একটি সম্পর্ককে সফলভাবে ধরে রাখতে হলে অনেক সময় বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার মোকাবেলা করতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্পর্কের মধ্যে ঈর্ষাপরায়ণতা অনেক বেশি প্রবল হয়ে ওঠে। এটা নিঃসন্দেহে যে কোন ছেলের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং অবস্থা। কারণ কোন নির্দিষ্ট ছেলে বা ছেলেদের কারণে যদি আপনি এমনটা অনুভব করে থাকেন, তাহলে আপনার গার্লফ্রেন্ডকে তাদের সাথে বলা বলতে বারণ করাটা জরুরী হয়ে পড়ে।
কিন্তু একই সাথে এমনটা করলে আপনার গার্লফ্রেন্ডের মনে তার প্রতি আপনার বিশ্বাসের মাত্রা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। একারণে গার্লফ্রেন্ডকে অন্য ছেলেদের সাথে বলা বলতে বারণ করাটা তার বয়ফ্রেন্ডের জন্য অনেক বেশি কঠিন হয়ে ওঠে।
ইনসিকিউরিটি বা অনিরাপত্তা প্রতিটি মানুষেরই একটি স্বাভাবিক অনুভূতি এবং প্রতিটি সম্পর্কের কোন না কোন পর্যায়ে বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডকে এর মোকাবেলা করতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটাই হয়ে থাকে যে বয়ফ্রেন্ড তার গার্লফ্রেন্ডের সহকর্মী, বন্ধু বা অন্য যে কোন ছেলের সাথে কথা বলা নিয়ে ইনসিকিউরিটি অনুভব করতে থাকেন।
এ রকম পরিস্থিতিতে অনেকেই এমন মানসিক অবস্থায় পৌঁছে যান যে, সম্পর্কটাই শেষ করে ফেলতে চান। গার্লফ্রেন্ড অন্যদের সাথে কথা বললেই যে তার সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলতে হবে কিংবা ব্রেকআপ করে ফেলতে হবে, এমন নয়। আপনাকে বুঝতে হবে কখন বা কি রকম পরিস্থিতির উদয় হলে সঙ্গীর সঙ্গে ব্রেকআপ করা উচিৎ।
আপনি যদি কোন ছেলের সাথে আপনার গার্লফ্রেন্ডের কথা বলা নিয়ে ইনসিকিউরিটি অনুভব করেন, তাহলে আপনাকে প্রথমেই বিবেচনা করতে হবে যে, কেন আপনি ওই ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না। আপনার মনে হতেই পারে যে, ওই ব্যক্তি মানুষ হিসেবে ভাল নয় বা তার কারণে আপনাদের দুজনের সম্পর্ক নষ্ট হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমি আপনাকে সহজভাবে বলতে চাই যে, এটা আসলে ঈর্ষাপরায়ণতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তারপরেও যদি আপনি চান যে আপনার গার্লফ্রেন্ড তার সাথে কথা না বলুক, তাহলে কিভাবে তাকে বারণ করবেন চলুন জেনে নিই।
আপনার অনুভূতির কথা নির্দ্বিধায় খুলে বলুন:
সম্পর্ক ধরে রাখতে হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে একে অপরের কাছে কোন কিছু গোপণ না রাখা। আপনার মনে ওই ছেলেটিকে নিয়ে কি ধরনের অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে তা আপনার গার্লফ্রেন্ডকে খুলে বলুন। ওই ব্যক্তির সাথে আপনার গার্লফ্রেন্ড কথা বলার ফলে তার প্রতি আপনার মনে যে-সব নেতিবাচক ধারণা তৈরী হচ্ছে সেগুলির কারণ ও যুক্তি সহকারে বুঝিয়ে বলুন।
তবে এই বিষয়ে কথা বলার সময় শান্ত এবং স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুন। তাকে বুঝানোর জন্য কোন ধরনের অশালীন শব্দের ব্যবহার করবেন না। মার্জিত আর সাবলীল আচরণ করুন, নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন, সর্বোপরি আপনার গার্লফ্রেন্ডের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলুন। এতে করে সে আপনাকে নিয়েই বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকবে, অন্য ছেলের সঙ্গে কথা বলার সুযোগই পাবে কম।
তাকে আসল কারণটি খুলে বলুন:
গার্লফ্রেন্ডকে কারো সাথে কথা বলতে বারণ করার সময় প্রায় সব বয়ফ্রেন্ডই যে ভুলটি করে থাকেন, তা হলো কোন নির্দিষ্ট কারণ না দেখানো। বেশিরভাগ ছেলেদেরই দেখা যায় কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকেই তাদের সিদ্ধান্ত গার্লফ্রেন্ডের উপর চাপিয়ে দেন।
এর ফলে মেয়েরা নিজেদেরকে মূল্যহীন এবং ছোট ভাবতে শুরু করে এবং একইসাথে তাদের আত্মসম্মানে প্রবল আঘাত পান। তাই, যদি আপনাকে নিষেধ করতেই হয়, তাহলে ঠিক কি কারণে আপনি সেটি চাইছেন না, তার কারণ আপনার গার্লফ্রেন্ডের সামনে উপস্থাপনা করুন এবং তাকে বিবেচনা করতে দিন।
বলার পাশাপাশি শোনারও অভ্যাস করুন:
একটি সম্পর্ক দুজন মানুষের মধ্যে চলতে থাকা কোন প্রতিযোগিতা নয়। সম্পর্কে বয়ফ্রেন্ড এবং গার্লফ্রেন্ড একে অন্যের পরিপূরক। তাই, আপনি যেমন আপনার যুক্তি তার সামনে উপস্থাপন করবেন, একই সাথে তার যুক্তিগুলিও ধৈর্য্য সহকারে শোনার মানসিকতা রাখুন।
অনেক ছেলেই আছেন যারা নিজেদের সিদ্ধান্তকেই সব সময় সঠিক বলে ভাবেন এবং অন্যের পরামর্শ নিতে চান না। যদি এমনটা হয়, তাহলে আপনাদের সম্পর্ক অল্প কিছুদিনের মধ্যেই যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হবে। তাই যখন আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলবেন, তখন তার পক্ষের কথাগুলিও শুনুন এবং সেগুলি বিচার বিবেচনা করে দেখুন। হয়তো সেখানে এমনও কোন ঘটনা বেরিয়ে আসতে পারে যা সম্পর্কে আপনি অবগত নন।
স্বাভাবিক এবং শান্ত থাকুন:
আপনি যদি আপনার গার্লফ্রেন্ডের সাথে অশোভন আচরণ করেন, তার মানে হলো আপনি তাকে কষ্ট দিচ্ছেন। একই সাথে আপনি নিজের সম্পর্কে তার মনে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি করছেন। তাই, এ ধরনের পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক সময়ের চাইতেও বেশি শান্ত থাকার চেষ্টা করুন।
আপনি যদি আক্রমনাত্বক হয়ে ওঠেন, তাহলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি হবে। মনে রাখবেন, আপনি যতটা নিজেকে শান্ত রাখবেন, ততটাই আপনার গার্লফ্রেন্ড আপনার মতামতকে গুরুত্ব দেবে।
অতীতকে টেনে আনবেন না:
এটা বেশিরভাগ ছেলেদের একটা চরম বদ অভ্যাস। গার্লফ্রেন্ডকে কোন কথা শোনানোর প্রয়োজন হলেই দেখা যায় বয়ফ্রেন্ডরা তাদের অতীতের কোন ভুল সিদ্ধান্ত বা অতীতের সম্পর্কগুলিকে কথার মাঝখানে টেনে বিরক্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে।
আপনি যখন তার সাথে আলোচনার করবেন, তখন এখনকার ঘটনার সাথে অতীতের ঘটনাগুলির কোন যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা করবেন না। তার আত্মসম্মান নষ্ট করার প্রচেষ্টা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
প্রতিটি সম্পর্কই মৌলিক কিছু বৈশিষ্ট নিয়ে তৈরী হয়। কোন নির্দিষ্ট নিয়ম যে সব সম্পর্কের বেলায় সমানভাবে প্রযোজ্য হবে, এটা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। আপনার কোন ছেলেকে নিয়ে মনে অনিরাপত্তার সৃষ্টি হলে প্রথমে উপরে বর্ণিত কৌশলগুলির সাহায্য নিন। এতে আপনার গার্লফ্রেন্ড আপনার কথা মূল্যায়ন করবে, এমন পরিবেশ তৈরী হবে। আরেকটা কাজ করতে পারেন আর সেটা হচ্ছে আপনার গার্লফ্রেন্ডকে ঈর্ষাপরায়ণ করে তোলা, জানুন কিভাবে করবেন।
একইসাথে আপনার গার্লফ্রেন্ডের সাথে আপনার সম্পর্কের ধরনের উপর ভিত্তি করে একটি কার্যকরী সমাধান খুঁজে বের করুন। সবকিছু এককভাবে তার উপর চাপিয়ে দেবেন না। আপনি যে সমস্যাটি অনুভব করছেন এবং আপনি যে সম্ভাব্য সমাধান চাইছেন, তার সাথে আপনার গার্লফ্রেন্ডের মতামতের সমন্বয় করে একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত নিন, যাতে আপনারা দুজনেই সন্তুষ্ট থাকবেন।
Leave a Reply