ক্যান্সার এমন একটি শব্দ, যা শুনলেই সবার মনে ভয়, আশঙ্কা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এটি এমন একটি জটিল রোগ যা শরীরের যেকোনো অংশে শুরু হতে পারে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে।
বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন, এবং অনেকেই এই রোগের সঙ্গে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করছেন।
তবে বর্তমান যুগে ক্যান্সার আর অজানা নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে এই রোগ এখন অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময়যোগ্য, নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও প্রতিরোধযোগ্য।
তাই ক্যান্সার সম্পর্কে সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য, বরং প্রতিটি মানুষের জন্যই।
এক নজরে দেখে নিন যা আছে এই লেখায়-
ক্যান্সার কী?
ক্যান্সার হলো একটি জটিল এবং প্রাণঘাতী রোগ, যেখানে শরীরের কোষগুলো অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায় এবং বিভাজিত হতে থাকে।
সাধারণত, শরীরের কোষগুলো একটি নির্দিষ্ট নিয়মে বেড়ে ওঠে, পুরোনো কোষ মারা যায় এবং নতুন কোষ গঠিত হয়। কিন্তু ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দেয়।
পুরোনো কোষ মারা না গিয়ে বেঁচে থাকে এবং নতুন কোষ অপ্রয়োজনে সৃষ্টি হতে থাকে, ফলে এক ধরনের গুচ্ছ বা পিণ্ড (tumor) তৈরি হয়। এই টিউমার ক্ষতিকর (malignant) হলে তা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যাকে মেটাস্টাসিস (metastasis) বলা হয়।
ক্যান্সার শরীরের যেকোনো অঙ্গে হতে পারে — যেমন ফুসফুস, স্তন, ত্বক, পাকস্থলী, অস্থিমজ্জা, প্রোস্টেট বা রক্তেও (যেমন: লিউকেমিয়া)।
এটি ১০০টিরও বেশি প্রকারে দেখা যায় এবং প্রতিটি ক্যান্সারের আচরণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে।
ক্যান্সার কত প্রকার ও কী কী?
ক্যান্সার মূলত শরীরের কোষের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্যান্সারকে প্রধানত ৫টি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করে:
কার্সিনোমা (Carcinoma)
এটি সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার। এটি শরীরের বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ আবরণী কোষ (epithelial cells) থেকে শুরু হয়।
উদাহরণ:
- স্তন ক্যান্সার (Breast cancer)
- ফুসফুস ক্যান্সার (Lung cancer)
- পাকস্থলীর ক্যান্সার (Stomach cancer)
- ত্বক ক্যান্সার (Skin cancer)
- কোলন ক্যান্সার (Colon cancer)
সারকোমা (Sarcoma)
এই ধরনের ক্যান্সার শরীরের সংযোগকারী টিস্যু যেমন — হাড়, পেশি, রক্তনালি, চর্বি বা লিগামেন্টে দেখা যায়।
উদাহরণ:
- অস্থি ক্যান্সার (Osteosarcoma)
- পেশির ক্যান্সার (Myosarcoma)
- চর্বির ক্যান্সার (Liposarcoma)
লিউকেমিয়া (Leukemia)
এই ক্যান্সার রক্ত ও অস্থিমজ্জায় (bone marrow) তৈরি হওয়া কোষগুলোকে প্রভাবিত করে। এটি সাধারণত টিউমার তৈরি না করে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
উদাহরণ:
- একিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (ALL)
- একিউট মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (AML)
- ক্রনিক লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া (CLL)
লিম্ফোমা (Lymphoma)
এটি ইমিউন সিস্টেমের অংশ লিম্ফাটিক সিস্টেমে শুরু হয়, বিশেষ করে লিম্ফ নোড ও লিম্ফোসাইট নামক শ্বেত রক্ত কণিকায়।
উদাহরণ:
- হজকিনস লিম্ফোমা (Hodgkin’s Lymphoma)
- নন-হজকিনস লিম্ফোমা (Non-Hodgkin’s Lymphoma)
মেলানোমা (Melanoma)
এই ক্যান্সার ত্বকের মেলানোসাইট (melanocyte) নামক রঙ উৎপাদনকারী কোষে শুরু হয়। এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
উদাহরণ:
- ত্বকের মেলানোমা
- চোখের মেলানোমা
অন্যান্য ক্যান্সার:
- ব্রেইন টিউমার ও স্পাইনাল কর্ড টিউমার
- এন্ডোক্রাইন ক্যান্সার (যেমন থাইরয়েড ক্যান্সার)
- জার্ম সেল ক্যান্সার (যেমন টেস্টিকুলার বা ওভেরিয়ান ক্যান্সার)
সার্বিকভাবে ক্যান্সার শতাধিক প্রকারে হতে পারে, তবে এগুলো প্রধানত ৫টি শ্রেণিতে বিভক্ত। প্রতিটি ক্যান্সারের বৈশিষ্ট্য, উপসর্গ, এবং চিকিৎসা ভিন্ন হয়। তাই সঠিকভাবে শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাই জীবন রক্ষার মূল চাবিকাঠি।
ক্যান্সার কেন হয়?
