইনশাল্লাহ্ পেয়ে যাবেন।