আপনি যদি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার চিন্তা ভাবনা করে থাকেন, তবে এই লেখাটি আপনার জন্য। বর্তমান সময়ে অনলাইনে আয় এবং ভিডিও মার্কেটিংয়ের জন্য ইউটিউব সবচাইতে বড় প্ল্যাটফর্ম। ইউটিউবে প্রতি মিনিটে ৩০০ ঘণ্টার ভিডিও আপলোড হয় এবং প্রতিদিন ৫ বিলিয়নের বেশী মানুষ ইউটিউবে ভিডিও দেখে থাকে।
তাই যারা মার্কেটিং এবং ভিডিও থেকে আয় করতে ইচ্ছুক তাদের সবার ইউটিউবে চ্যানেল খোলার প্রয়োজন হয়।
আপনি হয়তো ইতোমধ্যে জেনে গিয়েছেন ইউটিউব বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট। সুতরাং এখন কাজ হল একটি ভালো মানের ইউটিউব চ্যানেল সেট-আপ করে নেয়া। আজকের এই লেখায় মূলত আমি ইউটিউব চ্যানেল তৈরির পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন দেয়ার চেষ্টা করব।
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি
ইউটিউব চ্যানেল তৈরির পূর্বে যা জানতে হবে
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হবে। যথা:
- গুগল অ্যাকাউন্ট তৈরি।
- গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে নতুন ইউটিউব চ্যানেল তৈরি।
- প্রোফাইল ফটো, কভার আর্ট আপলোড।
- চ্যানেল অপটিমাইজ।
- ভিডিও আপলোড।
উপরে উল্লেখিত ধাপগুলো আপাতত মুখস্থ করার দরকার নেই, শুধু একবার চোখ বুলিয়ে নিন। নিচে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
গুগল অ্যাকাউন্ট তৈরি
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি জন্য আপনার অবশ্যই গুগল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। যদি আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে, তবে এই ধাপ আপনি এড়িয়ে যেতে পারেন। আর যাদের গুগল অ্যাকাউন্ট নেই তারা নিচের ধাপটি অনুসরণ করে অ্যাকাউন্ট খুলে নিন। যথা:
প্রথমে গুগলের এই লিংকে প্রবেশ করুন।
তারপর একটা পেজ আসবে এখানে আপনার নাম, ইমেল ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে Next এ ক্লিক করুন।
এবার দ্বিতীয় ধাপে আপনার ফোন এবং রিকোভারি ইমেল দিন। যদিও এটা না দিলে চলবে, তবে অ্যাকাউন্ট রিকোভার করার জন্য এটা খুব জরুরি। জন্ম তারিখ এবং জেন্ডার নির্বাচন করে Next এ ক্লিক করুন। পরবর্তীতে আসা প্রাইভেসি পেজ Accept করুন।
অভিনন্দন আপনি সফলভাবে গুগল অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছেন। আপনি যেই তারিখে গুগল অ্যাকাউন্ট খুলেছেন তার তারিখ, মাস এবং সাল লিখে রাখুন। ভবিষ্যতে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে এর মাধ্যমে সহজে অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করতে পারবেন।
নতুন ইউটিউব চ্যানেল তৈরি
প্রথমে ইউটিউবের এই লিংকে ক্লিক করে ইউটিউবে প্রবেশ করুন।
জিমেল আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিন। তারপর প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে Your Channel এ ক্লিক করুন। মোবাইলে তৈরির ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
Your Channel এ ক্লিক করার পর নিচের ছবির মত আসবে। সবচেয়ে ভাল হয় এখানে আপনার নাম দিয়েই একটা অ্যাকাউন্ট খুলে নিলে। তবে মনে রাখতে হবে এটা কিন্তু আপনার কাঙ্ক্ষিত চ্যানেল নয়।
আপনার কাঙ্ক্ষিত চ্যানেল তৈরির জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন তারপর Create a new channel এ ক্লিক করুন।
এবার নিচের মত পেজ আসবে এখন আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ইউটিউব চ্যানেলের নাম দিয়ে Create এ ক্লিক করুন। আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরির ধাপ প্রায় সমাপ্ত।
প্রোফাইল ফটো, কভার আর্ট আপলোড
ইউটিউব চ্যানেলকে আকর্ষণীয় করার জন্য অবশ্যই ইউটিউব প্রোফাইল এবং কভার আর্ট যোগ করতে হবে। প্রোফাইলের ছবির সাইজ হতে হবে ৮০০ x ৮০০ পিক্সেল এবং JPG, GIF, BMP, অথবা PNG ফরমেটের হতে হবে। কভার আর্ট হতে হবে সর্বনিম্ন ২০৪৮ x ১১৫২ পিক্সেল এবং সর্বোচ্চ ২৫৬০ x ৪২৩ পিক্সেল। কভার আর্ট ৬ এমবির কম সাইজের হতে হবে।
প্রোফাইল এবং কভার ফটো তৈরি হয়ে গেলে আপনাকে Customize Channel এ ক্লিক করে প্রোফাইল এবং কভার ফটো আপলোড করতে হবে।
চ্যানেল অপটিমাইজ
এবার আপনার চ্যানেল অপটিমাইজ করার পালা। About এ গিয়ে আপনার চ্যানেল ডেসক্রিপশনে আপনার চ্যানেলটি কি সম্পর্কে এই নিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে কিছু লিখুন। লোকেশন, ইমেল এবং আপনার যদি কোন স্যোশাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে তার লিংক যোগ করুন।
এরপর পূর্বের মত Customize Channel এ ক্লিক করে সেটিং আইকনে ক্লিক করুন।
এবার Advanced settings এ ক্লিক করুন। সবগুলো তথ্য সঠিক ভাবে যোগ করুন।
ভিডিও আপলোড
উপরে উল্লেখিত সবগুলো ধাপ সম্পূর্ণ করার মাধ্যমে আপনি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যেহেতু ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা শেষ, তাই এখন আপনাকে ভিডিও আপলোড করতে হবে। ভিডিও আপলোড করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কোন কপিরাইট কনটেন্ট যেন ভিডিওতে না থাকে।
কপিরাইট কন্টেন্ট ইউটিউবে আপলোড করলে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে। আপনার যদি কোন সফটওয়্যার বা পিসি না থাকে তবে সেরা ৫টি অনলাইন ভিডিও এডিটর (ইউটিউব ও ফেসবুক) এর তালিকা দেখে নিতে পারেন।
শেষ কথা
এই ছিল আজকের ইউটিউবে চ্যানেল তৈরি করার টিউটোরিয়াল। ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পর নিয়মিত ভিডিও আপলোড করলে আপনি খুব দ্রুত ইউটিউবে জনপ্রিয় হতে পারবেন। জনপ্রিয় হলে আপনি দেখে নিন ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার ৩টি সহজ উপায়।
Rs Rayhan Ahmed says
সবারই একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকা দরকার, চাই সেটা পার্সোনাল হোক আর কমার্শিয়াল হোক। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা এখনো চ্যানেল ক্রিয়েট করতে জানেন না, তাদের জন্যে অনেক উপকারি একটি টিউটোরিয়াল।