আধুনিক চিকিৎসা ও গবেষণায় জানা গেছে যে ক্যান্সার হঠাৎ করে জন্ম নেয় না, বরং ধীরে ধীরে কোষের জিনগত পরিবর্তন ও বিভিন্ন পরিবেশগত ও জীবনধারাগত কারণে এটি বিকাশ লাভ করে। আমরা বিশদভাবে আলোচনা করব ক্যান্সারের মূল কারণগুলো সম্পর্কে।
আমাদের শরীরের কোষ প্রতিনিয়ত বিভাজিত হয় ও নতুন কোষ তৈরি হয়। কিন্তু যখন কোষের ডিএনএ (DNA)-তে কোনো পরিবর্তন বা মিউটেশন ঘটে এবং তা ঠিকভাবে মেরামত না হয়, তখন কোষগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হতে থাকে। ফলে টিউমার বা ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। নিচে ক্যান্সারের প্রধান কারণগুলো তুলে ধরা হলো:
ক্যান্সারের প্রধান কারণসমূহ:
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য:
ধূমপান ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকিপূর্ণ কারণ। ফুসফুস, মুখ, গলা, কণ্ঠনালী, খাদ্যনালী এবং মূত্রাশয়ের ক্যান্সারের সাথে তামাক সেবনের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।
পরামর্শ: জেনে নিন ধুমপান ছাড়ার ১৩টি কার্য্যকর উপায়।
অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ:
নিয়মিত ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করার ফলে লিভার ক্যান্সার, মুখগহ্বর ক্যান্সার, গলা ও খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায়।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস:
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত, প্রক্রিয়াজাত ও ফাস্টফুডজাতীয় খাবার বেশি খেলে শরীরে অতিরিক্ত ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরি হয় যা কোষের ক্ষতি করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্থুলতা ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা:
দৈহিকভাবে সক্রিয় না থাকলে বা স্থূলতা থাকলে স্তন, কোলন, প্রোস্টেট, জরায়ুমুখ ইত্যাদি ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ে।
পরামর্শ: ওজন কমানোর ১৯ উপায় জেনে নিয়ে স্থুলতা প্রতিরোধ করুন এবং ক্যান্সারের সম্ভাবণা কমিয়ে আনুন।
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (UV Rays):
বেশি সময় রোদে থাকা বা সানস্ক্রিন ছাড়া রোদে যাওয়া ত্বকের কোষের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং মেলানোমা (ত্বকের ক্যান্সার) সৃষ্টি করতে পারে।
রাসায়নিক পদার্থ ও পরিবেশ দূষণ:
অ্যাসবেস্টস, বেঞ্জিন, আর্সেনিকসহ নানা বিষাক্ত কেমিকেল, শিল্প কারখানার বর্জ্য, বায়ু দূষণ ইত্যাদি ফুসফুস ও ত্বকের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
ভাইরাস ও সংক্রমণ:
কিছু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। যেমন:
- HPV (Human Papillomavirus) – জরায়ু ক্যান্সার
- Hepatitis B ও C – লিভার ক্যান্সার
- Epstein-Barr Virus (EBV) – লিম্ফোমা
- Helicobacter pylori – পাকস্থলী ক্যান্সার
বংশগত বা জেনেটিক কারণ:
পরিবারের কারও ক্যান্সার ইতিহাস থাকলে নিজের ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে। যেমন: স্তন ক্যান্সারের জন্য BRCA1/BRCA2 জিনের মিউটেশন দায়ী হতে পারে।
হরমোন ও ওষুধের প্রভাব:
কিছু হরমোন থেরাপি বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে স্তন বা জরায়ু ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে।
জীবনযাপন ও কর্মপরিবেশ:
রাতের শিফটে দীর্ঘদিন কাজ, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিদ্রা বা বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শেও ক্যান্সার হতে পারে।
ক্যান্সারের অনেক কারণ আমাদের হাতের বাইরে হলেও, বেশ কিছু ঝুঁকি আমরা সহজেই এড়াতে পারি। যেমন — ধূমপান বর্জন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, সানস্ক্রিন ব্যবহার, টিকা গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও মেডিকেল চেকআপ ইত্যাদি। সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন — ক্যান্সার প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন।
শরীরে কীভাবে ক্যান্সার তৈরি হয়?
