একজন ইউটিউবারের ইউটিউব মার্কেটিং টুলস্ সম্পর্কে ধারণা থাকা আবশ্যক। ইউটিউবে শুধু ভিডিও আপলোড করে কোন লাভ নেই। শুধু ভিডিও আপলোড করলে আপনার ভিডিওর কোন ভিউ হবে না। ভিডিও সবার নিকট পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন ইউটিউব মার্কেটিং।
অনলাইনে অসংখ্য ইউটিউব মার্কেটিং এর জন্যে অনেক টুলস্ বিদ্যমান। তবে, সবগুলো মার্কেটিং টুলস্ ফ্রি নয়। যারা নতুন ইউটিউবার তাদের পক্ষে প্রিমিয়াম টুলস্ ব্যবহার সম্ভব নয়।
আজকের এই লেখায় আমি শুধু ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়, এমন ৫টি মার্কেটিং টুলস্ নিয়ে আলোচনা করবো। একজন সফল ইউটিউবার হতে হলে, এ-সব টুলস্ ব্যবহার এবং টুলস্ সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। সেই সাথে এটাও জেনে রাখা দরকার যে, ২০২০ এ কিভাবে একজন সফল ইউটিউবার হবেন!
ইউটিউব মার্কেটিং টুলস্
Google Trends
এসইও এবং ইউটিউবের সাথে যারা যুক্ত, তারা সবাই গুগল ট্রেন্ডস ব্যবহার করে থাকবেন। গুগল ট্রেন্ডস খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ইউটিউব মার্কেটিং টুল। এই টুলসের সাহায্যে বোঝা সম্ভব, বর্তমানে কোন বিষয়টি নিয়ে মানুষ বেশি সার্চ করছে। আর আপনি যখন সবচেয়ে বেশি সার্চ করা বিষয়ে ভিডিও তৈরি করবেন, তখন খুব দ্রুত আপনার ভিডিও ভাইরাল হবে।
গুগল ট্রেন্ডস থেকে আইডিয়া নিয়ে কাজ করলে আপনার ভিডিওর ভিউ খুব দ্রুত বাড়বে। এছাড়া আপনার কন্টেন্ট আইডিয়াও পাবেন এই গুগল ট্রেন্ডস থেকে। গুগল ট্রেন্ডসের বেশ কিছু সুবিধা হল-
- সেরা কি-ওয়ার্ড বাছাই।
- নতুন ট্রেন্ড সম্পর্কে জানা যায়।
- বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় কি-ওয়ার্ড সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
- প্রতি বছরের সেরা কি-ওয়ার্ড কি, তা জানা যায়।
VidiQ
VidiQ হল ইউটিউব সার্টিফাইড্ টুলস্। খুব জনপ্রিয় এবং কার্যকরী একটি টুলস্ এটি। ইউটিউব ভিডিও বা চ্যানেল নিয়ে আপনি যদি বিস্তারিত রিসার্চ করতে চান, তাহলে এই টুলসের কোন তুলনা হয় না। এই টুলস্ আপনার নিজের চ্যানেল বা ভিডিওর তথ্য দেখানোর পাশাপাশি অন্য চ্যানেল বা ভিডিওর তথ্য দেখিয়ে থাকে। এই টুলটি ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু অতিরিক্ত কিছু সেবার জন্য টাকা দিতে হয়। এই টুলস্ ব্যবহার করলে আপনি যে-সব সুবিধা পাবেন তা হল-
- স্যোশাল শেয়ার, এসইও, ভিডিও অপটিমাইজেশন, ট্যাগ সহ সব কিছুর তথ্য এবং স্কোর দেখতে পারবেন।
- আপনার কন্টেন্টের জন্য সেরা কি-ওয়ার্ড নির্বাচন করে দিবে এই টুলস্।
- কোন কি-ওয়ার্ডটি কত নাম্বার র্যাঙ্কে আছে তা দেখাবে এই টুলস্।
- আপনার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী আছে কিনা তা দেখাবে।
- ইউটিউব ট্রেন্ডসগুলো দেখাবে।
