একজন ইউটিউব ইউজার যখন কোন চ্যানেল খোলে এবং তাতে ভিডিও আপলোড করে, তখন তাকে কোন না কোন লাইসেন্সের আওতাভূক্ত হতে হয়। অর্থাৎ, তার চ্যানেলটিকে একটা লাইসেন্সের আন্ডারে অন্তর্ভূক্ত করতে হয়।
এই লাইসেন্স মূলত ইউজারের সাথে ইউটিউবের এগ্রিমেন্ট, টার্মস্ ও ইউজ ইউটিউব। অর্থাৎ, আপনার ভিডিওগুলো কিভাবে ইউজ হবে, সেগুলোর কপিরাইট হোল্ডার এবং সেগুলো রি-ইউজের ব্যাপারে আপনার সন্মতি এবং অসন্মতি প্রদানই হচ্ছে এ লাইসেন্সের মূল উদ্দেশ্য।
ইউটিউব লাইসেন্স কত প্রকার ও কি কি?
ইউটিউব নিয়ে যারা কাজ করেন, অর্থাৎ চ্যানেল খোলেন এবং ভিডিও আপলোড করেন, তাদের জন্যে ইউটিউবের ২টি লাইসেন্সিং সিস্টেম রয়েছে।
১. স্ট্যান্ডার্ড ইউটিউব লাইসেন্স
২. ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্স
আপনি যখন কোন চ্যানেল খুলবেন, তখন আপনার চ্যানেলটিকে হয় স্ট্যান্ডার্ড ইউটিউব লাইসেন্স, না হয় ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্সের আওতাভূক্ত করতে হবে। আসুন, তাহলে এ দুটি লাইসেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
স্ট্যান্ডার্ড ইউটিউব লাইসেন্স
ইউটিউবের ডিফল্ট ভিডিও লাইসেন্স এটি। এটি এমন একটি লাইসেন্স যা ইউটিউবকে আপনার আপলোড করা ভিডিও স্টোর করার অনুমতি প্রদান করে। কিন্তু অন্যান্য ইউজারদেরকে শুধু ভিডিও দেখার অনুমতি দেয়। অর্থাৎ, ইউজার চাইলে ভিডিওটি ডাউনলোড, এডিট, মডিফাই ও রি-ইউজ করতে পারবে না।
আপনার চ্যানেলটি স্ট্যান্ডার্ড ইউটিউব লাইসেন্সের আওতায় থাকার অর্থ হচ্ছে আপনার চ্যানেলে থাকা সব ভিডিওর রাইট কেবল আপনারই। অন্য কেউ যদি সেগুলো ডাউনলোড করে আবার আপলোড করে, তবে সে ইউটিউবের সেট করে দেয়া রুল ভঙ্গ করবে এবং কপিরাইট আইনের আওতায় ইউটিউব তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে পারবে।
সুতরাং, আপনার ভিডিওগুলো যদি আপনার নিজস্ব তৈরি হয়, তবে সেগুলো প্রটেক্ট করার জন্যে আপনাকে অবশ্যই এই লাইসেন্সের আওতায় চ্যানেল সেট করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আপনার ভিডিও চুরি করে আপলোড করলে আপনি ইউটিউবকে নোটিফাই করতে পারেন, এমনকি তার বিরুদ্ধে আইনি অ্যাকশন নিতে পারেন।
ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্স
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পাবলিক কপিরাইট লাইসেন্সগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্স যা ইউটিউবের সেকেন্ড লাইসেন্সিং পদ্ধতি। যে কোন কপিরাইটের আওতায় থাকা যে কোন ভিডিও ডাউনলোড ও পুন:ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে এই লাইসেন্সের আওতায়। তবে, সেগুলো নন-কমার্শিয়ালি ইউজ করতে হবে।
উদাহরণ স্বরূপ, ইউটিউবে ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্সের আওতায় থাকা যে কোন ভিডিও আপনি ডাউনলোড করতে পারবেন, অন্য কোথাও ইউজ করতে পারবেন, এমনকি এডিট করে আবার ইউটিউবেই আপলোড করতে পারবেন। কিন্তু ব্যবসা সংক্রান্ত কোন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না।
ধরুন, আপনি একটি ইউটিউব চ্যানেল খুললেন আর সেখানে অন্যদের চ্যানেল থেকে ভিডিও শেয়ার করলেন। কিংবা ডাউনলোড করে আবার আপনার চ্যানেলে আপলোড করলেন, তবে আপনি চ্যানেলটিকে মনেটাইজ করতে পারবেন না। কারণ, এখানে ব্যবসা রয়েছে।
আপনার চ্যানেল মনেটাইজড্ হলে, আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলোতে ইউটিউবের অ্যাড শো হবে আর আপনি সেখান থেকে রেভিনিউ পাবেন। কাজেই, আপনার চ্যানেল ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্সের আওতায় থাকলে, আপনি চ্যানেলটি মনেটাইজ করতে পারবেন না। আবেদন করলেও ইউটিউব কতৃপক্ষ সেটি নাকচ করে দেবে।
সুতরাং, নিচের বিষয়গুলো খেয়াল করুন-
১. আপনি যদি কোন চ্যানেল থেকে ভিডিও ডাউনলোড করতে চান এবং এডিট করে আবার আপনার চ্যানেলে আপলোড করতে চান, তবে দেখে নিন চ্যানেলটি কিংবা ওই ভিডিওটি ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্সের আওতায় রয়েছে কিনা। যদি থাকে, তাহলে ডাউনলোড করুন, না থাকলে নয়।
২. আপনি যদি কোন ইউটিউব চ্যানেলের মালিক হয়ে থাকেন কিংবা নতুন করে চ্যানেল খোলার চিন্তা করে থাকেন, তবে-
ক. আপনার ভিডিওগুলো আপনার ক্রিয়েশন হলে এবং আপনি যদি সেগুলো কাউকে রি-ইউজ করার অনুমতি না দিতে চান, তবে আপনার চ্যানেলটি স্ট্যান্ডার্ড ইউটিউব চ্যানেলের আওতায় অন্তর্ভূক্ত করুন।
খ. আপনার ভিডিওগুলো যদি আপনার নিজস্ব সৃষ্টি না হয়, যেমন আপনি যদি কোন টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান রেকর্ড করে আপলোড করতে চান, তবে আপনার চ্যানেলটি ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্সের আওতায় রাখুন।
আশা করি, যারা ইউটিউব নিয়ে কাজ করছেন কিংবা ভবিষ্যতে কাজ করবেন, তাদের জন্যে লেখাটি উপকারি হবে। আর যদি মনে করেন, ইউটিউব লাইসেন্স নিয়ে এই ছোট লেখাটি আপনার সামান্য হলেও উপকারে এসেছে, তাহলে লেখাটি শেয়ার করে অন্যদের জানান এবং আমাদের সহযোগীতা করুন।
Leave a Reply