ক্যান্সার হঠাৎ করে একদিনে দেখা দেয় না, বরং এটি ধাপে ধাপে শরীরের কোষের ভেতরে পরিবর্তনের মাধ্যমে গঠিত হয়। আমরা জানব — ক্যান্সার শরীরে কীভাবে বিকাশ লাভ করে এবং কোন কোন ধাপ পেরিয়ে তা একটি মারাত্মক রোগে পরিণত হয়।
শরীরের কোষ ও ডিএনএ (DNA):
আমাদের শরীর কোটি কোটি কোষ দ্বারা গঠিত। প্রতিটি কোষের ভিতরে থাকে একটি নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র — ডিএনএ, যেখানে কোষের বৃদ্ধি, বিভাজন ও মৃত্যুর নিয়ম লেখা থাকে। যখন এই ডিএনএ-তে কোনো পরিবর্তন বা “মিউটেশন” ঘটে, তখন কোষ তার স্বাভাবিক আচরণ থেকে সরে যায়।
ক্যান্সার গঠনের ধাপসমূহ:
জিনগত পরিবর্তন বা মিউটেশন:
কোষের ডিএনএ-তে কোনো কারণে (ধূমপান, সূর্যের UV রশ্মি, রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি) পরিবর্তন ঘটলে কোষ তার স্বাভাবিক গুণাবলি হারায়। এই পরিবর্তন বংশগত (inherited) অথবা অর্জিত (acquired) হতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন শুরু:
মিউটেশন আক্রান্ত কোষগুলো শরীরের নিয়ন্ত্রণ উপেক্ষা করে লাগামহীনভাবে বিভাজিত হতে থাকে। ফলে অপ্রয়োজনীয় ও অস্বাভাবিক কোষ জমা হতে থাকে।
টিউমার (Tumor) গঠন:
- এই অস্বাভাবিক কোষগুলো একত্রিত হয়ে একটি গিঁট বা পিণ্ড (টিউমার) তৈরি করে।
- Benign Tumor: নিরীহ, ছড়ায় না
- Malignant Tumor: ক্ষতিকর, আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে
আশপাশের টিস্যু দখল করা:
ক্ষতিকর (Malignant) কোষগুলো আশেপাশের স্বাস্থ্যকর কোষ বা টিস্যুতে প্রবেশ করে এবং তাদের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে।
মেটাস্টাসিস (Metastasis):
সবচেয়ে বিপজ্জনক ধাপ। এই পর্যায়ে ক্যান্সার কোষ রক্ত বা লিম্ফ সিস্টেমের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে — যেমন ফুসফুস, যকৃত, হাড় বা মস্তিষ্ক।
যে জিনিসগুলো এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে:
- ধূমপান ও তামাক ব্যবহার
- অতিবেগুনি রশ্মি (UV)
- বিষাক্ত রাসায়নিক
- ভাইরাস (যেমন HPV, Hepatitis B/C)
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও জীবনযাপন
- বংশগত জিনগত পরিবর্তন
উদাহরণস্বরূপ একটি ক্যান্সার বিকাশের সংক্ষিপ্ত রূপ:
ধূমপান ➝ ফুসফুসের কোষে ডিএনএ পরিবর্তন ➝ অনিয়ন্ত্রিত বিভাজন ➝ টিউমার ➝ রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়া (মেটাস্টাসিস)।
ক্যান্সার একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার ফল, যা ধাপে ধাপে শরীরে গড়ে ওঠে। যদি আমরা এই প্রক্রিয়ার শুরুতেই সচেতন হই এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করি, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য।
কিভাবে বুঝবেন আপনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন?
