আর্টিকেল রাইটিং টিপস্ এর প্রথম পর্বে আমরা আর্টিকেল লেখা সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা একটা ভাল ধারণা পেয়েছিলাম, কয়েকটি ওয়েবসাইট এবং আর্টিকেল লেখার জন্য দরকারী কয়েকটি সাইট এবং অনলাইন টুলের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। ২য় পর্বে আমরা কি-ওয়ার্ড সম্পর্কে জেনেছিলাম এবং শিখেছিলাম কিভাবে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে হয়। এ পর্বে আমরা শিখবো কোথায় এবং কিভাবে কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়। এটা এসইও অপটিমাইজেশনের একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
আর্টিকেল রাইটিং টিপস্
আপনি যদি আর্টিকেল এর ভেতর কি-ওয়ার্ডের সঠিক ব্যবহার না জানেন, তবে ক্লায়েন্ট আপনাকে দিয়ে আর্টিকেল লেখাবে না। এমনকি যে-সব সাইটে আর্টিকেল জমা দেবেন, তারা যখন দেখবে আপনার লেখা এসইও ফ্রেন্ডলি না, তখন তারা আপনার আর্টিকেল তাদের সাইটে পাবলিশ করবে না। এছাড়া, আপনি যদি আপনার নিজের ব্লগের জন্য আর্টিকেল লেখেন আর লেখার ভেতর কি-ওয়ার্ডের সঠিক ব্যবহার না করেন, তবে আপনার আর্টিকেল কখনো সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক পাবে না। ফলে, আপনার লেখা সম্পূর্ণ বৃথা যাবে। সুতরাং চলুন, কি-ওয়ার্ড এর সঠিক ব্যবহার শেখা যাক।
টাইটেল এ কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার: আপনি যে কি-ওয়ার্ডই নিয়েই লিখেন না কেন, আপনার টপিকের টাইটেলে সেই কি-ওয়ার্ডটি থাকতে হবে। উদাহরণ হিসেবে আমি টেক ট্রেইনি ইংরেজী ভার্সন এর একটা আর্টিকেল এখানে উল্লেখ করছি, যার কি-ওয়ার্ড হচ্ছে WordPress Music Themes. এই আর্টিকেলটির টাইটেল – “25+ Best WordPress Music Themes For Artist, Bands, Lyricists, Composer And Music Label.” খেয়াল করুন, টাইটেলের মধ্যে প্রথম দুই শব্দের পরই মেইন বা ফোকাস কি-ওয়ার্ড রয়েছে।
টাইটেলের আগে পরে যা-ই থাকুক না কেন, ফোকাস কি-ওয়ার্ড থাকতেই হবে। আর এসইও এক্সপার্টদের মতে, ফোকাস কি-ওয়ার্ডটি টাইটেলের যত শুরুর দিকে রাখা যায় ততোই ভাল। আপনি যখন টাইটেল ঠিক করবেন, চেষ্টা করবেন কি-ওয়ার্ডটি শুরুর দিকে রাখতে।
প্রথম প্যারাগ্রাফে কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার: আপনার লেখার প্রথম প্যারাগ্রাফে কি-ওয়ার্ড থাকতে হবে এবং সেটা যত শুরুর দিকে থাকবে, তত ভাল।
সার্চ ইঞ্জিন যখন কোন কি-ওয়ার্ড সার্চের বিপরীতে রেজাল্ট শো করে, তখন প্রথম প্যারাগ্রাফে কি-ওয়ার্ড আছে কিনা তার ওপর ভাল গুরুত্ব দেয়। সুতরাং, প্রথম প্যারায় সুন্দরভাবে সর্ম্পূর্ণ কি-ওয়ার্ডটি ব্যবহার করুন।
হেডিং টু এ কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার: ওয়েব কনটেন্ট-এ সাধারণত ৬ ধরণের হেডিং ব্যবহার করা হয়, হেডিং-১ থেকে হেডিং-৬। এইচটিএমএল এ এগুলোকে নিচের মত ট্যাগ দিয়ে লেখা হয়-
- <h1> </h1>
- <h2> </h2>
- <h3> </h3>
- <h4> </h4>
- <h5> </h5>
- <h6> </h6>
ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগার যে সিএমএসই ব্যবহার করবেন না কেন, আপনাকে এইচটিএমএল ট্যাগ দিয়ে লিখতে হবে না। উভয় ক্ষেত্রেই আপনি অটো ইউজিং সিস্টেম পাবেন যা নিয়ে আমরা অন্য কোন লেখায় বিস্তারিত জানাবো। এখন আপনি শুধু দেখুন হেডিং-টু কোথায় রাখতে হয় সেটা দেখে নিন।
হেডিং টু বা H2 আপনি আর্টিকেলের প্রথম প্যারাগ্রাফের পর পরই রাখতে পারেন কিংবা এক দুইটা প্যারাগ্রাফের পরেই বসাতে পারেন। তবে, বেশি দূরে না নেয়াই ভাল।
হেডিং টু তে শুধু মাত্র কি-ওয়ার্ডই থাকতে হবে, এমন নয়। কি-ওয়ার্ডের আগে পরে অন্যান্য শব্দ থাকতে পারে। যেমন, উল্লেখিত আর্টিকেলের কি-ওয়ার্ড ছিল WordPress Music Themes. হেডিং টুতে আমি লিখেছি Best WordPress Music Themes.