- রিয়েল-টাইম স্ট্যাটাস, চ্যানেল অডিট, থাম্বনেইল জেনারটরসহ ইত্যাদি আরও অনেক সুবিধা পাবেন।
KeywordTool
যারা ফ্রিতে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে চান, তাদের জন্য KeywordTool খুব জরুরি। এই টুলসের বিশেষ গুণ হল, এর মাধ্যমে বাংলা কি-ওয়ার্ড সার্চ করা যায়। এছাড়া এই টুলসের সাহায্যে লং টেইল কি-ওয়ার্ডও সার্চ করা যায়।
এই কি-ওয়ার্ড টুলস্, ইউটিউবের জন্য আপনাকে সঠিক কি-ওয়ার্ডটি নির্বাচন করতে সহায়তা করবে। শুধু ইউটিউবের জন্য আলাদা কি-ওয়ার্ড সার্চ করার সুবিধা রয়েছে এই টুলসে্।
Title Maker
ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করার পর, গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হল আকর্ষণীয় একটি টাইটেল। সঠিক এবং আকর্ষণীয় টাইটেল ভিডিওর ভিউ দ্রুত বৃদ্ধি করে। আর এই টুলস্ আপনাকে সঠিক টাইটেল নির্বাচন করতে সহায়তা করবে। আপনি শুধু ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার মূল টপিক দিবেন, তারা আপনাকে সঠিক টাইটেল তৈরি করে দিবে।
Title Maker টুলস্ ব্যবহার করা বেশ সহজ। প্রথমে তাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। Enter your subject here বক্সে আপনার টপিক লিখুন। ধরুন আপনার টপিক হল Car, এবার এটা লিখে তীর চিহ্নটিতে ক্লিক করলে উপরে আপনি টাইটেল দেখতে পারবেন। যদিও দুঃখজনক বিষয় হল, এখানে বাংলা টাইটেল সাজেশন পাওয়া যায় না। শুধু মাত্র ইংরেজি টাইটেল পাওয়া যায়।
Canva
ভিডিও তৈরির পর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল থাম্বনেইল। ভাল থাম্বনেইল আপনার ভিডিওকে ক্লিক এবং ভিউ দুটোই বৃদ্ধি করবে। কিন্তু অনেকে গ্রাফিক্স ডিজাইন কিংবা ফটোশপ ব্যবহারে অনভিজ্ঞ হওয়ার কারণে থাম্বনেইল তৈরি করতে পারে না।
যারা থাম্বনেইল তৈরি করতে পারে না, তাদেরকে থাম্বনেইল তৈরির সুবিধা দিবে Canva। কোন ধরনের ডিজাইন জ্ঞান ছাড়াই Canva তে আপনি থাম্বনেইল তৈরি করতে পারবেন। তাদের ওয়েবসাইটে অসংখ্য ইউটিউব থাম্বনেইল তৈরি করা আছে। সে-সব থাম্বনেইল সিলেক্ট করে, সেখানে আপনার লেখা এবং ছবি দিয়ে দিলেই হবে। তারপর ছবি ডাউনলোড করে ইউটিউবে ব্যবহার করতে পারবেন।
এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে হলে, তাদের ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে। ভয় নেই, অ্যাকাউন্ট খুলতে কোন টাকা লাগে না।
শেষ কথা
এই ছিল ইউটিউব মার্কেটিং টুলস্ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। উপরে উল্লেখিত প্রত্যেকটি টুলস্ ফ্রি। কিন্তু অতিরিক্ত কিছু সুবিধা ভোগ করতে চাইলে আপনাকে প্রিমিয়াম ইউজার হতে হবে অর্থাৎ আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে। তবে, ফ্রিতে আপনি যে সুবিধা পাবেন তা দিয়ে আপনার মূল কাজ হয়ে যাবে।
Leave a Reply