চলুন জেনে নেই কীভাবে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন এবং কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণসমূহ:
অকারণে রক্তপাত:
- কাশি দিলে রক্ত ওঠা
- প্রস্রাব বা পায়খানার সঙ্গে রক্ত
- মাসিকের বাইরে রক্তপাত
- মুখ বা দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত
শরীরের কোথাও অস্বাভাবিক গাঁট বা গুটি:
- স্তন, ঘাড়, বগল বা শরীরের অন্য অংশে অস্বাভাবিক গাঁট তৈরি হলে সতর্ক হতে হবে
- গাঁটটি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ঝুঁকি বেড়ে যায়
অকারণে ওজন কমে যাওয়া:
আপনি কোনো ডায়েট বা ব্যায়াম না করেও যদি হঠাৎ ওজন হারান (৩-৫ কেজি বা তার বেশি), তবে তা ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বা দুর্বলতা:
প্রতিদিনের কাজের পর স্বাভাবিকভাবে ক্লান্ত হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু যদি সারাক্ষণ অজানা ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করেন, তা হতে পারে রক্ত বা অন্যান্য ক্যান্সারের লক্ষণ।
নানা ধরনের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা:
- কাশি বা স্বর ভেঙে যাওয়া (৩ সপ্তাহের বেশি)
- পেট ব্যথা বা বদহজম বারবার হওয়া
- ঘন ঘন জ্বর বা সংক্রমণ (বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে)
- গলার ব্যথা বা খাবার গিলতে অসুবিধা
- ক্ষত বা আলসার যা দীর্ঘদিনেও শুকায় না
রাতের ঘাম বা জ্বর:
রক্ত ক্যান্সার বা লিম্ফোমার ক্ষেত্রে রাতে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া ও বারবার জ্বর আসা সাধারণ লক্ষণ।
ত্বকে বিস্ময়কর পরিবর্তন:
- আঁচিল বা তিলের রঙ, আকার বা গঠনের হঠাৎ পরিবর্তন
- ত্বকে নতুন ফুসকুড়ি বা ক্ষত, যা সহজে ভালো হয় না
মল-মূত্রের পরিবর্তন:
- ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘদিন ধরে চললে
- প্রস্রাবের গতি, রঙ বা ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
খাদ্য গ্রহণে অরুচি বা গিলতে কষ্ট:
খেতে ইচ্ছা না থাকা, খাবার গিলতে সমস্যা — পাকস্থলী, খাদ্যনালী বা মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
শরীরে ক্যান্সারের লক্ষণ বুঝলে কী করবেন?
শরীরে ক্যান্সারের উপসর্গ দেখা দিলে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রোগটিকে অনেকাংশে থামিয়ে দেওয়া সম্ভব। জেনে নিন, যদি আপনি শরীরে ক্যান্সারের লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে কী করা উচিত এবং কী কী ভুল এড়িয়ে চলা উচিত।
লক্ষণ দেখা দিলে প্রথমে আতঙ্ক নয়, সচেতনতা:
ক্যান্সারের সব লক্ষণ মানেই ক্যান্সার নয়। যেমন — হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, ক্লান্তিভাব, গলায় গাঁট, রক্তপাত ইত্যাদি বিভিন্ন রোগেও হতে পারে। তাই প্রথম করণীয় হলো আতঙ্কিত না হয়ে পর্যবেক্ষণ ও পদক্ষেপ নেওয়া।
ধাপে ধাপে করণীয়:
লক্ষণগুলো লিখে রাখুন ও পর্যবেক্ষণ করুন
- কত দিন ধরে উপসর্গটি আছে?
- ধীরে ধীরে বাড়ছে কি?
- কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বেশি হয় কি না?