আর্টিকেলের মাঝে কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার: আর্টিকেলের মাঝে মাঝে বিভিন্ন জায়গায় আরো কয়েকবার কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার করতে হবে। তবে এ ব্যবহার হতে হবে ন্যাচারাল। এমন যেন না হয় যে, জোর করে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদি কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার ন্যাচারাল না হয় তবে সার্চ ইঞ্জিন বিশেষ করে গুগল এটাকে স্প্যাম হিসেবে ট্রিট করবে এবং এ আর্টিকেলের র্যাংক দেবে না। যাইহোক, আপনি স্বত:ষ্ফুর্তভাবে আর্টিকেলের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় আরো ২/৩ বার কি-ওয়ার্ডটি ব্যবহার করুন।
ইউআরএল এ কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার: URL এর পুরো মানে হচ্ছে A Uniform Resource Locator. একটা আর্টিকেল যখন প্রকাশ করা হয়, তখন তার একটা ইউআরএল থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, বিশেষ করে ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগারে অটোমেটিক ইউআরএল জেনারেট হয়ে যায়। তখন আপনাকে দেখে নিতে হবে যে, ইউআরএল এ কি-ওয়ার্ডটি হুবহু আছে কিনা। যদি না থাকে, তবে ইউআরএল এডিট করে কি-ওয়ার্ড ঢুকাতে হবে।
আপনি যদি নিজে ব্লগিং না করেন, শুধুমাত্র ক্লায়েন্টের জন্য কিংবা অন্য কারো সাইটের জন্য আর্টিকেল লিখেন, তবে ইউআরএল এডিট করার কাজটি আপনার নয়। আর্টিকেলটি যিনি পাবলিশ করবেন, এটা তার কাজ। আপনার কাজ শুধু আর্টিকেলটি এসইও ফ্রেন্ডলি করে লেখা।
মেটা ডেসক্রিপশনে কি-ওয়ার্ডের ব্যবহার: মেটা ডেসক্রিপশন সার্চ রেজাল্টে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সার্চ রেজাল্টে লিংক এর নিচে যে ছোট্র একটি বর্ণনা থাকে সেটাই মেটা ডেসক্রিপশন। এটা মূলত: আপনার আর্টিকেলের সারমর্ম। এটা এমনভাবে লিখতে হয় যাতে এই ছোট্র অংশটুকু পড়েই একজন পাঠক বুঝতে পারে আপনার আর্টিকেলটি কী বিষয়ে এবং তাতে কী রয়েছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে এই ডেসক্রিপশটি আপনাকে লিখতে হবে ১৬০ কারেক্টার বা ১৬০ বর্ণের মধ্যে। কিছুতেই ১৬০ ক্যারেক্টারের বেশি হওয়া যাবে না। সতর্কতার জন্য সাধারণত: টার্গেট রাখতে ১৫৫ ক্যারেক্টারের ভেতর শেষ করে দেয়া।
আপনার মেটা ডেসক্রিপশনে কত ক্যারেক্টার হয়েছে তা চেক করার জন্য নিচের টুলটি ব্যবহার করুন।
বক্সটিতে আপনার লেখাটি পেস্ট করে নিচের Count Character বাটনে ক্লিক করুন। ডান পাশের বক্সটিতে সংখ্যাটি শো করবে।
আর্টিকেল রাইটিং টিপস্ এর এ পর্ব এখানেই শেষ। পরবর্তী পর্বের জন্য এখানে ক্লিক করুন। আর লেখাটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনার শেয়ারের ফলে আপনার কোন না কোন বন্ধু লেখাটি পড়ে উপকৃত হতে পারে।
Leave a Reply