এই তথ্যগুলো পরবর্তী চিকিৎসকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যান
সাধারণ চিকিৎসকের পরিবর্তে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ বা অ্যানকোলজিস্টের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে আপনি নিচের বিশেষজ্ঞদের দেখা নিতে পারেন:
- স্তন ক্যান্সার → স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা অনকোলজিস্ট
- ফুসফুসের লক্ষণ → মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বা চেস্ট ফিজিশিয়ান
- মুখে ক্ষত বা গুটির জন্য → ইএনটি (ENT) বা ডেন্টাল সার্জন
- পেটের সমস্যা → গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট
- অজানা রক্তপাত → গাইনি / ইউরোলজিস্ট
পরীক্ষা করান
প্রয়োজন হলে নিচের কিছু পরীক্ষা করতে হতে পারে:
- রক্ত পরীক্ষা (CBC, Tumor Markers)
- এক্স-রে, আলট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যান
- বায়োপসি (যদি কোনো গাঁট বা টিউমার পাওয়া যায়)
মনে রাখবেন: প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে তা অতন্ত সহজে চিকিৎসা করা যায়।
পরিবারকে জানান এবং মানসিক সমর্থন নিন
এই ধাপে ভয়, চাপ ও মানসিক ভঙ্গুরতা আসে। তাই এই সময়ে পরিবার, ঘনিষ্ঠ বন্ধু অথবা কাউন্সেলরের সাথে কথা বলুন। মানসিক স্থিরতা ক্যান্সার মোকাবেলায় বড় শক্তি।
দ্রুত ও নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করুন
আপনার রিপোর্টে যদি ক্যান্সারের উপস্থিতি ধরা পড়ে, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসার পরিকল্পনা শুরু করুন:
- কেমোথেরাপি
- রেডিওথেরাপি
- অপারেশন
- টার্গেটেড থেরাপি (নতুন পদ্ধতি)
চিকিৎসক যেটা বলবেন, সেই পথেই এগিয়ে চলুন। মাঝপথে ছেড়ে দেবেন না।
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন
ক্যান্সারের সাথে লড়াইয়ের সময় আপনার জীবনযাপন হতে হবে সঠিক ও স্বাস্থ্যকর:
- ধূমপান, তামাক বা অ্যালকোহল সম্পূর্ণ বর্জন করুন
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান (ফল, শাকসবজি, হালকা প্রোটিন)
- হালকা ব্যায়াম করুন (যতটা সম্ভব)
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
এড়িয়ে চলুন কিছু ভুল:
- গুগল বা সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ভয় পাওয়া
- লোকলজ্জায় উপসর্গ গোপন করা
- আয়ুর্বেদ/ক্বাথ/ঘরোয়া চিকিৎসায় বেশি নির্ভর করা
- পরীক্ষা করতে ভয় পাওয়া
- “কিছু হবে না” বলে দীর্ঘদিন উপসর্গকে অবহেলা করা
ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য কোন ধরনের ডাক্তার দেখাবেন?
ক্যান্সার চিকিৎসা একটি জটিল ও বিশেষায়িত প্রক্রিয়া। সঠিক চিকিৎসকের সাহায্য ছাড়া সফল চিকিৎসা আশা করা কঠিন। তাই ক্যান্সার রোগী বা তার পরিবারের জন্য সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, কোন ধরনের ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত? এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো, ক্যান্সারের চিকিৎসায় কোন কোন ধরনের ডাক্তার থাকেন এবং কোন পরিস্থিতিতে কার কাছে যাওয়া উচিত।
সার্জিক্যাল অনকোলজিস্ট
- কাজ: ক্যান্সার আক্রান্ত টিস্যু বা টিউমার অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলা।
- কখন প্রয়োজন: যখন অপারেশন সম্ভব এবং প্রয়োজনীয় হয়।
- বিশেষজ্ঞ: যিনি ক্যান্সার রোগীদের সার্জারি করেন, সাধারণ সার্জন থেকে আলাদা।
মেডিকেল অনকোলজিস্ট
- কাজ: কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি ও টার্গেটেড থেরাপি প্রদান।
- কখন প্রয়োজন: ক্যান্সার রক্ত বা টিস্যুতে ছড়িয়ে গেলে বা অপারেশনের পর অতিরিক্ত চিকিৎসা দরকার হলে।
- বিশেষজ্ঞ: ওষুধের মাধ্যমে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট
- কাজ: রেডিওথেরাপি বা বিকিরণ থেরাপি দিয়ে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা।
- কখন প্রয়োজন: অপারেশন সম্ভব না হলে বা অপারেশনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে।
- বিশেষজ্ঞ: রেডিয়েশন দিয়ে ক্যান্সার চিকিৎসা করেন।
হেমাটোলজিস্ট
- কাজ: রক্তের ক্যান্সার যেমন লিউকেমিয়া, লিম্ফোমার চিকিৎসা।
- কখন প্রয়োজন: রক্ত ও অঙ্গাণুর ক্যান্সারে বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয়।
- বিশেষজ্ঞ: রক্তের রোগের বিশেষজ্ঞ।
গাইনোকোলজিকাল অনকোলজিস্ট
- কাজ: নারী সংক্রান্ত ক্যান্সার যেমন জরায়ু, ডিম্বাশয় ক্যান্সার চিকিৎসা।
- কখন প্রয়োজন: নারী সংক্রান্ত ক্যান্সারে।
- বিশেষজ্ঞ: গাইনোকোলজি ও অনকোলজির সমন্বয়।
পেডিয়াট্রিক অনকোলজিস্ট
- কাজ: শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসা।
- কখন প্রয়োজন: শিশুদের ক্যান্সার হলে।
- বিশেষজ্ঞ: শিশুর ক্যান্সারে দক্ষ চিকিৎসক।
ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের জন্য আলাদা আলাদা চিকিৎসক প্রয়োজন হয়। রোগীর ধরন ও অবস্থান বুঝে সঠিক বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।
ক্যান্সার নির্ণয়ে ডাক্তার কী কী পরীক্ষা দিতে পারে?
ডাক্তার যখন সন্দেহ করেন যে শরীরে ক্যান্সার হতে পারে, তখন বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন। এখন আমরা জানব, ডাক্তার ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য কী কী পরীক্ষা সুপারিশ করতে পারেন।
রক্ত পরীক্ষা (Blood Tests)
যেসব গুরুত্বপূর্ণ রক্ত পরীক্ষা রয়েছে, তার মধ্যে এটিও একটি।
- কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (CBC): রক্তের বিভিন্ন কোষের সংখ্যা ও গুণগত মান যাচাই করে। রক্তের ক্যান্সার থাকলে এই পরীক্ষা দরকারী।
- টিউমার মার্কার টেস্ট (Tumor Markers): কিছু বিশেষ প্রোটিন বা রাসায়নিক পদার্থ যা ক্যান্সার কোষ থেকে নির্গত হতে পারে, যেমন PSA (প্রোস্টেট), CA-125 (স্তন/ডিম্বাশয়)।
ইমেজিং পরীক্ষা (Imaging Tests)
- এক্স-রে (X-ray): সাধারণত ফুসফুস বা হাড়ের ক্যান্সার দেখার জন্য।
- আল্ট্রাসাউন্ড (Ultrasound): পেটে বা নরম টিস্যুতে টিউমার আছে কি না তা দেখতে।
- সিটি স্ক্যান (CT Scan): শরীরের ভেতরের জটিল ছবি নিয়ে ক্যান্সারের আকার ও ছড়ানোর মাত্রা নির্ধারণ।
- এমআরআই (MRI): স্নায়ু ও মস্তিষ্কের ক্যান্সারের জন্য বিশদ ছবি। জেনে নিন এমআরআই কি ও কিভাবে করা হয়।
- পিইটি স্ক্যান (PET Scan): শরীরের ক্যান্সার কোষের কার্যক্রম দেখায়, ছড়িয়েছে কিনা তা বুঝতে সাহায্য করে।
বায়োপসি (Biopsy)
- ক্যান্সার শনাক্তের সবচেয়ে নির্ভুল পরীক্ষা। শরীর থেকে টিউমারের একটি ছোট অংশ নিয়ে তার কোষ পরীক্ষা করা হয়।
- বায়োপসি বিভিন্ন প্রকার: সূঁচ বায়োপসি, সার্জিক্যাল বায়োপসি, এন্ডোস্কোপিক বায়োপসি।
- এটি রোগ নির্ণয়ের পাশাপাশি ক্যান্সারের ধরন ও স্টেজ নির্ধারণেও সাহায্য করে।
মল পরীক্ষা (Stool Test)
- বিশেষ করে Large Intestine (বড়আন্ত্র) ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত।
- রক্তস্রাব বা অস্বাভাবিক কোষের উপস্থিতি খুঁজে বের করে।
অন্যান্য বিশেষ পরীক্ষা
- ফ্লো সাইটোমেট্রি (Flow Cytometry): রক্ত ও মজ্জার ক্যান্সার নির্ণয়ে।
- জিনগত পরীক্ষা (Genetic Testing): ক্যান্সারের ঝুঁকি বা নির্দিষ্ট ওষুধের প্রতিক্রিয়া বুঝতে।
ক্যান্সারের চিকিৎসা — সম্ভাবনা, পদ্ধতি ও আশা
আধুনিক চিকিৎসা ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়, যদি সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তবে ক্যান্সার চিকিৎসা একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ধাপে ধাপে গঠিত প্রক্রিয়া, যেখানে রোগের ধরন, পর্যায় (স্টেজ), অবস্থান ও রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারণ করা হয়। এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো ক্যান্সারের চিকিৎসার বিভিন্ন ধাপ ও পদ্ধতি নিয়ে।
সার্জারি (Surgery)
সার্জারি ক্যান্সার চিকিৎসার একটি প্রচলিত ও কার্যকর পদ্ধতি, বিশেষত যদি টিউমারটি অপসারণযোগ্য হয়।
কেন প্রয়োজন:
- টিউমার সম্পূর্ণভাবে সরানোর জন্য
- ক্যান্সার ছড়ানোর পূর্বে প্রতিরোধে
- ব্যথা বা জটিলতা কমাতে
উদাহরণ: স্তন ক্যান্সারে মাস্টেকটমি, কোলন ক্যান্সারে আন্ত্রের অংশ কেটে ফেলা।
কেমোথেরাপি (Chemotherapy)
এটি এমন একটি চিকিৎসা, যেখানে ওষুধ ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয়।
কখন প্রয়োগ হয়:
- ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লে
- সার্জারির আগে টিউমার ছোট করতে
- অপারেশনের পরে থেকে যাওয়া ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বমি, চুল পড়া, দুর্বলতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া।
রেডিওথেরাপি (Radiation Therapy)
এখানে উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন বিকিরণ ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয়।
ধরন:
- External beam radiation (বাইরের দিক থেকে)
- Brachytherapy (শরীরের ভেতরে রেডিয়েশন টিউব বসানো)
লক্ষ্য:
ক্যান্সার কোষ নষ্ট করে, ব্যথা কমায়, রোগের অগ্রগতি ঠেকায়।
টার্গেটেড থেরাপি (Targeted Therapy)
এই চিকিৎসা ক্যান্সার কোষের নির্দিষ্ট প্রোটিন বা জিনকে লক্ষ্য করে কাজ করে।
- উদাহরণ: হরমোন রিসেপ্টর ব্লকার, HER2 ইনহিবিটার
- উপকারিতা: সুস্থ কোষ কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে কম।
ইমিউনোথেরাপি (Immunotherapy)
এই চিকিৎসায় শরীরের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করানো হয়।
কেন দরকার:
- যখন অন্যান্য চিকিৎসা ব্যর্থ হয়
- শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
চিকিৎসা: Monoclonal antibodies, checkpoint inhibitors
হরমোন থেরাপি (Hormone Therapy)
হরমোন-নির্ভর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে হরমোন উৎপাদন বন্ধ বা কমিয়ে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করা হয়।
- প্রযোজ্য: স্তন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার ইত্যাদি
- উদাহরণ: Tamoxifen, Androgen blockers
সহায়ক থেরাপি ও জীবনধারা
- পেইন ম্যানেজমেন্ট (ব্যথা নিয়ন্ত্রণ)
- পুষ্টি ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণ
- মানসিক কাউন্সেলিং ও থেরাপি
- যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, সাপোর্ট গ্রুপে যোগদান
এইগুলো ক্যান্সার মোকাবিলার পথে রোগীকে মানসিক ও শারীরিকভাবে শক্ত রাখে।
চিকিৎসা নির্ধারণ কীভাবে হয়?
চিকিৎসক নিচের বিষয়গুলো বিচার করে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করেন:
- ক্যান্সারের ধরন (Type)
- স্টেজ (Stage: ১ থেকে ৪)
- রোগীর বয়স ও শারীরিক অবস্থা
- ক্যান্সার ছড়িয়েছে কিনা
- পূর্ববর্তী চিকিৎসার ইতিহাস
ক্যান্সারের চিকিৎসা যতটা বিজ্ঞাননির্ভর, ততটাই রোগী ও পরিবারের মানসিক প্রস্তুতির উপর নির্ভর করে।
শেষ কথা
ক্যান্সার শরীরের এক ধরনের পরিবর্তন মাত্র — যদি সময়মতো ধরা যায়, তা হলে প্রতিরোধযোগ্য। আপনি যদি শরীরে অস্বাভাবিক কিছু অনুভব করেন, দ্রুত একজন ভালো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। মনে রাখবেন, সচেতনতা, সাহস, ও সময়মতো পদক্ষেপই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
Leave a Reply